কর্মে কিছুটা শুভ। খেলাধূলায় বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন। মানসিক দিকটি বিক্ষিপ্ত থাকবে। ... বিশদ
ব্যবসায়ী-চিকিত্সকের এই আঁতাতে ধুঁকছে সরকারি ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের নজরদারির অভাবে পরিষেবা নিয়ে রোগীদের অভিযোগের অন্ত নেই। তারপরেও যেন শীতঘুম ভাঙছে না জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের। অজানা কারণে গঙ্গারামপুর হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে হেলদোল দেখতে পাচ্ছেন না রোগী এবং পরিজনরাও।
এর ওপর হাসপাতালে চালু রয়েছে ব্র্যান্ডেড ওষুধ বিক্রির চক্র। অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ওষুধের ব্র্যান্ড লিখে ভর্তি থাকা রোগীদের হাতে ছোট চিরকুট ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাত্, কোনও বিশেষ কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিখলে চিকিত্সকদের কমিশন পাওয়ার যে কথা সাধারণ মানুষ এতদিন জেনে আসছেন, এখানেও সেই ফর্মুলা কাজ করছে।
একাংশ রোগীর অভিযোগ, চিকিৎসকের সঙ্গে ইনডোরে ঢুকে পড়ছে বহিরাগতরা, তারাই মুলত চালাচ্ছে এই চক্র। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের কেন বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হবে, উঠছে সেই প্রশ্নও। স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ওষুধের কম্পোজিশন বা জেনেরিক নাম লিখবেন। সেই নিষেধ অমান্য করে কেন ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে?
যদিও জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে এমন চিরকুটে ওষুধের নাম লেখার কোনও খবর নেই। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাসের কথায়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসক ওষুধের ব্র্যান্ড লিখতে পারেন না। তাঁদের জেনেরিক নাম লিখতে হবে। আমাদের হাসপাতালে সমস্ত রোগের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। অনেক সময় রোগীরা ভালো ওষুধ লেখার কথা বলেন চিকিৎসকদের। সেক্ষেত্রে অনেক চিকিৎসক হয়তো লিখেও থাকেন। চিরকুটে ওষুধের ব্র্যান্ডের নাম লেখার কোনও অভিযোগ এখনও পাইনি। সেরকম কিছু পেলে বিষয়টি দেখা হবে। হাসপাতালের সুপার বাবুসোনা সাহা জানান, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তাঁরও এবিষয়ে কিছু জানা নেই।
এদিকে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সরকার স্বীকৃত ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান ধুঁকছে। চিকিত্সকরা ব্রান্ডেড ওষুধ লিখে দেওয়ায় ন্যায্যমূল্যের দোকানে জেনেরিক ওষুধ বিক্রি কয়েক গুণ কমেছে। এর ফলে এখন ২৪ ঘণ্টা দোকান খুলে রাখা দায় হয়ে গিয়েছে সংস্থার পক্ষে।
গঙ্গারামপুরের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের মালিক বিমান দাস বলেন, আমাদের জেনেরিক ওষুধ বিক্রি এখন নেই বললেই চলে। এতটাই খারাপ পরিস্থিতি, কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। হাসপাতালের চিরকুটে ব্র্যান্ডের নাম থাকায় রোগীদের জেনেরিক ওষুধ দিলে নিতে চাইছেন না। তাঁদের বোঝাতেই পারছি না দু’টি একই ওষুধ।
হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দাসের কথায়, রোগীদের হাসপাতালে সমস্যা হচ্ছে সেবিষয়ে একমত। একাধিকবার রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা করে অনিয়ম বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। দুঃখের বিষয়, এই চক্র বন্ধ করতে পারিনি। হাসপাতালের এই সমস্যা নিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত্। এরকম চিরকুট রোগীদের দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
- নিজস্ব চিত্র।