একাধিক সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। উপস্থিত বুদ্ধি ও যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণে কর্মে বাধামুক্তি ও উন্নতি। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে খবর, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রঞ্জিত সিংয়ের বাবা মোহন সিং মারা যান। মোহনবাবুর সামান্য কিছু জমি ছিল। চাষাবাদ করেই সংসার চলে হতদরিদ্র ওই পরিবারের। মোহনবাবুর মৃত্যুর পর স্থানীয় বিজেপি নেতার ছেলে রঞ্জিতকে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে আবেদনের পরামর্শ দেন। উল্লেখ্য, ১৮-৬০ বছর বয়সি কোনও কৃষকের আচমকা মৃত্যু হলে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের অধীনে মৃতের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ‘ডেথ বেনিফিট’ দিয়ে থাকে সরকার। রঞ্জিতবাবুর অভিযোগ, কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ব্যাপারে তাঁকে অবগত করেন স্থানীয় বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল, বিকাশ কর, নিরুপম মাইতি ও ধীরেন্দ্রনাথ ঘোড়ই। চন্দন বিজেপির বুথ সভাপতি। বাকিরা সক্রিয় বিজেপি কর্মী। প্রত্যেকে আবার পেশায় সরকারি স্কুলের শিক্ষক।
অভিযোগ, তাঁরাই রঞ্জিতবাবুর হয়ে দরখাস্ত লিখে দেন। এরপর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রঞ্জিতবাবুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দু’লক্ষ টাকা ঢোকে। রঞ্জিতবাবুর অভিযোগ, টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কাছে এসে হাজির হন বিজেপি নেতারা। এই টাকা তাঁরা পাইয়ে দিয়েছেন, তাই টাকার ভাগ দাবি করেন। রঞ্জিতবাবু বলেন, আমার থেকে এক লক্ষ টাকার দাবি করেন ওঁরা। টাকা না দিলে দু’লক্ষ টাকা ফেরত চলে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। অভিযোগ, চন্দন মণ্ডল এরপর হুমকি দিয়ে স্থানীয় একটি শাখা ব্যাঙ্কে (সিএসপি) নিয়ে যান রঞ্জিতবাবুকে। তিন ধাপে মোট ৯০ হাজার টাকা চন্দন নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নেন। শুধু তাই নয়, পরে আবার ভয় দেখিয়ে নগদে ৩০ হাজার টাকাও নিয়ে যান চন্দন। এরপর ফের ২০ হাজার টাকার দাবি করেন।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আত্মীয়দের বিষয়টি জানান রঞ্জিতবাবু। তারপর ওই চারজন বিজেপি নেতার নামে থানায় অভিযোগ জানান। তিনি যে টাকা দিয়েছেন, তার প্রমাণ হিসেবে ব্যাঙ্কের পাস বইয়ের জেরক্সও জমা দেন থানায়। অভিযোগ অস্বীকার করে বুথ সভাপতি চন্দন মণ্ডল বলেন, রঞ্জিতের বাবা মারা যাওয়ার সময় আমার থেকে ৯০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। কৃষকবন্ধুর টাকা ঢুকলে টাকা শোধ করবে বলে মুচলেখাও দিয়েছিল। সেই টাকাই শোধ করেছে। অভিযুক্ত নিরুপম মাইতি বলেন, এলাকায় আমাদের দল সাংগঠনিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী। পঞ্চায়েতও আমাদের দখলে। তাই ভোটের আগে আমাদের দলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এই কাণ্ড করা হচ্ছে। ঘটনাটি মার্চের প্রথম সপ্তাহের। কিন্তু এখন ভোটের মুখে অভিযোগ জানানো হচ্ছে কেন? এসবই তৃণমূলের কারসাজি। পাল্টা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি গোবিন্দ প্রসাদ হুই বলেন, বিজেপি দলটাই জুমলা পার্টি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছেন, আর ওরা গরিব মানুষের থেকে শোষণ করছে। পুলিসকে অনুরোধ করব, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।