একাধিক সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। উপস্থিত বুদ্ধি ও যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণে কর্মে বাধামুক্তি ও উন্নতি। ... বিশদ
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস অবশ্য সন্ধ্যায় জানান, ঝাড়খণ্ড-ছত্তিশগড়ের দিকে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে দক্ষিণবঙ্গের দিকে আসতে পারে। এমন সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। বেশি রাতের দিকে দক্ষিণবঙ্গে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হলে তার প্রভাব বুধবার সকালের দিকে থাকার সম্ভাবনা থাকবে।
এদিকে, সোমবারের ঝড়বৃষ্টির জেরে রাজ্যে ১২ জনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামাজিক মাধ্যমে বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, রাজ্য প্রশাসন দুর্গতদের পাশে আছে। বিপর্যয় মোকাবিলা এবং ত্রাণসামগ্রী ও গাইডলাইন মেনে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসনগুলি।
মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বজ্রপাতে ন’জনের মৃত্যু হয়। দেওয়াল ধসে ও গাছ পড়ে মারা গিয়েছেন তিনজন। আগামী দিনে ঝড়বৃষ্টিজনিত ও বর্ষাকালের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা আগামী কাল, বৃহস্পতিবার নবান্নে বিশেষ বৈঠক ডাকছেন। বিপর্যয় মোকাবিলাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের কর্তারাও বৈঠকে যোগ দেবেন। বৈঠকে দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম ব্যবস্থা গ্রহণে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হয়ে দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি এখন আবহাওয়ামণ্ডলে রয়েছে। বাংলাদেশের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। উত্তর-পূর্ব মধ্যপ্রদেশের উপরও একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে উত্তর ওড়িশা থেকে রাজস্থান পর্যন্ত।
এর পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে উচ্চচাপ বলয় থাকার কারণে বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকছে। তার ফলে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হচ্ছে। আগামী শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য দেওয়া হয়েছে ‘হলুদ’ সতর্কবার্তা। শুক্রবার ‘কমলা’ সতর্কতা থাকছে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া ও দুই ২৪ পরগনা জেলার জন্য। সেখানে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ৫০-৬০ কিমি হতে পারে।
সোমবার কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কালবৈশাখী ঝড়বৃষ্টি হয়। আলিপুর আবহাওয়া অফিসে রাতে হাওয়ার গতিবেগ রেকর্ড হয়েছে ঘণ্টায় ৭৭ কিমি। আবহাওয়াবিদদের দাবি, শহরের অন্য অংশ এবং জেলাগুলির কোনও কোনও স্থানে হাওয়ার গতিবেগ আরও বেশি ছিল। বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে সোমবার বজ্রপাতের মাত্রা খুব বেশি ছিল। আগামী দিনগুলিতে বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আকাশে ঘন কালো মেঘ জমলে খোলা জায়গা না-থাকার জন্য বলেছেন তাঁরা।
এই সময়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয় বজ্রপাতে। সোমবার সেটাই হয়েছে। তবে সোমবারের বৃষ্টির ফলে গরম কমে গিয়ে সাময়িক হলেও স্বস্তি মিলেছে। মঙ্গলবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (২১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) স্বাভাবিকের চেয়ে ৫.১ ডিগ্রি কম ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৩২.৭ ডিগ্রি) ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি কম। কয়েকদিন আগে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতিতে কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল।