সৌগত গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা: শেষ বাঁশি বাজতেই ইস্ট বেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোঁর চোখেমুখে স্বস্তি। সঙ্গে সঙ্গে মাঠে দৌড়ে গিয়ে ফুটবলারদের জড়িয়ে ধরলেন তিনি। তারপর নিজেদের মধ্যে বৃত্ত তৈরি করে ছেলেদের কিছু বলছিলেন। অনুমান করা যায়,তাদের লড়াইকে বাহবা দিলেন অস্কার। প্লেয়াররাও তখন আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন। তবে ব্রুজোঁ বাস্তববাদী। দোষারোপের বদলে আত্মসমালোচনায় বিশ্বাসী। তাই তো সাংবাদিক সম্মেলনে এসেই তাঁর মন্তব্য, ‘মহেশের আচরণে আমি একেবারই খুশি নই। সতীর্থ লাল কার্ড দেখার পর ওর আরও সংযমী হওয়া উচিত ছিল। অবশ্যই এই বিষয়ে পরে ওর সাথে কথা বলবো।’ দলের বাকি প্লেয়ারদের পারফরম্যান্সে খুশি তিনি। ব্রুজোঁ বলছিলেন, ‘ছেলেদের বলেছিলাম, মানসিকভাবে গুটিয়ে থেকো না। বরং ভাবো যে তোমরা এগারো জন মিলেই লড়াই চালাচ্ছ। ওদের জন্য গর্বিত। তবে পুরো শক্তি নিয়ে খেললে ফল অন্যরকম হতেই পারত।’ সত্যিই, শনিবার ইস্ট বেঙ্গল ফুটবলারদের পারফরম্যান্স হৃদয় জিতে নিয়েছে সমর্থকদের। কুয়াদ্রাত জমানায় যা অদৃশ্য ছিল। ৯ জন মিলে মহমেডানের ১১ জনকে দাঁত ফোটাতে দেয়নি লাল-হলুদ ব্রিগেড। ক’দিন ধরেই হিজাজি মাহেরের সঙ্গে কোচের বচসা নিয়ে চর্চা চলছিল। এদিনও একাধিক ভুল করলেন বিদেশি ডিফেন্ডার। তবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালালেন আনোয়ার আলি, রাকিপ ও লালচুংনুঙ্গারা। আলাদা করে প্রশাংসা প্রাপ্য লাল-হলুদের গোলরক্ষক গিলের। সেই সুবাদে দীর্ঘ আট মাস পর ক্লিনশিট পেল দল। ব্রুজোঁর কথায়, ‘এই আত্মবিশ্বাস আগামী দিনে আরও ভালো খেলতে সাহায্য করবে। আজ আমরা তিন পয়েন্টের লক্ষ্যেই মাঠে নেমেছিলাম। তবে পরিস্থিতির বিচারে এই এক পয়েন্ট অনেক মূল্যবান।’
এদিকে, ৯ জনের ইস্ট বেঙ্গলকে হারাতে না পারায় রীতিমতো বিরক্ত মহমেডান কোচ আন্দ্রে চেরনিশভ। তিনি বলছিলেন, ‘এই ম্যাচ আমাদের জেতা উচিত ছিল। অনেক সুযোগও তৈরি হয়েছিল। তবে প্রতিপক্ষের প্রশংসা করতে হবে। ওরা দারুণ লড়াই করেছে।’ পাশাপাশি এদিন চেরনিশভের স্ট্র্যাটেজি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে বিরতিতে অ্যালক্সিসকে তুলে নেওয়ার জন্য। রুশ কোচের মনে রাখা উচিত, ময়দান কঠিন ঠাঁই। নিজের উপর চাপ টেনে আনছেন তিনি।