পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
মন্দিরের কাছে গাড়িতে বসেছিলেন দু’জন মহিলা। তাঁদের একজনের হাতে থাকা সোয়েট কাপড়ের ব্যাগই বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। কারণ, সেই ব্যাগে বাংলার একটি অভিজাত শাড়ির বিপণির নাম ছাপা ছিল। সহযাত্রীর সঙ্গে বিশুদ্ধ বাংলায় কথোপকথনে তা আরও স্পষ্ট হল। তাঁদের কথাবার্তায় বোঝা গেল, নববর্ষে মায়ের মন্দিরে পুজো দিতে এসেছেন মা ও মেয়ে। মন্দিরের সামনে এসে তাঁদের মাথায় হাত! থিকথিকে ভিড় দেখে তাঁরা বুঝে যান, মন্দিরের ভিতরে গিয়ে পুজো দিতে গেলে রাত পেরিয়ে যেতে পারে। অগত্যা বাইরে থেকেই নমস্কার করে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। বছরের প্রথম দিনে দক্ষিণেশ্বর বা কালীঘাটে কখনও পুজো দিতে গিয়েছেন? বাংলায় প্রশ্ন শুনে প্রথমে কিছুটা হকচকিয়ে গেলেন। আলাপ জমতে জানা গেল, তাঁরা বাঁকুড়ার বাসিন্দা। মা শেফালী মণ্ডল ও মেয়ে স্নিগ্ধা মণ্ডল। স্নিগ্ধা রেডিওলজিতে এমডি। যাওয়ার সময় মা-মেয়ে জানিয়ে গেলেন, ‘এবার না হয় বাইরে থেকেই দর্শন হোক! অন্তরের ভক্তিটাই তো আগে।’
শুধু তাঁরাই নন, পুজো দেওয়ার লাইনে অসংখ্য বাঙালির দেখা মিলল। তাঁদের বড় অংশই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। একটা অংশ আবার পর্যটক হিসেবে উত্তর-পূর্বের এই পাহাড়ি রাজ্যে এসেছেন। সেই সূত্রেই এসেছেন মন্দির ও মায়ের দর্শন করতে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এই লাইন শুরু হয়েছে শনিবার মধ্যরাত থেকে। পুজো দিতে গেলে আগে কুপন নিতে হয় এখানে। যাঁরা পয়লা বৈশাখের পুণ্যলগ্নে পুজো দিতে চেয়েছেন, কুপন সংগ্রহ করতে তাঁদের আগের দিন রাত থেকেই লাইন দিতে হয়েছে। মন্দির কমিটির জনসংযোগ আধিকারিক বর্ণালী দেবী বলেন, ‘রাত একটা থেকে কুপন নেওয়ার জন্য লাইন পড়েছে। এমনটা সহসা দেখা যায় না।’ পূজারী বিভাস শর্মা বললেন, ‘সেই কাকভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত আমি একাই অন্তত ৩০০ জনের পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যাঁরা এসেছেন, তার প্রায় ৩০ শতাংশই বাঙালি।’ এ যে শুধু কথার কথা নয়, তার প্রমাণ মিলল ডালার দোকানগুলির সামনে যেতেই। একটি ডালার দাম ৫০১ টাকা শুনে এক বাঙালি ভক্ত আঁতকে উঠে বললেন, ‘দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাটে তো ৫০ টাকাতেও ডালা পাওয়া যায়! এখানে এত কেন?’ সমর্থনে এগিয়ে এলেন আরও তিন-চারজন বাঙালি।