কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
ইউপিএ’র দ্বিতীয় দফার শেষদিকে সক্রিয় রাজনীতির মঞ্চে এলেন রাহুল গান্ধী। অসুস্থ সোনিয়া সরে গিয়ে সভাপতির জায়গাটাও ছেড়ে দিলেন তাঁকে। তা সত্ত্বেও কিন্তু প্রিয়াঙ্কাকে দেখা যায়নি! সোনিয়া বা রাহুলের সঙ্গে তাঁদের কেন্দ্রে প্রচারে যেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কখনও গরিব মানুষের ঝুপড়িতে বসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন, আবার কখনও সভামঞ্চেও দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু সক্রিয় রাজনীতি? দূরেই থেকেছেন প্রিয়াঙ্কা। কংগ্রেসের প্রায় সব কর্মী-সমর্থক, এমনকী সাধারণ মানুষও প্রশ্ন তুলেছেন, কবে রাজনীতিতে দেখা যাবে প্রিয়াঙ্কাকে? এর প্রধান কারণ অবশ্য ঠাকুমার সঙ্গে তাঁর অদ্ভুত মিল। অবশ্য দেখনদারিতে। রাজনীতির ময়দানে, বা প্রশাসনিক দিক থেকে প্রিয়াঙ্কা আদৌ ইন্দিরার ধারেকাছে পৌঁছতে পারবেন কি না, সেটা সময় বলবে। তবে আজকের তারিখে দাঁড়িয়ে তাবড় প্রতিপক্ষকে কিছুটা হলেও চিন্তায় ফেলে দিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের স্টার ক্যাম্পেনার কে? প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য থেকে ভোট প্রচারের জন্য প্রিয়াঙ্কাকে আনতে চেয়ে কংগ্রেসের কাছে আবেদন জমা পড়ে গিয়েছে। বাংলাতেও আসছেন তিনি। যদিও এই রাজ্যের কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের কতটা তিনি চাঙ্গা করতে পারবেন, সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস কার্যত ধুঁকছে। বহরমপুরে অধীর চৌধুরী ছাড়া কেউ নিজের আসন, এমনকী এলাকার ভোটের গ্যারান্টিটাও দিতে পারছেন না। তার উপর চলছে দলবদল। কংগ্রেসের এমপি মৌসম বেনজির নুরও ভোটের আগে দল বদলে তৃণমূলে চলে এসেছেন এবং উত্তর মালদহ কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হয়েছেন। নিচুতলায় তো স্রোতের মতো কর্মী-সমর্থকরা দল বদলে ঝুঁকেছেন। ভরসা শুধু এমন কিছু ভোট, যারা যুগের পর যুগ ধরে কংগ্রেসের বিশ্বস্ত রয়ে গিয়েছে। আর হয়তো প্রতিষ্ঠানবিরোধী দক্ষিণপন্থী কিছু ভোট কংগ্রেসের পক্ষে যেতে পারে। সেটা প্রিয়াঙ্কা প্রচারে না এলেও হতো।
প্রিয়াঙ্কা যদি কোথাও ফ্যাক্টর হতে পারেন, তাহলে সেটা হিন্দিভাষী বলয়ে। বিশেষত উত্তরপ্রদেশ। সেখানে বিজেপি বিরোধী একটা হাওয়া রয়েইছে। তার উপর গেরুয়া শিবিরের উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারাটাও প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার একটা বড় কারণ। ঠিক সেই কারণে শুধু মোদিকে আক্রমণ করেই প্রচারে জোর বাড়িয়ে যাচ্ছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। রাহুল যদি রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে তোপ দাগেন, তো প্রিয়াঙ্কা মানুষের অভিযোগ নিয়ে সরব হন। শুক্রবারও তিনি সভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদি যতবার বিদেশে গিয়েছেন, তার অর্ধেকও যদি বারাণসীর গ্রামে আসতেন, তাহলে এখানকার কিছু উন্নতি হতো। কৌশলটা পরিষ্কার, মোদির দুর্বল জায়গাগুলিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো।
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা সম্ভব নয়! কারণ, এই রাজ্যের ভোটব্যাঙ্কের অভিমুখটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁকে টার্গেট করে আক্রমণ শানানোর জন্য খুব বেশি সুযোগ প্রিয়াঙ্কা বা রাহুল পাবেন না। তার উপর কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের মহাজোটের ঘোষণা হয়ে রয়েছে। এখানে এসে চার রকম অভিযোগ তুললে আসন সংখ্যা বাড়বে তো না-ই, উপরন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে জোটে সমস্যা হবে। এখানেই কিন্তু কংগ্রেসের উভয় সঙ্কট। প্রিয়াঙ্কা তো আর কংগ্রেসের ঊর্ধ্বে নন!