বিমা প্রভূতক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। গৃহ সংস্কার বা ক্রয়ের প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে যেতে পারেন। শরীরের ... বিশদ
মঙ্গলবার রাতে বর্ষবরণের উৎসবের মধ্যেই চকদহ থানার আলাইপুর জমাদার পাড়ায় অভিযানে আসেন কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দারা। তদন্ত-তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মনোজ গুপ্তার এক সাগরেদকে। তার নাম ধীরেন ঘোষ। পুলিসি জেরায় মনোজই বলে দেয় ধৃতের নাম। তার কাছ কাছ থেকে প্রচুর নথিপত্র এবং পরিচয়পত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেগুলি ঘেঁটে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ধীরেন দীর্ঘদিন ইতালিতে ছিল। স্বভাবতই জাল পাসপোর্ট তৈরিতে ইতালির যোগাযোগও কাজে লাগাত সে। ধীরেনের গ্রেপ্তারি ভুয়ো পাসপোর্ট কাণ্ডের তদন্তে নতুন মোড় বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতা পুলিস সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই চকদহ এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে ছিল ধীরেন। নদীয়াজুড়ে পাসপোর্ট তৈরির চক্র চলত তার এই ভাড়া বাড়ি থেকেই। সঙ্গত কারণেই, জেলায় বড় সংখ্যায় অনুপ্রবেশে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে ধীরেনের। গোয়েন্দারা জেনেছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার হাত ধরে অনুপ্রবেশ হয়েছে গেদে সীমান্ত দিয়ে। ধৃত ধীরেনের একাধিকবার বাংলাদেশে যাওয়ারও তথ্য মিলেছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, ধীরেন নিজেও বাংলাদেশি নাগরিক। এখানে আসার পর যুক্ত হয় ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের সঙ্গে।
কী কাজ ছিল ধীরেনের? তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে লোক এনে ধৃত সমরেশ বিশ্বাস এবং মনোজকে দিত সে। পরে তাদের বিভিন্ন নথিপত্র তৈরি করে দেওয়া সহ একাধিক লজিস্টিক সাপোর্ট দিত ধীরেন। পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার পাশাপাশি ইউরোপের নামিদামি দেশে যাওয়ার ভিসার ব্যবস্থাও করে দিত। এক্ষেত্রে ধীরেন ইতালিতে দীর্ঘদিন থাকার সুবাদে নানা যোগযোগকে কাজে লাগাত বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। ফলে, তাঁদের সন্দেহ, ধীরেন ওই দেশে থাকাকালীনও ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের জাল ছড়িয়ে রাখতে পারে। কিন্তু, তার তার গভীরতা কতখানি, তদন্তে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে কলকাতা পুলিস।
ধীরেনের ভাড়া বাড়ির মালিকের এক আত্মীয় সঞ্জয় পাল এদিন বলেন, ‘প্রায় চার পাঁচ বছর ধরে আমাদের এখানে ভাড়া থাকত ধীরেন। সঙ্গে স্ত্রী এবং এক সন্তান ছিল। মাঝেমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ধীরেনের শ্বশুর-শাশুড়ি আসতেন। এছাড়া আমরা কাউকে সেরকম আসতে দেখিনি। জামা কাপড়ের ব্যবসা করে বলেই আমাদের এখানে ভাড়া নিয়েছিল। তবে পাসপোর্ট বা ওই জাতীয় কোনও কাজ করতে বলে কোনওদিন শুনিনি। হঠাৎ করেই মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিস হানা দেয়। গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ধীরেনকে। তারপর শুনতে পাই ও নাকি ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের সঙ্গে কাজ করত।’ বাড়িতে কি কখনও বাংলাদেশিs অনুপ্রবেশকারীদের শেল্টার দিতs? সঞ্জয়বাবুর জবাব, ‘শ্বশুর-শাশুড়ি ছাড়া আর কাউকেই আসতে দেখিনি আমরা। বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডাও হয়নি। এলাকায় মিশুকে লোক হিসেবে পরিচিত ছিল। এর থেকে বেশি আর কোনও তথ্যই আমাদের কাছে নেই।’
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ধরতে একাধিক অভিযান চালাচ্ছে কলকাতা পুলিস এবং রাজ্য পুলিস। একাধিক অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশির হাত থেকে ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার হয়। কীভাবে তাদের হাতে পাসপোর্ট এল, তার তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিস। তদন্তে উঠে আসে, মনোজ গুপ্তা নামে এক ব্যক্তির নাম। পুলিসের জালে ধরা পড়ে মনোজ। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মনোজকে জেরার সূত্রেই খোঁজ মেলে ধীরেনের। এখন এই ধীরেনের কার্যকলাপ কতটা গভীরে, তার তল ছোঁয়ার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। - নিজস্ব চিত্র