কর্মলাভের যোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা দুযবে। ... বিশদ
অকৃতদার মিহির বসু আড্ডা মারতে খুব ভালোবাসেন। ‘কফি হাউসে’ তাঁর প্রথম সঙ্গী ভাস্কর গাঙ্গুলি। তারপর কালের নিয়মেই বেড়েছে কাপের সংখ্যা। পিন্টু চৌধুরি, কম্পটন দত্ত, শঙ্করলাল চক্রবর্তীরা যোগ দিয়েছেন সেই আড্ডায়। এমনকী মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতো অন্তর্মুখী ব্যক্তিত্বও মাঝেমধ্যে হাজির হন মিহিরের ফ্ল্যাটের ড্রয়িং-রুমে। বিষ্ণু দে কিংবা যামিনী রায় নিয়ে নয়, তর্কের বেশিরভাগটা জুড়ে থাকত মেসি, রোনাল্ডো এবং দুই প্রধানের পারফরম্যান্স। ভয়ঙ্কর ভাইরাসের কারণে অবশ্য গত দু’সপ্তাহ সেই আড্ডায় ছেদ পড়েছে।
শনিবার সকালে মিহির বসু বলছিলেন, ‘লকডাউনের ফলে কারও পক্ষেই আসা সম্ভব নয়। তাই সময় যেন আর কাটতেই চাইছে না। দমবন্ধ করা পরিস্থিতি। ভাস্কর-পিন্টুরা এলে হইহই হত। মুড়ি, চপ আর চায়ের মধ্যে দিয়ে কীভাবে তিন-চার ঘণ্টা যে কেটে যেত। মাঝেমধ্যে ফিস্টও হত আমার বাড়িতে। জুনিয়র হলেও সুমিত মুখার্জি, শঙ্করলাল চক্রবর্তীরাও এই আড্ডায় দিব্যি মানিয়ে নিয়েছিল। রোদ, ঝড়, বৃষ্টির মধ্যেও সকলেই ঠিক এসে জুটত। কিন্তু কী আর করা যাবে? করোনাই সব শেষ করে দিল। নিজেকে এখন বড় নিঃসঙ্গ মনে হচ্ছে। রসিকতা করে ভাস্কর গাঙ্গুলির মন্তব্য, ‘বিয়ে না করার সমস্যা হয়তো মিহির জীবনে প্রথমবার বুঝতে পারছে। ফোন করলেই হতাশা ঝরে পড়ে। এদিকে আমার প্রাণও ওষ্ঠাগত। পরিবারের শাসনে আমিও গৃহবন্দি। তবে বাড়ির সামনে কিছুক্ষণ বসছি। এলাকার প্রবীণদের সহযোগিতা করাই এখন আমার লক্ষ্য।’
বাঙাল ভাষায় নিরন্তর কথা বলে আড্ডা জমিয়ে রাখার অন্যতম কারিগর পিন্টু চৌধুরির বক্তব্যেও আড্ডা হারানোর বেদনা। ‘টাটকা বাতাসের সন্ধানেই আমরা মিহিরের ফ্ল্যাটে যেতাম। ভাবের আদানপ্রদান না হলে জীবনে তো একঘেঁয়েমি আসবেই। ওখানে ফুটবল ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে গল্প হত। বলিউডের তিন খানের জনপ্রিয়তা কেন কমছে কিংবা নরেন্দ্র মোদি বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভাবাদর্শ নিয়েও যে যাঁর মত প্রকাশ করত। লকডাউনের আগে চীনে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তখন তো আর ভাবিনি, কোভিড-১৯’এর জন্য আমাদেরও গৃহবন্দি থাকতে হবে। খারাপ তো লাগছেই। কিন্তু এ ছাড়া তো আর অন্য উপায় নেই’, এক নিঃশ্বাসে বললেন পিন্টু। কিছুক্ষণ থেমে তাঁর সংযোজন, ‘লকডাউন যে কবে উঠবে? সেই স্বপ্নের রোদের খোঁজেই তো রয়েছি।’