অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগটি বিশেষ শুভ। কর্ম সাফল্য ও চিন্তার অবসান। দেবারাধনায় মন। ... বিশদ
সাংসদ হিসেবে পাঁচ বছরে নিশীথ কী কী কাজ করছেন, তা খুঁজতে গেলে দূরবিনের সাহায্য নিতে হবে। নিশীথের বিরুদ্ধে তার থেকেও বড় অভিযোগ ছিল, বিপদেআপদে সাংসদ হিসেবে তাঁকে এলাকায় কাছে পান না সাধারণ মানুষ। এসব থেকে আস্তে আস্তে বিজেপির এই নেতার পিছনে লেগে গিয়েছিল ‘দিল্লির নেতা’ তকমা। যেটুকু সময় তাঁকে এলাকায় দেখা যেত, শিরোনামে থাকতেন বিবাদে জড়িয়ে। এসব করে যে পায়ের তলা থেকে আস্তে আস্তে মাটি সরে যাচ্ছিল, সেটা টের পাননি নিশীথ।
এই হারের ফলে জেলায় বিজেপির ভোটব্যাঙ্কেও ব্যাপক ধস নেমেছে। এতে নিশীথের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন খাতে বইবে, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। গত পাঁচ বছর সাংসদ থাকাকালীন কোচবিহারের জন্য কোনও উন্নয়ন না করা, জেলার উন্নয়নে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সেগুলি পালন না করা সহ একাধিক বিষয়ে বিরোধীরা বারবার অভিযোগ তুলেছিল। সেই সমস্ত অভিযোগকে হাতিয়ার করে এবার তৃণমূল কোমর বেঁধে বিজেপি তথা নিশীথের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছিল। লক্ষ্যে একশো শতাংশ সফল তৃণমূল। এদিকে তৃণমূল প্রার্থীর জয় নিশ্চিত হতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা ঢাকঢোল বাজিয়ে সবুজ আবির খেলায় মেতে ওঠেন। তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, অমিত শাহের ডেপুটি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী, তাঁর ঔদ্ধত্য, অহঙ্কার, টাকার গরমের জবাব কোচবিহারের মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদধন্য জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া দিল্লিতে যাচ্ছেন।
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে থাকা সত্ত্বেও কোচবিহার ভরাডুবি হল তাদের। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, নিশীথকে প্রার্থী করা নিয়ে দলের একাংশের মধ্যেই ক্ষোভ ছিল। দলের একটি বড় অংশ এবারের নির্বাচনে সেভাবে সক্রিয় ছিল না। সেই সঙ্গে নিশীথের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে অনেকেই বিরক্ত ছিল। তারই ফল ভুগতে হল বিজেপিকে।
এদিন কোচবিহার পলিটেকনিকে ভোট গণনা যত এগিয়েছে ততই রাউন্ডে রাউন্ডে বিজেপি প্রার্থীর হারের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। প্রায় সব রাউন্ডেই তৃণমূল প্রার্থী এগিয়ে ছিলেন। গণনা যখন শেষ পর্যায়ে জগদীশচন্দ্র, জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক কেন্দ্রের বাইরে বেরিয়ে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সবুজ আবির খেলায় মেতে ওঠেন। তখন গণনা কেন্দ্রের বাইরে রাস্তায় তৃণমূল শিবিরে জয়ের উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, হিতেন বর্মনরা ততক্ষণে গণনা কেন্দ্রে এসে পৌঁছন। হার নিশ্চিত বুঝতে পেরে নিশীথ গণনা কেন্দ্র ছেড়ে পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে যান। আরও কিছুক্ষণ পরে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু গণনা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান।
বিরাজ বসু বলেন, মানুষের রায়কে আমরা সম্মান জানিয়েছি। আমাদের হয়তো কোনও ঘাটতি ছিল। সেটা বুঝতে পারিনি।