কর্মলাভের যোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা দুযবে। ... বিশদ
হাওড়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে কালীবাবুর বাজার, হরগৌরী বাজার। কদমতলায় রয়েছে দুটি বড় বাজার। এসব জায়গায় কাটা মুরগির মাংস কোথাও ৮০ টাকা, কোথাও ১০০ টাকা দরে বিকিয়েছে। হরগৌরী বাজারের খুচরো বিক্রেতা সদানন্দ নস্কর বলেন, যে পরিমাণ বিক্রি হতো, এখন তার তিনভাগের একভাগও বিক্রি হচ্ছে না। গত দিন পনেরো থেকে প্রভাবটা বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে গিয়েছে। মুরগির পাইকারি সরবরাহকারী এবং নিজস্ব হ্যচারি ব্যবসা রয়েছে শ্রীঅরবিন্দ রোডের ব্যবসায়ী পার্থ মাজির। তিনি বলেন, এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে আমাদের খরচ পড়ে প্রায় ৮০ টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেও আমরা পাইকারি দর ৮৫ টাকা করে পেয়েছি। এখন তা আমরা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে। কিন্তু নতুন করে আর উৎপাদন করতে পারব না, যদি দু-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি না-বদলায়। সখেদে তিনি বলেন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, নিশ্চিন্তে মুরগির মাংস খান। তাছাড়া সস্তায় প্রয়োজনীয় প্রাণিজ প্রোটিন মুরগির মাংস ছাড়া আর কীসে পাওয়া যাবে? কিন্তু গুজবে ভর করে অতি-সচেতন, শিক্ষিত মানুষই আর মুরগির মাংসের ধারেপাশে আসছেন না। তাঁর দাবি, দাম এত কমে যাওয়ায় অনেকেই খুচরো বাজারে ১৪০-১৫০ টাকা কেজিপিছু দাম থাকলে কিনতে পারতেন না। তাঁরা এখন একটু হলেও বেশি কিনছেন। অনেক গরিব মানুষ মুরগির মাংসের ছাঁট কিনে রান্না করে খেতেন, তাঁরা এখন কম দামের জন্য মাংসই কিনছেন মাঝেমধ্যে। গ্রামের দিকেও লোকজন ভালোই খাচ্ছেন চিকেন। তাই দাম পড়ে গেলেও সরবরাহ চালু আছে। কিন্তু যে লোকসান হচ্ছে, তাতে এবার উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া রাস্তা খোলা থাকবে না।
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ পোল্ট্রি ফেডারেশনের সম্পাদক মদন মাইতি বলেন, মুরগির মাংস নিয়ে করোনাকেন্দ্রিক গুজবে এই মুহূর্তে শুধু আমাদের রাজ্যে পোল্ট্রিফার্ম ও মাংস বিক্রয় খাতে লোকসানের পরিমাণ প্রায় ৬০০ কোটি হয়ে যাবে। আর তিন-চারদিন এমন অবস্থা থাকলে তা হাজার কোটি ছাড়াবে। তাঁদের ব্যবসায় এতবড় বিপর্যয় আগে কখনও আসেনি বলে জানান মদনবাবু।
খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, মাংসের বিক্রি আগের তুলনায় কমেছে ৫০ শতাংশের মতো। তার ফলে প্রায় এক লক্ষ লোকের জীবন-জীবিকায় অন্ধকার নেমে এসেছে। গুজব সরিয়ে মানুষকে সঠিক তথ্য জানিয়ে আমাদের জীবন-জীবিকা বাঁচানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি।