পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা। প্রতিকার: একটি ... বিশদ
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ১২টা। আকাশে চপার দেখা যেতেই উল্লাসের শুরু। তার অনেক আগে থেকেই হাজার হাজার কর্মী সমর্থক হাজির হয়েছিলেন কোতুলপুরের বিবেকানন্দ ক্লাব ময়দানে। সভাস্থলের ছাউনি ছাড়িয়ে দেখা গিয়েছে শুধু কালো মাথার ভিড়। হুইল চেয়ারে ‘প্রিয়’ নেত্রীকে দেখামাত্র কর্মী-সমর্থকদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনিতে তৃণমূল নেত্রীকে বরণ করে নেন তাঁরা। কোতুলপুরের পর ইন্দাসের সভা সেরে তৃণমূল নেত্রী বড়জোড়ায় যান। প্রচণ্ড গরম সত্ত্বেও তাঁকে এক মুহূর্তের জন্যও ক্লান্ত লাগেনি। উল্টে সময় যত গড়িয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ ততই বাড়িয়েছেন তিনি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানানো মাত্র সভাস্থল থেকে উড়ে আসে মহিলাদের উত্তর, ‘দিদি আমরা আপনার সঙ্গেই আছি।’
বাঁকুড়ার কোতুলপুরে সঙ্গীতা মালিক, ইন্দাসে রুনু মেটে ও বড়জোড়ার তৃণমূল প্রার্থী অলোক মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে জনসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বলেন, ‘পিএম কেয়ার্সের টাকা কোথায় গেল? উনি নিজের নামে স্টেডিয়াম তৈরি করেছেন। এবার মূর্তি বানাবেন। তারপর দেশের নামটা বদলে নিজের নাম বসিয়ে দেবেন।’
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘ওরা বাইরের গুন্ডাদের নিয়ে এসে বাংলা দখল করতে চাইছে। ওরা রবীন্দ্রনাথকে জানে না। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙল। বীরসা মুণ্ডার বদলে অন্যের মূর্তিতে মালা দিল। এমনকী, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তিতেও আগুন জ্বালিয়েছে।’ কোতুলপুরের সভায় তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘কংগ্রেস ও সিপিএমের সঙ্গে ডিল করেছে বিজেপি। ওদের ডিলটাতে খিল লাগিয়ে দিন। ওরা ভোট এলেই মিথ্যার ডুগডুগি বাজায়।’
তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘সাতবার সাংসদ হয়েছি। ভাতা নিলে দেড়-দু’কোটি টাকা নিতে পারতাম। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও কয়েক লক্ষ টাকা পেতে পারি। কিন্তু, আমি তা নিই না। সার্কিট হাউসে থাকলে, তার খরচও আমি দিয়ে দিই।’
বাঁকুড়ার শিল্পতালুক বড়জোড়ায় তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুরে ডিএসপি বন্ধের নোটিস কেন দেওয়া হল? কেন দেশে ৪০ শতাংশ বেকার বেড়ে গেল?’ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিনা পয়সায় চাল দেব। আর ৮৫০ টাকায় গ্যাস কিনে সেই চাল সেদ্ধ করবেন সাধারণ মানুষ!’
মমতা বলেন, ‘এখান দিয়ে ফ্রেট করিডর করা হবে। ডানকুনি থেকে পানাগড়, দুর্গাপুর, বড়জোড়া হয়ে রঘুনাথপুর পর্যন্ত। তার ফলে এখানে অনেক শিল্প হবে। ৭২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। কয়েক লক্ষ চাকরি হবে।’ তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে তৃণমূলকে না জেতালে বহিরাগতরা এসে ঘর-বাড়ি লুট করে নেবে। মনে রাখবেন, আমার প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে, আমাকে ভোট দেওয়া।’ দলনেত্রী এদিনও সভামঞ্চে স্তোত্র পাঠ করেন। সেই পর্বেও শোনা যায় শঙ্খ আর উলুধ্বনি। সভার কোলাহল ছাপিয়ে। নেতৃত্বে? বামা বাহিনী। প্রচারপর্ব যত গড়াচ্ছে, প্রমীলা বাহিনীর উৎসাহ, উদ্দীপনা আর জমায়েত ভরসা জোগাচ্ছে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে।