কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভের ইঙ্গিত আছে। ব্যবসায় যুক্ত হলে লাভবান হবার সম্ভাবনা। কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ বাড়বে। গৃহ ... বিশদ
রাজভবন আর রাজ্যের শাসক দল তথা নবান্নের বিরোধ এবার জায়গা করে নিল বিধানসভা অধিবেশনে। রাজ্যপাল ট্যুইট করে মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অধিবেশনের প্রথম দিন দ্বিতীয় পর্বে রাজ্যপাল বিধানসভায় এলে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যাশামতো ব্যবহার করেননি বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অধিবেশনের ভাষণে রাজ্যপাল জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাংসায় সিংহভাগ সময় ব্যয় করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন— এটা কাশ্মীর নয়, বাংলা। সেটা উনি ভুলে গিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যপালের জবাব, তাঁর কাছে সর্বাগ্রে দেশ।
এই বিবৃতির লড়াইয়ের উত্তাপ নিয়েই এদিন অধিবেশন শুরু হয়। প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামলকুমার সেনের বক্তব্যের পর বিরোধী সদস্য নেপাল মাহাত বলেন, রাজ্যের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে যে বিতর্ক বেধেছে, তা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। অধ্যক্ষের আসন থেকে শুরু করে শাসক শিবিরে তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। পরে একে একে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সরকারপক্ষের সহকারী মুখ্য সচেতক সমীর চক্রবর্তী একসুরে নাম না করে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনায় সরব হন। ফিরহাদ হাকিমের মতে, সংবিধানে ১৫৪ নম্বর ধারায় যেমন রাজ্যপালের ক্ষমতা ও এক্তিয়ার নির্ধারিত, তেমনই ১৬৩ নম্বর ধারাতে মন্ত্রিসভা ও মুখ্যমন্ত্রীর কর্তব্য ও রাজভবনের সঙ্গে তার সম্পর্ক বলা রয়েছে। তাঁর দাবি, সংবিধান-নির্দিষ্ট পথে চলছেন না রাজ্যপাল। সাংবিধানিক প্রধান হয়ে প্রশাসনিক প্রধানকে হেয় করতে চাইছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সমান্তরাল প্রশাসন চালোনোর অভিযোগ এনেছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা। বাংলার রাজ্যপাল হয়ে রাজ্যের উন্নয়ন তিনি চোখে দেখতে পাচ্ছেন না বলে রাজ্যপালকে দুষেছেন চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, মহামহিম রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে রাজ্যের প্রতি বিষোদ্গার করে গিয়েছেন।
তবে, এদিন সর্বাধিক তীক্ষ্ণ আক্রমণ এসেছে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবুর দিক থেকে। রাজ্যপালের পদটির আদৌ কোনও প্রয়োজন আছে কি না, তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে বলে মনে করেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী। নাম নেননি, তবে তাঁর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু যে রাজ্যপাল ধনকার, তা স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দিয়েছেন পার্থবাবু। মঙ্গলবার রাজভবনে সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া নিয়েও বিরোধীদের কটক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধান সত্তর বছরে পা দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের রাজ্যপালের ব্যবহার জমিদারদের মতো। লাটসাহেবের মতো। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংবিধান কি তাঁকে (পড়ুন ধনকারকে) এই অধিকার দিয়েছে? নির্বাচিত সরকারি প্রধানকে হেয় করা কি সাংবিধানিক? নির্বাচিত লোকের উপর ছড়ি ঘোরানোর এই পদ কি একান্ত জরুরি? সত্তর বছর আগে যখন সংবিধান তৈরি হয়, তখন এই পদের প্রয়োজন থাকতে পারে। এখনও কি তার দরকার আছে, সেটা ভাবার সময় এসেছে। আগের দিন মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী সবই নির্বাচিত পদ। কিন্তু রাজ্যপাল মনোনীত পদ। বর্তমান রাজ্যপাল ধনকারকে কে কেন এ রাজ্যে পাঠিয়েছেন, তাও তাঁর জানা। এদিন সেই সুরেই পার্থবাবু রাজ্যপাল পদের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন।