মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন দেশের জন্য প্রাণ হারানো পুলওয়ামার নিহত জওয়ানদের ‘ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব’ বলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ট্যুইটারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে রাহুলের ট্যুইটেই। ভারত কোনওদিন শহীদদের ভুলবে না বলে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাবনত ট্যুইটের আগেই এদিন তোপ দাগেন রাহুল। নরেন্দ্র মোদি ট্যুইট করেন সকাল ৯ টা ৪৮ মিনিটে। তার ১২ মিনিট আগেই পুলওয়ামা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান রাহুল গান্ধী।
প্রধানমন্ত্রী রাহুলের মন্তব্য নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি বটে, তবে দলকে মাঠে নামান বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। সেই মতো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি বলেন, সারা দেশ যখন নিহত জওয়ানদের সাহসিকতাকে কুর্নিশ করছে, সেসময় রাহুল গান্ধীর এই নিলর্জ্জ মন্তব্য নিয়ে কিছু বলার নেই। সন্ত্রাসের মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কী অবস্থান, তা গোটা দেশ জানে বলেই উল্লেখ করেন তিনি।
কেবল কিষেণ রেড্ডিই নয়। মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডে, মোক্তার আব্বাস নাকভির মতো সরকারের অন্য দুই মন্ত্রীর পাশাপাশি মীনাক্ষী লেখি, জি ভি এল নরসিমা, সম্বিত পাত্র, প্রাক্তন মন্ত্রী শাহনওয়াজ হুসেনের মতো বিজেপির নেতানেত্রীরাও রাহুল তথা কংগ্রেসকে আক্রমণে নামলেন। ‘পুলওয়ামা কাণ্ডে সবচেয়ে বেশি কে লাভবান হল?’ রাহুলের এই মন্তব্যের পাল্টা মন্তব্য করেন মীনাক্ষী লেখি। রাহুলকে রাজনৈতিকভাবে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী এবং রাজীব গান্ধীর প্রসঙ্গও টেনে আনেন। বলেন, এঁদের মৃত্যুতে কার লাভ হয়েছিল?
আক্রমণ আরও তীক্ষ্ম করে মীনাক্ষী লেখির মন্তব্য, এ ধরনের মানসিকতার মানুষ কীভাবে এখনও ভারতীয় রাজনীতিতে নিজেদের প্রয়োজনীতার কথা ভাবতে পারেন! এ ধরনের মানসিকতার জন্যই রাজনীতিবিদদের মানুষ শকুন বলে। তোপ তীব্র করেন লেখি। একইসঙ্গে রাহুল গান্ধীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি করেন। কমবেশি একই সুরে আক্রমণ চড়িয়েছেন বিজেপির অন্য নেতা, মন্ত্রীরা। চুপ থাকেনি কংগ্রেসও। রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে আরও মজবুত করতে দলের মুখ্য মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এবং দলের অন্য মুখপাত্র জশবীর শেরগিল আক্রমণাত্মক হন। তথ্য জানার অধিকার আইনে পুলওয়ামা সংক্রান্ত একটি লিখিত জবাব প্রকাশ্যে এনে মোদি সরকারের উদ্দেশে সুরজেওয়ালার সওয়াল, প্রতিটি ভারতীয় পুলওয়ামার শহীদদের জন্য গর্বিত। কিন্তু মোদি সরকার সেইসব সাহসী প্রয়াত জওয়ানদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে কোনও তথ্য দিতে চাইছে না? তদন্ত রিপোর্ট কেন গোপন করা হচ্ছে? কী লুকোচ্ছে বিজেপি সরকার?
কংগ্রেস মুখপাত্র জশবীর শেরগিল মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বলেন, আগে থেকে গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকা সত্ত্বেও পুলওয়ামা কাণ্ড হল কেন? দায়িত্বহীনতার জন্য সরকার কাকে দায়ী করবে? সেনাবাহিনীকে বিজেপি রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করে এই অভিযোগ তুলে তাঁর তোপ, মুম্বইয়ের ২৬/১১ সন্ত্রাসবাদী হামলার পর নরেন্দ্র মোদি তৎকালীন মনমোহন সিং সরকারের প্রবল সমালোচনা করেছিলেন। আর আজ রাহুল গান্ধী প্রশ্ন করতেই তাঁকে আক্রমণ করা হচ্ছে কেন? বিজেপিকে নকল দেশপ্রেমী আখ্যা দিয়ে এআইসিসির এই মুখপাত্র আরও বলেন, নিহতের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ, সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মোদি সরকার। তার কী হল? এখানেও ভাঁওতা! কটাক্ষ কংগ্রেসের।
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মমতার: নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গতবছর পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় শহিদ সিআরপিএফ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ট্যুইটবার্তায় তিনি লেখেন, ‘২০১৯ সালে আজকের দিনে পুলওয়ামা হামলায় শহিদ সিআরপিএফ জওয়ানদের অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। ওই অকুতোভয় জওয়ানদের আমি স্যালুট করছি এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। জয় হিন্দ।’