মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
জেলা পরিবহণ আধিকারিক অনন্ত সরকার বলেন, পুলকার নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। নিয়ম না মানা পুলকারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বারাসত মধ্যমগ্রাম পুলকার অপারেটর্স ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল হক বলেন, সংগঠনের তরফে সমস্ত পুলকারকে সরকারি নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হয়। অনিয়মের বিষয়ে তেমন কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। কোনও অভিযোগ এলে আমরা ব্যবস্থা নিই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বিভিন্ন নাম করা স্কুলের নিজস্ব গাড়ি রয়েছে। ওইসব গাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে অভিভাবকদের খুব একটা অভিযোগ নেই। কিন্তু, ওই গাড়ি সিংহভাগ ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম থাকে। কোথাও গাড়ি থাকলেও তা অলিগলির মধ্যে ঢোকে না। সেকারণে বাধ্য হয়েই সিংহভাগ অভিভাবক পুলকারের দ্বারস্থ হন। কিন্তু, এই পুলকার নিয়ে জেলা জুড়ে অভিভাবকদের ক্ষোভের অন্ত নেই।
অধিকাংশ অভিভাবকের অভিযোগ, যেসব গাড়ি পুলকার হিসেবে ব্যবহৃত হয় তার বেশিরভাগই দীর্ঘদিনের পুরনো। কার্যত অব্যবহৃত গাড়ি কিনে সারাই করার পর তা পুলকার হিসেবে চালানো হচ্ছে। অভিভাবকদের এও অভিযোগ, বেশিরভাগ গাড়িই বাণিজ্যিক নয়। ওইসব গাড়িতে চালকই খালাসির কাজ করেন। রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালক ছাত্রছাত্রীদের ওঠা নামা করান। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার কারণে কোনও গাড়ির দরজা ঠিক মতো লাগে না। কোনও গাড়ির ব্রেক ভালো করে ধরে না। কম টাকার রি সোল করা টায়ার লাগিয়ে গাড়িগুলোকে চালানো হয়। বেশি লাভের আশায় গাড়িতে অতিরিক্ত পড়ুয়াকে তোলা হয়। গাড়ির নিজস্ব সিটের বাইরে অতিরিক্ত আসন লাগানো হয়। কোথাও আবার সিটের মাঝের ফাঁকে বেঞ্চ লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
টিটাগড়ের তালপুকুরের বাসিন্দা তথা বেসরকারি ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ইন্দ্রদীপ দত্ত বলেন, স্কুলের গাড়ি বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরের মূল রাস্তা দিয়ে যাওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে পুলকারের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। কিন্তু বাচ্চা নিয়ে আমাদের আতঙ্কের শেষ নেই। এইসব গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ সেইভাবে না হওয়ায় যেকোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। চালকদের কোনও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। কোনও বড় ঘটনা ঘটলে তখনই পুলিস ও প্রশাসনকে কিছুটা সক্রিয় হতে দেখা যায়। তা না হলে নজরদারির তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। পুলকার নিয়ে নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর আইন না আনলে এমন দুর্ঘটনা আটকানো অসম্ভব।
বারাসত আদালতের আইনজীবী সুভাষরঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, পুলকারে নাতনিকে স্কুলে পাঠাতে হয়। কিন্তু, গাড়িগুলির ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখলে আতঙ্কে শিউরে উঠতে হয়। ভাড়া খাটানোর অযোগ্য গাড়িকে পুলকার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রচুর ছাত্রছাত্রী নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য দুর্ঘটনা ঘটছে। গাড়ির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে পুলকার চালানো হচ্ছে। পুলিস ও প্রশাসন ঠুঁটো হয়ে বসে রয়েছে।