উচ্চশিক্ষা বা গবেষণায় সাফল্য ও সুনাম প্রাপ্তি। অর্থভাগ্য শুভ। ব্যবসা ও পেশায় লক্ষ্মীলাভ। ... বিশদ
শিবচন্দ্রের স্বপ্নে দেখা দেবী ছিলেন নৃসিংহের আদলে। দু’টি হাত মাত্র দৃষ্টিগোচর হতো। বাকি আটটি হাত আড়াল করা মাথার চুলে। দত্তপুকুরের শিবালয়ের এই পুজোকে স্থানীয়রা বুড়িমার পুজো বলে থাকে। কথিত আছে, প্রথম বছর স্থানীয় এক প্রবীণ মহিলা পুজোর আচারের কাজ করেছিলেন। সেই থেকেই শিবালয়ের দুর্গাপুজো বুড়িমার পুজো নামেই চলে আসছে। অনেকের মতে, রাজা শিবচন্দ্র রায় যে ক’টি দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন তার মধ্যে শিবালয়ের পুজোই সবথেকে প্রাচীন। ৩৫৪ বছর ধরে কৃষ্ণপক্ষের শুরুতেই হয় দেবীর বোধন। যা এখনও চলছে।
এখানে দুর্গার বাহন সিংহ নয়। বাহন হল ঘোড়া। এ ঘোড়ার কেশর রয়েছে। পুজোর জন্য রয়েছে একটি স্থায়ী মন্দির। বলি দেওয়ার স্থান আলাদা। ঐতিহ্য মেনে রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজো হয়। ষষ্ঠীতে শিবালয়ের বুড়িমার পুজো শুরু না হলে আর কোনও পুজো শুরু হয় না। বিসর্জনের সময়েও একই নিয়ম। যতক্ষণ না বুড়িমার বিসর্জন হচ্ছে ততক্ষণ অন্য পুজোর নিরঞ্জন হয় না। শিবালয়ে কয়েকঘর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ছিল। তাঁদের মধ্যে একজন রহমত আলি। পুজোর সময় মায়ের দর্শন পেয়েছিলেন রহমত, বলে জনশ্রুতি। পরিবারের প্রবীণ সদস্য তপন রায় বলেন, ‘আমাদের পুজো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেয়। আজও বিসর্জনের সময় রহমত আলির বাড়ির সামনে দুর্গাকে কিছুক্ষণের জন্য নামানো হয়। রহমতের বংশের লোকজন মাকে দেখতে আসেন। তাঁদের দেখার পর ঘাটের পথে রওনা হন দেবী।’
এ বছর সপ্তমীতে দণ্ডিকাটা। তাতে হাজার হাজার মানুষ যুক্ত হবেন। কায়পুত্রপাড়ার নমঃশুদ্র পরিবারের সদস্যরা বিসর্জনের সময় কাঁধে করে দেবীকে পৌঁছে দেন সুতি নদীর ঘাটে। যে মহিলারা সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম তাঁরা নবমীতে হোমের কলা খান। এই উপাচার করে ফলপ্রাপ্ত বহু মহিলা। সেই বিশ্বাস থেকে আজও দূরদূরান্ত থেকে এসে মহিলারা নবমীতে মানত করেন ও হোমাগ্নিতে পুড়ে যাওয়া কলা খান।