উচ্চশিক্ষা বা গবেষণায় সাফল্য ও সুনাম প্রাপ্তি। অর্থভাগ্য শুভ। ব্যবসা ও পেশায় লক্ষ্মীলাভ। ... বিশদ
২০২২ সালের বাজেটে দেশজুড়ে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ‘এক স্টেশন, এক পণ্য প্রকল্পে’র ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। নিঃসন্দেহে সাধু উদ্যোগ। প্রতিটি স্টেশনে একটি করে দোকান খোলা হবে। সেখানে স্থানীয় হস্তশিল্পীদের সৃষ্টিকর্ম বিক্রি হবে। এতে স্থানীয় শিল্পের প্রসার ঘটবে। কিছু মানুষ কাজ পাবেন। চাঙ্গা হবে স্থানীয় অর্থনীতিও। সেই মতো দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে মোদির ছবি সহ এক স্টেশন, এক পণ্যের দোকান বা স্টল বসানো হয়। মূলত স্থানীয় শিল্পীদের হাতের কাজ, বিভিন্ন শস্যের বীজ এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাত উদ্ভিজ্জ পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল ওইসব স্টলগুলিতে।
গত লোকসভা ভোটের আগে রামপুরহাট জংশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে স্টেশন ম্যানেজার অফিসের পাশে ঘটা করে এই স্টল চালু করা হয়। কয়েকদিন নিয়মিত খোলাও হতো স্টলটি। কিন্তু, কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এখনও খোলেনি। তার পাশ দিয়ে যাত্রীরা হেঁটে যাচ্ছেন। তারাপীঠ ফেরত দুরদূরান্তের অনেক পর্যটক স্মৃতি হিসেবে এখানকার হস্তশিল্প কিনে বাড়ি নিয়ে যেতে চান। কিন্তু স্টল বন্ধ থাকায় তাঁরা নিরাশ হয়ে ফিরছেন। প্রায়ই একই সময়ে নলহাটি জংশনেও স্টল বসানো হয়। কিন্তু উদ্বোধন হলেও তা আজও চালু করতে পারেনি রেল।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় শিল্পীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে এক মাসের জন্য স্টল ভাড়া নেওয়ার আবেদন করতে পারেন। দিতে হবে ২০০০ টাকা। স্টল তৈরি এবং তা ভাড়া নিতে অগ্রিম লাগে না। স্থানীয় বাজারে খ্যাতি রয়েছে, এমন হস্তশিল্প এবং কৃষিপণ্য বিক্রিতে উৎসাহ দিতেই এক স্টেশন এক পণ্যের দোকান তৈরি হয়েছে। প্রতিটিতে মাসে ৪০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ নিখরচায় দেবে রেল। এক একটি স্টল বা দোকান গড়তে রেলের এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু সেই স্টলগুলি ভাড়া নিতে হস্তশিল্পীরা যে উৎসাহ প্রকাশ করছেন না, তা স্টেশন ম্যানেজারদের বক্তব্যেই স্পষ্ট। রামপুরহাট স্টেশন ম্যানেজার হাদিউজ্জামান বলেন, এই স্টলগুলি একমাস অন্তর ভাড়া দেওয়া হয়। শুনেছি নতুন কেউ পেয়েছেন। কিন্তু কেন স্টল খুলছেন না, সেটা দেখতে হবে। নলহাটির স্টেশন ম্যানেজার মহম্মদ আলি বলেন, একজন ভাড়া নেওয়ার জন্য এসেছিলেন। সেই মতো প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর তিনি আসেননি।
স্বভাবতই এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, মোদির সঙ্গে বাজেপেয়ি সরকারের অনেক ফারাক রয়েছে। বাজেপেয়ি যা বলেছিলেন তা বাস্তবায়িত করেছিলেন বা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মোদি মুখে বড়বড় কথা বলেন। একটাও বাস্তবায়িত করতে পারেন না। বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াওয়ের মতো অনেক কর্মসূচি তাঁরা নিয়েছিলেন। কিন্তু সবই জলে চলে গিয়েছে। এরকমই এক স্টেশন, এক পণ্য প্রকল্প নিয়েছিলেন। যা বর্তমানে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল বলেন, স্টলগুলি বন্ধের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি। -নিজস্ব চিত্র