মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় পঞ্চম পর্যায়ে সাইকেল বিরতণের কাজ প্রায় শেষ। যে সংস্থা সাইকেল ফিটিংস করে তাঁরা সাইকেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আলাদা করে আনে। তবে ফিটিংস করার সময় বেশকিছু সাইকেলের যন্ত্রাংশ কম পড়ায় সমস্যা হয়। সেই কারণে সামান্য কিছু সাইকেল পড়ে রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, শেষ দিকে প্রত্যেকবার এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট অসন্তুষ্ট হয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। দ্রুত সাইকেল ফিটিংস করে বিতরণ করার ব্যাপারে বলা হয়েছে।
এদিকে, সময়মতো সাইকেল দিতে না পারায় সরবরাহকারী সংস্থাকে প্রশাসনের এক কর্তা এনিয়ে ভর্ৎসনাও করেছেন বলে জানা গিয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে পঞ্চম পর্যায়ে নদীয়া জেলায় সাইকেল বিরতণের কাজ চলছে। সেই কাজ এখন প্রায় শেষ। এই পর্যায়ে মোট ৬৯হাজার ১০৫টি সাইকেল দেওয়া হয়েছে। সাইকেলের যন্ত্রাংশ আগেই চলে আসে জেলায়। নিয়ম অনুযায়ী, বেসকারি সংস্থা সাইকেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পাঠায়। এরপর সেগুলি ব্লকের নির্দিষ্ট জায়গায় ফিটিংস করে সাইকেল বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের সবুজসাথী প্রকল্পটি রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফর্মশন সোসাইটি’ পুরস্কার পেয়েছে। এই প্রকল্প ‘আইসিটি অ্যাপ্লিকেশন, ই-গভর্নমেন্ট’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের এই প্রকল্পে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য সাইকেল দেয় রাজ্য সরকার। এই মুহূর্তে নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হচ্ছে। সাইকেল পাওয়ায় পড়ুয়াদের অনেক সুবিধা হয়েছে। সবুজসাথী প্রকল্পের জেলা আধিকারিক বিষ্ণু কবিরাজ বলেন, পঞ্চম পর্যায়ে সাইকেল বিলি সম্পূর্ণ বলা যায়। সামান্য কিছু সাইকেল পড়ে আছে। সরবরাহকারী সংস্থা একটু সমস্যা করেছিল। তাদেরকে ইতিমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, সাইকেল দেওয়ার কাজ আরও অনেক আগেই শেষ করে দেওয়া যেত। কিন্তু প্রায় গোটা নভেম্বর মাসজুড়ে উপনির্বাচনের জন্য আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি হওয়ার সাইকেল দেওয়া সম্ভব হয়নি। তার আগে যে সময় পাওয়া গিয়েছে, তখনও সেভাবে সাইকেল বিলি সম্ভব হয়নি। কারণ, সেই সময় কালীপুজো, ভাঁইফোটার জন্য স্কুল বন্ধ ছিল। কয়েকটি মাদ্রাসায় সাইকেল বিলি হয়েছে। সঙ্গে কয়েকজন বিডিও উৎসাহী হয়ে আগেই স্কুলে সাইকেল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। যাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ সাইকেল দিয়ে দিতে পারে। কিন্তু অধিকাংশই সাইকেল বিলি করতে পারেননি একাধিক বিডিও’রা। সাইকেল পড়ে থাকা নিয়েও সমস্যার অন্ত ছিল না। সাইকেল চুরি হওয়ার ভয়ে পুলিসকে চিঠি করে পাহারার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। সাইকেলগুলি নিরাপদের রাখার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট ১ ব্লকে ৩৪৫৪, তেহট্ট ২ ব্লকে ২০৩২, শান্তিপুরে ২৮৬৯, শান্তিপুর পুরসভা এলাকায় ১৮৬৪, তাহেরপুর নোটিফায়েড এরিয়ায় ৪০২, রানাঘাট পুরসভায় ১৬১৪, রানাঘাট ১ ব্লকে ২০৪৩, রানাঘাট ২ ব্লকে ৪৯৩৩, কুপার্স ক্যাম্পে ৬১টি, নাকাশিপাড়া ব্লকে ৬২৮৯, নবদ্বীপ পুর এলাকায় ১৬৩৬, নবদ্বীপ ব্লকে ১২১৪, কৃষ্ণনগর ১ ব্লকে ৩৬৮২, কৃষ্ণনগর ২ ব্লকে ১৮৭২, কৃষ্ণগঞ্জে ২০৫৫, চাপড়ায় ৫১৯৪, বীরনগর পুরসভা এলাকায় ৫০২, চাকদহ ব্লকে ৪১৭২, চাকদহ পুরসভা এলাকায় ৪১৭২, গয়েশপুর পুরসভায় ৫০২টি, হাঁসখালি ব্লকে ৪২৪০, হরিণঘাটা ২৭১৬টি সাইকেল বিলি করা হয়েছে।
নদীয়া জেলায় প্রথম পর্যায়ে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮০ হাজার ৪৮৭টি, তৃতীয় পর্যায়ে ১লক্ষ ৫৪ হাজার ৫৭৯টি, চতুর্থ পর্যায়ে ৭২ হাজার ৮৩৫টি সাইকেল বিলি হয়েছিল। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প গ্রাম বাংলার বহু ছাত্রছাত্রী বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছে। পঞ্চম পর্যায়ের বাকি সাইকেলগুলি খুব দ্রুত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।