মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম পিঙ্কি দাস (৩০)। তাঁর বাপেরবাড়ি মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার পলাশী গ্রামে। বছর ন’য়েক আগে মল্লারপুরের আড়াল গ্রামের পেশায় গ্যারেজ মিস্ত্রি লাল্টু দাসের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বর্তমানে তাঁদের আট বছরের পুত্রসন্তান রয়েছে। পরিবারের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মল্লারপুরের বাহিনা মোড়ে বাড়ি বানিয়ে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ি না যাওয়ায় স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে লাল্টু। এমনকী বছর চারেক ধরে আসা-যাওয়া বন্ধ করার পাশাপাশি স্ত্রী ও পুত্রের ভরণপোষণের খরচ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই সময় বধূ নির্যাতনের পাশাপাশি খোরপোশের মামলা করেন ওই গৃহবধূ। অভিযোগ, সম্প্রতি সেই মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিচ্ছিল লাল্টু। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘর থেকে ওই গৃহবধূর গলার নলিকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস।
পেশায় দিনমজুর মৃতার বাবা তমাল দাস বলেন, জামাই মেয়েকে না দেখায় এতদিন সাধ্যমতো মেয়ের সংসার চালিয়ে এসেছি । ২৮ ফাল্গুন খোরপোশের মামলার শুনানি ছিল। এদিকে মাসখানেক ধরে সেই মামলা মিটিয়ে সংসার করার কথা বলে জামাই। সেজন্য মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে মাঝে মধ্যেই রাতে আসা-যাওয়া শুরু করেছিল সে। কিন্তু মেয়ে বলেছিল, ২৮ ফাল্গুন মামলার দিনই দু’জনই উভয়পক্ষের উকিলের সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা করব। কিন্তু জামাই চেয়েছিল, শুনানির আগেই মামলা প্রত্যাহার করুক মেয়ে। বুধবার রাতে রামপুরহাটের কাষ্ঠগড়া গ্রামের তাপস মাল নামে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েকে বোঝাতে আসে জামাই। কিন্তু মেয়ে বলে, যেখানে মামলা চলছে, সেখানে এভাবে তোমাদের আসা ঠিক হচ্ছে না। যা হওয়ার মামলার দিনই হবে। সেইমতো তারা চলেও যায়।
এদিকে নিত্যদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। ছেলে শুভ দাস বলে, হঠাৎ চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে দেখি বিছানায় মা নেই। আমি দাদুকে ফোন করে সে কথা জানাই। তখনই দেখি পাশের ঘর থেকে বাবা ও একজন দৌড়ে বেরিয়ে গেল। পরে পাশের ঘরে গিয়ে দেখি মা রক্ত মাখা অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে। ছেলের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। তাঁরা দেখেন, গলার নলি কেটে ওই গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিস। রাতেই মেয়ের বাড়ি আসেন বাবা ও আত্মীয়স্বজন। সকালে জামাই ও তার বন্ধু তাপস মালের নামে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তমালবাবুর দাবি, মামলা প্রত্যাহার না করায় মেয়েকে খুন করা হল।
এদিন অভিযোগ পাওয়া মাত্রই খুনের ঘটনার কিনারা করতে তদন্তে নামে পুলিস। কাষ্ঠগড়া গ্রামে ঢোকার মুখে রাস্তার উপর থেকে জামাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে তার বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিসের দাবি, খুনের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্তরা। খুনের সময় ওই গৃহবধূর পা চেপে ধরে রেখেছিল তাপস। আর টায়ার কাটা চাকু দিয়ে গলার নলি কেটেছে লাল্টু। খুন করে তারা রাতেই বাইক চালিয়ে কাষ্ঠগড়া গ্রামে চলে আসে।