শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ, ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইআটির আটঘড়া এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, গত ২৫ মার্চ সকাল ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ব্যবসায়ী কওসর আলি। তারপর থেকে আর তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাত প্রায় সাড়ে ন’টা নাগাদ পরিবারের কাছে একটি ফোন আসে। জানানো হয়, ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছে। যদি তাঁকে ফেরত পেতে চায়, তাহলে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে।
এরপরেই ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের পক্ষ থেকে বাগুইআটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিস সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে যে নম্বর থেকে ওই ব্যবসায়ীর পরিবারকে ফোন করা হয়েছিল, সেই নম্বরটির বিস্তারিত তথ্য বার করে পুলিস। তাতেই জানা যায়, নদীয়ার হরিণঘাটা এলাকা থেকে ফোন এসেছিল। সেই মতো পুলিস ওই এলাকার স্থানীয় সূত্র মারফত অভিযুক্তদের সন্ধান শুরু করে। মঙ্গলবার রাতে পুলিস জানতে পারে, হরিণঘাটা থানা এলাকার মোহনপুরের একটি গ্রামে লুকিয়ে রয়েছে অভিযুক্তরা। রাতেই সেখানে হানা দিয়ে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। যে গাড়িতে করে অপরাধটি ঘটানো হয়েছিল, সেটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয় কওসর আলিকেও। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারাতে মামলা রুজু করা হয়েছে। কিন্তু, কেন অপহরণের ঘটনা ঘটল? সেবিষয়ে ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এদিন বারাসত আদালতের কাছে তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিস। আদালত ধৃত সরিফুল মণ্ডল এবং অরুণ মণ্ডলকে তিনদিনের পুলিস হেফাজতে পাঠানোরও নির্দেশ দেয়।
পুলিস জানিয়েছে, বাগুইআটি থানায় এবিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরই বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগকেও এই ঘটনার তদন্তে যুক্ত করা হয়। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতদের দাবি, তারা ওই ব্যবসায়ীর থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পেত। কিন্তু, সেই টাকা কিছুতেই ফেরত দিচ্ছিল না ব্যবসায়ী। সেবিষয়ে কথা বলার জন্য গত ২৫ মার্চ ব্যবসায়ীকে ডেকে পাঠায় তারা। কিন্তু, তাতেও টাকার সমস্যা না মেটায় অভিযুক্তরা ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে। কিন্তু, কীসের টাকা? তাহলে কী অভিযুক্তরা ব্যবসায়ীর পূর্ব পরিচিত? সেবিষয়ে পুলিসের দাবি, ব্যবসায়ী কাস্টমসের নিলাম থেকে দামি গাড়ি কিনে পরে বাজারে বিক্রি করার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। অভিযুক্তরা ওই ব্যবসায়ীর থেকে আগেও এরকম গাড়ি কিনেছিল। এবারও গাড়ি কেনার জন্য অভিযুক্ত দু’জন প্রথমে সাত লক্ষ এবং পরে আট লক্ষ টাকা ব্যবসায়ীকে দেয়। অভিযোগ, টাকা পাওয়ার পরও ওই ব্যবসায়ী কোনও গাড়ি দেননি। এভাবে দীর্ঘদিন কেটে যাওয়ায়, এবার সরাসরি ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যা মেটাতে চায় অভিযুক্তরা। সেই সূত্রেই গত ২৫ মার্চ তারা দেখা করেছিল। কিন্তু, তাতেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায়, তারা ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে। পুলিস আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিজেদের গ্রামেরই একটি বাড়িতে রেখেছিল। সেখান থেকেই তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছেন, সেবিষয়ে কোনও অভিযোগ পেলে তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিস জানিয়েছে।