উচ্চশিক্ষা বা গবেষণায় সাফল্য ও সুনাম প্রাপ্তি। অর্থভাগ্য শুভ। ব্যবসা ও পেশায় লক্ষ্মীলাভ। ... বিশদ
ঘোষেদের আদি নিবাস বর্ধমান। পলাশীর যুদ্ধের পর দামোদরের বন্যায় ভিটে হারায় তাদের। রামরাম ঘোষ সপরিবারে চলে আসেন হাওড়ার খসমরা গ্রামে। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে অনটন চরমে পৌঁছলে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বাড়ির কাছে একটি পুকুরে গিয়েছিলেন ঝাঁপ দিতে। পুকুর পাড়ে সধবা বৃদ্ধার বেশে তাঁর সম্মুখে এলেন দুর্গা। তাঁর নির্দেশে, বাড়ির একটি অংশের মাটি খুঁড়ে চার ঘড়া মোহর পেলেন রামরাম। তা থেকে ১০০১টি স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে বর্ধমানের মহারাজ রাজা তিলকচাঁদ রায়ের রাজ দরবারে গিয়ে উপস্থিত হলেন। স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে মহারাজা তিনখানি মৌজার জমিদারিত্ব দিলেন রামরামকে। আর ঘোষ বাড়িতে শুরু হল দুর্গাপুজো।
ঘোষবাড়ির দুর্গা তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা। একচালার ডাকের সাজ। সপরিবারে থাকেন। আগে ছাগল ও মোষ বলির প্রচলন ছিল। এখন তা হয় না। পরিবারের সদস্যদের কথায়, রামরাম ঘোষ পুজো শুরু করার পর মাটির মালসায় দেবীকে লুচি ভোগ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে ধাতুর বাসনের দেওয়া হয় ভোগ। তবে নিয়ম মেনে আজও তিনটি মাটির মালসায় ২১খানা লুচি দেওয়ার রীতি। সঙ্গে থাকে সাত প্রকারের নাড়ু। এখন এই বংশের ষষ্ঠ প্রজন্ম বর্তমান। অধিকাংশই রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছেন। তবে পুজোর সময় বাড়ির ছ’টি পরিবারের প্রায় ৩০০ সদস্য মিলিত হন এ বাড়িতে। বর্তমান প্রজন্মের কৌশিক ঘোষ বলেন, ‘পালা করে পুজোর ব্যয় বহন করা হয়। একসময় ভাগ চাষিদের জন্য ভোজের ব্যবস্থা হতো। এখন সে নিয়ম নেই।’ এখানে পুজোর চার দিন দুর্গার সঙ্গেই পূজিতা বাড়ির অধিষ্ঠাত্রী মনসা। পুজো দেখতে হাজার হাজার মানুষের ভিড় উপচে পড়ে এখনও।