মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
এদিকে, পোলবার কামদেবপুরের দুর্ঘটনা থেকে কপাল জোরে বেঁচে যাওয়া খুদে শিক্ষার্থীদের শুক্রবারের ঘটনার আতঙ্ক এখনও তাজা। এমনই একজন ঐষাণী পাল। দ্বিতীয় শ্রেণীর ওই পড়ুয়া শনিবার স্কুলে যায়নি। নিজের বাড়িতে বসে সে বলে, গাড়িটা কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে গেল বুঝতে পারলাম। কিন্তু, আর কিছু বুঝতে পারিনি। হঠাৎ মনে হল আটকে গেছি। গাড়ির দরজা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তারপর একটা কাকু আমাকে টেনে বের করে। তখন দেখলাম গাড়িটি উল্টে আছে। খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম। এখনও ভয় পাচ্ছি।
কলকাতার এসএসকেএমে ভর্তি দীপ্তাংশু ভকতের ঠাকুমা প্রবীণা প্রতিমা ভকত বলেন, দুর্ঘটনা নিয়ে আর কী বলব! শুধু এটাই চাই নাতিটা সুস্থ হয়ে ফিরুক। কিন্তু আমাদের খুব ভালো লাগছে এটা ভেবে যে বাচ্চা দু’টোর জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা করেছিল সরকার। নয়তো বাচ্চা দু’টো তো চিকিৎসাই পেত না। এমন মানবিক উদ্যোগকে প্রশংসা করতেই হয়। আমাদের ভাগ্য ভালো যে এভাবে সরকার পাশে দাঁড়িয়েছিল। নইলে কী হতো ভাবতেই পারছি না। অভিভাবক সুরজিৎ দাস বলেন, খুব বিশ্বাস করে বাচ্চাদের ওই পুলকার চালকদের হাতে ছাড়া হয়। সেই বিশ্বাসের মর্যাদা যদি না মেলে তাহলে আর কী করা যায় সেটাই ভাবতে পারছি না। এ এক মস্ত বড় সঙ্কট। সব স্কুলের পর্যাপ্ত গাড়ি থাকে না, তাহলে অভিভাবকদের কী করা উচিত সেটা ঠিক করতে হবে এখন। খুব উদ্বেগ হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা বলেন, পরিবহণ দপ্তরের পক্ষ থেকে নজরদারি নিয়মিত চলে। কিন্তু অভিভাবকরাও যদি সতর্ক হন তবে পুলকার চালকদের মেজাজমর্জি মতো চলার অভ্যেস নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হয়। অতিরিক্ত বাচ্চাদের নিয়ে চলার ক্ষেত্রে অভিভাবকরা আপত্তি তুলতে পারেন। একইভাবে গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে কি না তাঁরাও দেখে নিতে পারেন। শিশুদের জন্যে এটা করাই যায়।
শিক্ষার্থীদের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর থেকে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে তদন্ত থেকে নানা ধরনের চাপানউতোর চলছেই। কিন্তু, বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে সমস্ত শিশুরা পুলকারে করে যায় তাঁদের পরিবারের উদ্বেগ। জানা গিয়েছে, জেলা জুড়ে বহু পরিবার নিজেদের উদ্যোগে গাড়ি ভাড়া করে বাড়ির শিশুদের পড়তে পাঠায় দূরদূরান্তে। হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে একাধিক দ্রুতগামী যানবাহন বহুল সড়ক গিয়েছে। সেই সব সড়কপথেই ওই খুদে পড়ুয়াদের যাতায়াত করতে হয়। ফলে সদ্য ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পর অভিভাবকদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি হয়েছে। একদিকে পুলকার চালকদের অতিরিক্ত মুনাফার প্রবণতা অন্যদিকে সরকারি মহলে যযার্থ পদক্ষেপের অভাবে অভিভাবক মহল শ্যাম রাখবেন না কূল তা দিয়ে চিন্তায় পড়েছেন।