অত্যাধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
বীরভূম জেলায় হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। তাঁদের কেউ করোনার বাহক কি না তা জানতে নমুনা পরীক্ষার উপর জোর দিয়েছে প্রশাসন। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার নাইসেডে পাঠানো হতো। রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে পাঠানো শুরু হয়। কিন্তু, সেখানেও অমীমাংসিত রিপোর্টের সংখ্যা বেড়ে চলছিল। ফলে ফের নাইসেডে পাঠানো শুরু হয়। এছাড়া রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের নমুনা কলকাতার ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো শুরু হয়। সেখান থেকেও রিপোর্ট আসতে অস্বাভাবিক দেরি হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশে ওই প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি দুর্গাপুরের কোভিড হাসপাতালে বীরভূমের সম্ভাব্য করোনা রোগীদের লালারসের নমুনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ হাজার হাজার রিপোর্ট বকেয়া থেকে যাচ্ছে।
এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, সকলকে সরকারি কোয়ারেন্টাইনে রেখে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা মুখের কথা নয়। তাই উপসর্গ ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে প্রশাসন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম মানা হচ্ছে না। তাই দেরিতে আসা রিপোর্টে তাঁদের কেউ করোনা-পজিটিভ হলেই চিন্তা বাড়ছে স্বাস্থ্যদপ্তরের। কারণ, আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসাদের চিহ্নিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, জেলায় ৩০০০-এরও বেশি রিপোর্ট আসতে বাকি রয়েছে। যেগুলির নমুনা সপ্তাহখানেক আগে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার প্রায় ২২০০ রিপোর্ট রয়েছে। বাকি বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার। রিপোর্ট না আসার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নমুনাগুলি রেফ্রিজারেটারে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। বেশিদিন পেরিয়ে গেলে সেগুলি মাইনাস তাপমাত্রায় রাখতে হবে। বিভিন্ন জেলার নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেড ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। কিন্তু, সেখানে এত নমুনা স্টোর করার মতো পরিকাঠামো নেই। ফলে, নমুনা পাঠানোর সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ডেপুটি সিএমএইচ(২) ডাঃ স্বপনকুমার ওঝা বলেন, যে নমুনাগুলি পাঠানো হয়েছিল সেগুলি এখনও পরীক্ষা হয়নি। এত নমুনা যাচ্ছে তাতে রাখার জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। তাই আপাতত দু’দিন নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, আগে ভিনরাজ্য ও জেলা থেকে ফেরা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছিল। এতে নমুনা সংগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। স্বাস্থ্যদপ্তর নতুন গাইড লাইন পাঠিয়ে জানিয়েছে, যাঁরা বাইরে থেকে আসছেন তাঁদের উপসর্গ থাকলে তবেই নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। ফলে, নমুনা সংগ্রহ অনেক কমে যাবে। এই দু’দিন শুধুমাত্র জরুরি রোগীর ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, প্রচুর রিপোর্ট অমীমাংসিত রয়েছে। তার মধ্যে নাইসেডে বেশি। এখন আমাদের কম করে নমুনা পাঠাতে হবে। কয়েকদিনের মধ্যে অমীমাংসিত রিপোর্ট পেয়ে গেলে দু’দিন পর বাকি নমুনা পাঠানো হবে।