বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
ধারাবাহিক বিস্ফোরণের আগেই সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে শ্রীলঙ্কাকে গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিল ভারত। তা সত্ত্বেও ভয়াবহ ওই হামলা রুখতে ব্যর্থ হয় কলম্বো। তবে এই প্রথম শ্রীলঙ্কার কোনও শীর্ষ পর্যায়ের সেনা অফিসার নিশ্চিত করলেন, ভারত পাকা খবরই দিয়েছিল। হামলাকারীদের কয়েকজন ভারতে গিয়েছিল। ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার ওই বর্বরোচিত ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ২৫৩ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ। গির্জা ও হোটেলে বিস্ফোরণের ওই ঘটনা নিয়ে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিলেন শ্রীলঙ্কার সেনাপ্রধান মহেশ সেনানায়েকে। জঙ্গিদের গতিবিধি ও আন্তর্জাতিক স্তরের যোগাযোগ নিয়ে বেশ কিছু তথ্য সামনে আনলেন তিনি। লেফটেন্যান্ট জেনারেল সেনানায়েকের বক্তব্য, ওরা ভারতে গিয়েছিল। ওরা কাশ্মীর, বেঙ্গালুরু ও কেরলে গিয়েছিল। আমাদের কাছে এই তথ্য রয়েছে।
কাশ্মীর ও কেরলে যাওয়ার উদ্দেশ্য কী ছিল জঙ্গিদের? সেনানায়েকের জবাব, পুরোপুরি নিশ্চিত নই, তবে নিশ্চই কোনও ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে বা দেশের বাইরের অন্য সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে গিয়েছিল। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কা হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট। তবে শ্রীলঙ্কা সরকারের দাবি, স্থানীয় সংগঠন এনটিজে রয়েছে হামলার পিছনে। এনটিজে-রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ এখনও পর্যন্ত শতাধিক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার নেপথ্যে স্থানীয় এনটিজে-র পাশাপাশি কোনও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীও কি যুক্ত ছিল? সেনানায়েকের বক্তব্য, কাজকর্মের ধরন ও সন্দেহভাজনদের গতিবিধি দেখে মনে হয়, দেশের বাইরের কিছু মাথা কাজ করেছে। নির্দেশ এসেছে দেশের বাইরে থেকেও। তাহলে ভারতের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া সত্ত্বেও কেন তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি? শ্রীলঙ্কার সেনাপ্রধান বলেন, গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদানের ভিত্তিকে কিছু খবর আমরা পেয়েছিলাম। পরিস্থিতি ও সেনার হাতে থাকা তথ্যের মধ্যে যোগসূত্র মিলছিল না। ফাঁকফোকর যে ছিল, আজ তা প্রত্যেকেই দেখতে পাচ্ছে। সেনাপ্রধান হিসেবে মনে করি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানো প্রত্যেকেই দায়ী। এর মধ্যে রাজনৈতিক শীর্ষ নেতৃত্বও রয়েছে।
এলটিটিই ও সেনাবাহিনীর মধ্যে তিন দশকের গৃহযুদ্ধে এই দ্বীপরাষ্ট্রে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। ২০০৯ সালে সেই দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। এক দশক পর ফের রক্তস্নাত হতে হল শ্রীলঙ্কাকে। এই দ্বীপভূমিকে কেন নিশানা বানানো হল? সেনানায়েকের বক্তব্য, গত ১০ বছর ধরে মাত্রাতিরিক্ত স্বাধীনতা ও শান্তি ছিল। ৩০ বছর ধরে কী ঘটেছে, মানুষ ভুলে গিয়েছিল। মানুষ শান্তির পরিস্থিতিকে উপভোগ করছিল। নিরাপত্তার দিকটিকে অবহেলা করা হয়েছে। হামলার প্রেক্ষিতে মানুষের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে, যাতে হিংসা না ছড়ায় ও দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গ না হয়, সেজন্য সর্বত্র নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলার জন্য সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিসের উপর ভরসা রয়েছে।
সেনানায়েকের মন্তব্য সামনে আসার পর এদিন আবার ভিন্ন সুর সামনে এসেছে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার তরফে। সংস্থার এক কর্তা বলেন, হামলাকারীরা কেউ কাশ্মীরে গিয়েছিল বলে কোনও রেকর্ড নেই। তাঁর বক্তব্য, ইস্টার হামলার পর অভিবাসন সংক্রান্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। সেখানে শ্রীলঙ্কা থেকে কাশ্মীর যাওয়ার কোনও রেকর্ড নেই।