উচ্চশিক্ষা বা গবেষণায় সাফল্য ও সুনাম প্রাপ্তি। অর্থভাগ্য শুভ। ব্যবসা ও পেশায় লক্ষ্মীলাভ। ... বিশদ
মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরের চক হড়হড়িয়ার বাসিন্দা স্বপ্ননীল। বয়স ১৮ছুঁইছুঁই। এরই মাঝে ব্রেন স্ট্রোকে হারিয়েছেন বাবাকে। মা অনুরাধা সরকার শিক্ষিকা হিসেবে সদ্য যোগ দিয়েছেন স্থানীয় একটি নার্সারি স্কুলে। ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণ চম্পালাল মাহেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া স্বপ্ননীল। ইচ্ছে আর্ট নিয়ে পড়ে অনেকটা দূর এগোনোর। সামনে পড়ে আছে অনেকটা পথ। কিন্তু বাবা হারা ছেলের কাছে ওই পথ পেরনো যে দুষ্কর। কাপড়ের যে ব্যবসা ছিল, বাবা মারা যাওয়ার পর তা লাটে উঠেছে। সামান্য বেতনের বেসরকারি স্কুল থেকে মা যা পান তাতে কোনওমতে সংসারটা টেনেটুনে চলে। এই অনটনের মধ্যেই কাজে আসতে শুরু করে স্বপ্ননীলের শৈল্পিক গুণ। ছোট থেকেই খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারে স্বপ্ননীল। সম্প্রতি রাজ্যস্তরের একটি অঙ্কন প্রতিযোগিতাতেও প্রথম স্থান অর্জন করেছে সে। শুধু অঙ্কন নয় স্বাবলম্বী হতে বিয়ের কনে সাজানোতেও বিশেষ পারদর্শী। নিজের শিল্পীকগুণের ওপর ভরসা করেই বছর পাঁচেক থেকে মিনিয়েচার দুর্গা প্রতিমা বানাতেও শুরু করেছে স্বপ্ননীল। তার তৈরি প্রতিমাগুলি বিভিন্ন থিমের পুজোয় শোভা পেয়েছে এতদিন। এবারেও চারটি মিনিয়েচার দুর্গা প্রতিমা বানিয়েছে স্বপ্ননীল। কোনওটি এক ফুট কোনওটি আবার দেড় কিংবা দুই ফুট উচ্চতার। ওই প্রতিমাগুলির পরতে পরতে রয়েছে শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়া। এবারে চারটি মিনিয়েচার দুর্গা প্রতিমার মধ্যে একটি যাবে লালবাগ, একটি খাগড়া ও অপরটি শোভা পাবে ইসলামপুরের দুর্গা মণ্ডপে।
স্বপ্ননীলের কথায়, দারিদ্রতার জাল ছিঁড়ে জীবনে আমি অনেকটা পথ এগোতে চাই। নিজের ভালোলাগার জায়গাগুলি থেকেই প্রতিমা তৈরির চিন্তাভাবনা এসেছিল মাথায়। প্রতিমাগুলি থেকে এবারে যত টাকা পাব তা দিয়ে পুজোর দিনগুলি ভালোভাবে কাটাতে পারব। মায়ের হাতেও কিছুটা দিতে পারব। তবে যাই করি না কেন, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই আমি। সৃষ্টিতে মগ্ন স্বপ্ননীল।