মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। সেই বছরের অক্টোবর মাসে দুই সশস্ত্র দুষ্কৃতীর গুলিতে প্রাণ হারান আরএসএসের নেতা রবীন্দর গৌসাঁই। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে জগতার সিং জোহালকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। এই গ্রেপ্তারির মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই গুরপ্রীতের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। এই গ্রেপ্তারির পর থেকেই বদলে যায় ছবিটা। জগতার দিল্লিতে জেলবন্দি থাকাকালীনই তাঁর স্ত্রীকে স্কটল্যান্ডে থাকতে দিতে অস্বীকার করে সেদেশের প্রশাসন। এরপরেই গত বছর ব্রিটেনে চলে আসেন গুরপ্রীত। তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী জেরেমি হান্টের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনার পর ব্রিটেনে থাকতে চেয়ে আবেদন জানান গুরপ্রীত। একইসঙ্গে জানান, ভারতে ফিরে গেলে তাঁর প্রাণ সংশয়ও হতে পারে। কিন্তু গত শনিবার ব্রিটেন সরকারের তরফে একটি চিঠি পান তিনি। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, গুরপ্রীতের পরিস্থিতি ‘স্বতন্ত্র’। কিন্তু তাঁকে স্কটল্যান্ডে থাকার অনুমতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ব্রিটেন সরকারের তরফে এই চিঠি পাওয়ার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ৩১ বছর বয়সি গুরপ্রীত। এর আগে কখনও সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের পরিচয় উদ্ঘাটন না করলেও গত রবিবার আর সেপথে হাঁটেননি তিনি। ব্রিটেন সরকারের সমালোচনা করে গুরপ্রীত জানান, তাঁর স্বামীকে যথেষ্ট সাহায্য করা হয়নি। তিনি আরও জানান, জেরেমি হান্টের সঙ্গে কথা বলার সময় এনিয়ে আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু তাঁর ভিসার আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় বড়সড় সমস্যায় পড়েছেন গুরপ্রীত। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে স্বামীর পাশে থাকাই উচিত আমার। কিন্তু সেখানে আমার প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে। তার বদলে আমি যদি এখানে থাকি, তবে অন্তত জগতার জানবে, আমি নিরাপদে আছি। কিছুটা মানসিক শান্তিও পাবে। ব্রিটেন সরকার এই মামলায় বিশেষ কিছু করেনি। কিন্তু তারা অন্তত আমাকে এদেশে থাকার অনুমতি দিতে পারত।’
এদিকে, ব্রিটেন সরকারের তরফে অবশ্য জগতার ও তাঁর পরিবারের পাশে থেকে সাহায্য করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। এমনকী, গুরপ্রীতকে শরণার্থী হিসেবে সেদেশে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদিও শরণার্থী হিসেবে সেদেশে থাকার অনুমতি পেলে কোনও পরিস্থিতিতেই তিনি অন্তত সাত বছরের আগে ভারতে ফিরতে পারবেন না।
অন্যদিকে, জগতার সিং জোহালের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে পুলিসের তরফে জানানো হয়, এই ঘটনায় জগতারের জড়িত থাকার যাবতীয় প্রমাণও মিলেছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জগতার সাফ জানান, কোনও ধরনের হত্যা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। এই হামলার জন্য কোনও সংগঠনকে অর্থ সাহায্যও করেননি তিনি। তাঁর পরিবারের দাবি, নাগরিকত্ব এবং ১৯৮৪ সালে শিখবিরোধী দাঙ্গা প্রসঙ্গে ব্লগে লেখার কারণেই জগতারকে ফাঁসানো হয়েছে।
জগতার ও তাঁর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে স্কটল্যান্ডের শিখ সম্প্রদায়ভুক্ত আইনজীবী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর চরণদীপ সিং জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে ব্রিটেনের শিখ সম্প্রদায় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।