কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার ২০টি ব্লকের মধ্যে ইতিমধ্যেই ১৯টি ব্লকে থাবা বসিয়েছে মারণ ভাইরাস করোনা। যদিও ব্যতিক্রম সাঁতুড়ি ব্লক। লকডাউনের সময় বাঁকুড়া ও আসানসোল ঘেঁষা সাঁতুড়ি ব্লকে যাতে বাইরের কেউ এলাকায় ঢুকতে না পারেন, তারজন্য সীমানা এলাকার ২৭টি প্রবেশ পথে নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল পুলিস। সেই চেকিং পোস্টগুলিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে চলত তল্লাশি। সরকারি ছাড়পত্র থাকলেই আসা ও যাওয়ার ছাড় মিলত। তবে শুধু নাকা চেকিং নয়, কোথাও জমায়েত হয়ে গল্পগুজব করা, ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার খবর পেলেই পুলিসি অভিযান হয়েছে।
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন লকডাউনের সময় এক আইএএস অফিসারকে সাঁতুড়ির বিডিও হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিল। যিনি দক্ষ হাতে ব্লক এলাকার তৎকালীন পরিস্থিতি সামলে ছিলেন। সেই সময় মাস্কের অভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন এলাকার মানুষজন। তখন বিডিও নিজে এলাকার ২০ জন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাকে নিয়ে মাস্ক ও ফেসশিল্ড তৈরিতে কাজে লাগান। সাঁতুড়ি ব্লকে তৈরি মাস্ক সেই সময় অর্ডার অনুযায়ী পুরুলিয়ার প্রতিটি ব্লকে জোগান দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, তিনি নিজে সেই সময় সক্রিয় হয়ে পুলিস প্রশাসনকে দিয়ে বড়ন্তির পর্যটন ক্ষেত্রের সমস্ত গেস্ট হাউস রাতারাতি বন্ধ করে দেন। বর্তমানেও অবশ্য পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। তবে এসবের পরেও এখানকার গরিব মানুষগুলির কথাই বেশি করে বলতে হয়।
জানা গিয়েছে, সাঁতুড়ি ব্লকের ১০৪টি গ্রামের মধ্যে ৭২টি আদিবাসী অধ্যুষিত। দিন এনে দিন খেয়ে বেঁচে থাকা এখানকার গরিব মানুষগুলির উপর করোনা সবচেয়ে প্রভাব ফেলেছিল। বহু মানুষ খাদ্য সঙ্কটে ভুগেছেন। তবে লকডাউনের নিয়ম মেনে তাঁদের কাউকেই বাইরে বেরতে দেখা যায়নি। সেই সময় প্রশাসনই তাঁদের পাশে থেকেছে। ব্লক এলাকার মানুষের খাদ্য সামগ্রীর যাতে অভাব না হয় নিয়মিত সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে পুলিস ও প্রশাসন। পরিসংখ্যান বলছে, অন্যান্য ব্লকের তুলনায় আদিবাসী অধ্যুষিত সাঁতুড়ি ব্লক ৮০ শতাংশ কঠোরভাবে প্রশাসনের নিয়ম মেনে চলেছে।
সাঁতুড়ি থানার ওসি পলাশ বারিক বলেন, এলাকার মানুষ লকডাউনের সময় প্রশাসনকে সবরকম সাহায্য ও সহযোগিতা করেছে। এখনও মাস্ক পরে বাইরে বের হওয়া, সামাজিক দূরত্ব মেনে যাতে কাজ করা হয়, তার জন্য প্রচার অভিযান চলছে।
সাঁতুড়ির জয়েন্ট বিডিও রাজেশ কুমার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সবাই সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। সাধারণ মানুষও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। সংক্রামিত হয়নি ব্লক এলাকা। এখনও গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের নিয়ে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ে গ্রামে গ্রামে জোর প্রচার চলছে।