ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
পার্কের মূল গেটের সামনে আড্ডা দিচ্ছেলের তিন যুবতী ও দুই যুবক। তাঁদের কেউ প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক, আবার কেউ ব্যবসায়ী, কেউ আবার গৃহবধূ। নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁদের কাছে যেতেই, সুমনা সরকার নামে এক যুবতী বলেন ‘জয় গোপাল’। আরএকজন পাপিয়া দাস বলেন, ‘রাধে রাধে’। ভোটে হাওয়া কেমন? তাতেও তাঁদের উত্তর একই, ‘জয় গোপাল’। কেন? দু’জনেই বলেন, দার্জিলিং লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী গোপাল লামা দক্ষ প্রশাসক। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বা মহিলা ব্রিগেড লামার সঙ্গেই রয়েছে।
এ নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি করেন ওই ঠেকের দুই যুবক। তাঁদের নাম বিমল সাহা ও মানস রায়। তাঁরা ব্যবসায়ী। তাঁরা বলেন, এতটা সহজ নয়। বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা দারুণ দেখতে। স্মার্ট। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাওয়া। কাজেই এবারও বাজিমাত করবেন রাজু। সঙ্গে সঙ্গে গোলাপি ঘোষ নামে আরএক মহিলা বলেন, বিস্তার পথে একাধিক কাঁটা। যারমধ্যে কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা অন্যতম। এঁদের কথপোকথন থেকেই স্পষ্ট এবার দার্জিলিং আসনে তৃণমূল ও বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
রাজ্যের নজরকাড়া কেন্দ্রগুলির মধ্যে দার্জিলিং অন্যতম। ভৌগোলিক দিক দিয়ে এই কেন্দ্র দু’টি ভাগে বিভক্ত। একটি পাহাড়ের অংশ। সেখানে দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পং বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি চা বাগান ও পর্যটন কেন্দ্র বেষ্টিত। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট এলাকা বিজিপিএম প্রধান অনীত থাপার গড় হিসেবে পরিচিত। তিনি তৃণমূলের শরিক। তাঁর দলের উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন আমলা গোপলকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তাঁকে জেতাতে পাহাড়ের শান্তি, উন্নয়ন, পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু, চা শ্রমিকদের পাট্টা প্রদান করার উদ্যোগ, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, এসএসসির আঞ্চলিক বোর্ড গঠন প্রভৃতিকে ইস্যু করেছে অনীতের দল।
বিজিপিএমের মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান এবং ১১ জনজাতিকে এসটি স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাস্তবায়িত করতে পারেনি বিজেপি। এখন ওদের প্রার্থী গোঁজ কাঁটায় জেরবার। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনীত থাপার নেতৃত্বে পাহাড়ের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার আর্জিতেই ভোটে লড়ছি। পাহাড়ে মহিলা ভোটরের সংখ্যাও বেশি। তাই এখানে আমরাই সাফল্য পাব। বিজেপির পার্বত্য সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেন, বিজিপিএম ও তৃণমূলের হাতে তামাক খাচ্ছেন বিষ্ণু। এতে কিছু হবে না।
এদিকে, দার্জিলিং আসনের আরএকাংশ সমতলভাগ। তাতে শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও চোপড়া বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। মহানন্দা, বালাসন সহ বিভিন্ন নদী ও চা বাগান বেষ্টিত সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতেও ছড়িয়েছে ভোটের উত্তাপ। এখানে একডজনেরও বেশি প্রার্থী হলেও মূল লড়াই হবে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। তবে কংগ্রেস ও সিপিএম জোট হারানো জমি উদ্ধার করতে গা ঘামাচ্ছে।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী (সমতল) পাপিয়া ঘোষ বলেন, এবার মহিলা ব্রিগেডই এখানকার মাটি থেকে বিজেপিকে উৎখাত করবে। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন পাল্টা বলেন, তৃণমূলের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না। এবারও শেষ হাসি হাসবে পদ্মই।