কর্মে কিছুটা শুভ। খেলাধূলায় বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন। মানসিক দিকটি বিক্ষিপ্ত থাকবে। ... বিশদ
বহুজাতিক সংস্থার তরফে ফোন করা হয় টালিগঞ্জের বাসিন্দা নীলেশ সরকারকে। সেই মতো ইমেলে চলে আসে বিমানের টিকিট। বিমানবন্দরে গিয়ে দেখতে পান তিনি একা নন, কলকাতা থেকেই চাকরি পেয়েছেন একঝাঁক যুবক। কম্বোডিয়া পৌঁছতেই কেলেঙ্কারির সম্মুখীন হন তাঁরা। আটকে রেখে দাবি করা হয় মোট টাকা। অন্যথায় পাওয়া যাবে না মুক্তি। বিদেশের মাটিতে আটকে রেখে টাকা আদায়ের নয়া ফন্দি এঁটেছে এক অজানা প্রতারক চক্র। এক মাসের মধ্যে এক ডজন অভিযোগে ঘুম উড়েছে লালবাজারের। এই গ্যাংয়ের মাথায় কারা, তার সন্ধানে তদন্তে নেমেছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ।
লোকসভা ভোট চলাকালীন এই মর্মে প্রথম অভিযোগ পায় কলকাতা পুলিস। সূত্রের দাবি, অভিযোগকারীকে চাকরির টোপ দিয়ে প্রথমে ভিয়েতনাম, পরে সেখান থেকে কম্বোডিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই একটি ফ্ল্যাটে আটকে রাখা হয় তাঁকে। দেওয়া হয় একটি ফোন। ওই ফোনের মাধ্যমে কলকাতায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেয় গ্যাংয়ের সদস্যরা। দাবি করা হয় ৫ লক্ষ টাকা। না হলে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রায় সপ্তাহখানেক তাঁকে সেখানে আটকে রাখা হয়। এরপরে সুযোগ বুঝে কম্বোডিয়া থেকে কলকাতায় পালিয়ে আসেন ওই যুবক। লালবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। পুলিস সূত্রে খবর, তিনি একা নন, পরপর একই ধরনের অভিযোগ করেছেন আরও ১১ জন যুবক। তাঁরাও সেখান থেকে পালিয়ে এসেছেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই ঘটনার নেপথ্যে বড়সড় গ্যাং কাজ করছে বলেই মনে করা হচ্ছে। মূলত চাকরির টোপ দিয়ে প্রতারণার নয়া ছক ফেঁদেছে দুষ্কৃতীরা। যে সমস্ত ফোন নম্বর থেকে প্রার্থীদের চাকরির টোপ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। কোন কোন জায়গা থেকে সেই ফোনগুলি করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, ভার্চুয়াল প্রোটোকল নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করে ফোনগুলি করা হয়েছে। যার ফলে অভিযুক্তদের সঠিক অবস্থান ট্র্যাক করা সম্ভব হচ্ছে না। সাইবার বিভাগের অফিসাররাও এই তদন্তে নেমেছেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিস।
অভিযোগকারীদের থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এশিয়ার মূলত তিনটে দেশে চাকরির টোপ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া। সেইসব শহরে আর কেউ আটকে রয়েছেন কি না, তাও দেখছে পুলিস। সে কথা মাথায় রেখেই এধরনের প্রতারণামূলক ফোন এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দারা।