নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: রোগীদের হয়রানি কমাতে সিঙ্গল পিক সেন্টার-সহ অনলাইন ল্যবরেটরি ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। লকডাউনের মধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে ইতিমধ্যেই ট্রায়াল রান শুরু করে দিয়েছে। ফলে এখন থেকে রোগীদের আর বিভিন্ন প্যাথোলজিতে গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য রক্ত সহ অন্যান্য নমুনা দিতে হবে না। পাশাপাশি অনলাইনে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসায় সুবিধার জন্য আউটডোরে চিকিৎসকদের প্রতিটি ঘরকে কম্পিউটারাইজড করা হচ্ছে। পুরো আউটডোর কম্পিউটারাইজড করার প্রক্রিয়াও চলছে জোর কদমে। করোনার প্রভাব কিছুটা কমলেই এই ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। এই ব্যবস্থা চালু হলে একদিকে যেমন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল খোলনলচে বদলে আধুনিক হবে, তেমনই চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদেরও হয়রানি কমবে।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, এখন থেকে বিভিন্ন ধরনের রক্ত পরীক্ষার জন্য রোগীকে একাধিক দিনে ভিন্ন ল্যাবরেটরিতে গিয়ে বারবার রক্ত দিতে হবে না। রোগীদের কাছ থেকে আউটডোরের একটি ঘরে রক্ত নেওয়া হবে। সংগ্রহ করা রক্তের নমুনা ভাগ করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ল্যাবে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে রক্ত নেওয়ার সময় রোগীর কোনও মেল আইডি থাকলে তা নেওয়া হবে। রক্ত পরীক্ষার পর রিপোর্ট অনলাইনে যেমন আউটডোরে চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হবে, তেমনই রোগীকেও পাঠানোর ব্যবস্থা থাকবে। এরফলে রোগীরা একদিনে একটি জায়গাতেই নমুনা দিয়ে তাঁদের সমস্ত পরীক্ষা করাতে পারবেন। এখন পুরো বিষয়টির ট্রায়াল চলছে। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা এই ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়েছি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের দেখার পর চিকিৎসকরা তাঁদের নানা ধরনের পরীক্ষার পরামর্শ দেন। পরীক্ষার জন্য আউটডোরে রোগীদের রক্ত দিতে হয় বা কবে পরীক্ষা হবে তার জন্য ডেট নিতে হয়। একইভাবে প্যাথোলজির পরীক্ষাগুলির জন্য হাসপাতালের নতুন ভবন ও বায়োলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য লোকপুরে গিয়ে ডেট নিতে হচ্ছিল। ফলে বিভিন্ন ধরনের রক্ত পরীক্ষার জন্য রোগীকে একাধিক দিনে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ খুঁজে গিয়ে বারবার রক্ত দিতে হতো। স্বাভাবিকভাবেই রক্ত পরীক্ষার জন্য একাধিকবার ছুঁচ ফোটানোর যন্ত্রণা সহ্য করতে হতো। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন দিনে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে অনেক সময় লাগত। এমনকী, অনেক সময় রোগীদের একাংশ দফায় দফায় সংগ্রহ করা পরীক্ষার রিপোর্ট হারিয়েও ফেলতেন। তাতে চিকিৎসকদের সমস্যায় পড়তে হতো। তাই নানাবিধ এই সমস্যার সমাধানে সিঙ্গেল পিক সেন্টার চালু করার উ঩দ্যোগ নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।