কর্মে কিছুটা শুভ। খেলাধূলায় বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন। মানসিক দিকটি বিক্ষিপ্ত থাকবে। ... বিশদ
মৌসুমিদেবী ও অশোক পালের ছোট মেয়ে প্রিয়সী। দুই সন্তানের মধ্যে বড়, ছেলে প্রিয়ম পুনের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। অশোকবাবু শনিবার ব্যবসার কাজে বিহারে ছিলেন। বাড়ির ছোট মেয়ে ছিল সকলের আদরের। তাঁর কোনও স্বপ্নপূরণের পথেই বাবা, মা বা দাদা কখনও বাধা দেননি। তাই সাংবাদিকতার স্নাককোত্তর পাঠ নিয়ে অসমের তেজপুরে গিয়েছিলেন প্রিয়সী। সেই পড়াশোনার সুবাদেই ইন্টার্নশিপ করছিলেন কলকাতার ইকোপার্কের কাছে একটি সংস্থায়। শনিবারও সেখানেই কাজে গিয়েছিলেন সাংবাদিকতার স্বপ্ন বুনে চলা তরুণী। রাতে অ্যাপবাইক বুক করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়েই প্রবল গতিতে তাঁর অ্যাপবাইক একটি গাড়ির পিছনে ধাক্কা দেয়। বাইক থেকে ছিটকে পড়েন তরুণী। স্থানীয় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। নিমেষে স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে যায় পাল পরিবারের।
রাত সাতটা নাগাদ ফোনটা এসেছিল মায়ের কাছে। মা ভেবেছিলেন, মেয়েরই ফোন। কিন্তু ফোনের উল্টোদিক থেকে তাঁকে জানান হয়, মেয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। দ্রুত হাসপাতালে আসতে হবে। এক প্রতিবেশীকে নিয়ে কলকাতায় চলে যান মৌসুমিদেবী। কিন্তু আদরের মেয়ে ততক্ষণে নিথর হয়ে গিয়েছে। রবিবার দুপুরে ডুকরে কাঁদছিলেন আর নাগাড়ে বলছিলেন সে কথাই। বলছিলেন, আর মেয়েটা কথা বলল না। সকালে কত কথা বলে গেল, কত স্বপ্নের কথা। রাতে আর কিছুই বলল না। এক মায়ের বুকফাটা আর্তনাদে তখন পল্লিশ্রীতেও শ্মশানের স্তব্ধতা।
কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, মেয়েটি বড় ভালো ছিল। বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ার তাঁর ঘাড়ের শিরা ছিঁড়ে গিয়েছিল। তাতেই একটি তরতাজা প্রাণ চলে গেল। বাড়ির একটি ঘরে কাঁদছিলেন প্রিয়সীর দিদা পদ্মা দাস। বলেন, নাতনিটা তো চলে গেল। ওঁর সব ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে গেল। এখন মেয়ের মা’কে সামাল দেওয়াই কঠিন। মৌসুমি তো মেয়ের স্বপ্ন আগলে রেখেই দিন কাটাত। মৌসুমি পালের ঘর থেকে ভেসে আসা কান্নার সুরের মধ্যেই বললেন তিনি।