নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ন’টা পর্যন্ত লড়াইটা ছিল হাড্ডাহাড্ডি। কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বালিগঞ্জ বিধানসভার ভোটগণনা চলছে বিআর আম্বেদকর এডুকেশন সোসাইটিতে। গণনাকেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে রাখা এলইডি টিভিতে ভোটের ফলাফল দেখাচ্ছে। রাজ্যজুড়ে তৃণমূল-বিজেপির ‘নেক টু নেক’ লড়াই চলছে। কখনও এ এগিয়ে, কখনও ও। পোস্টাল ব্যালটের ফলাফলে তৃণমূলের তুলনায় এগিয়ে বিজেপি। বাইরে তখনও গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের চোখেমুখ উজ্জ্বল। তবে ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ন’টা পেরতেই ভোট বাড়তে শুরু করল ঘাসফুল প্রার্থীদের। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ দেখা গেল, গোটা রাজ্যে ৩৪টি লোকসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। বিজেপি সাত ও কংগ্রেস এগিয়ে একটি আসনে। বিভিন্ন দলের কাউন্টিং এজেন্টরা মাঝেমধ্যে মিডিয়া সেন্টারে এসে ভোটের ফল দেখে যাচ্ছিলেন। তারপর বেলা যত গড়াল ততই মুখ শুকনো হতে শুরু করল বিজেপির এজেন্টদের। টিভি দেখতে দেখতে একসময় চোখ প্রায় ছলছল করে উঠল দক্ষিণ কলকাতার এক বিজেপি নেত্রীর। তিনিও কাউন্টিং সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন। রাজ্যের ফলাফল দেখতে বাইরে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ থাকলেন। ঘাসফুলের কয়েকজন এজেন্ট তাঁর পাশে এসে দাঁড়াতেই চলে গেলেন ভিতরে।
একই অবস্থা উলুবেড়িয়াতেও। এদিন দুপুরে উলুবেড়িয়া দুই নম্বর ব্লকের আমরাবেড়িয়া গ্রামে বিজেপির ক্যাম্প অফিসের সামনে বসে দুঃখের কথা শোনাচ্ছিলেন দোকানদার কালো সোনা। বীরশিবপুরের গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে বিজেপির ক্যাম্প অফিস তখন শুনশান। মাছি তাড়াচ্ছে। সামনে পানীয় জলের একটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা। পুলিসের গাড়িও দাঁড়িয়ে। কিছুটা দূরে একটি টেবিল পেতে চা, বিস্কুট সহ কিছু খাবারদাবার নিয়ে বসে কালো সোনা। তিনি জানান, গণনার দিন ভালো বিক্রি হবে ভেবে এক হাজার টাকার জিনিস তুলেছিলেন। বিজেপির ক্যাম্প অফিসের সামনে একটি দোকানও করেন। কিন্তু ভালো বিক্রি হয়নি। ভোটে বিজেপির ফল ব্যবসায় পুরো জল ঢেলে দিয়েছে। তবে সকালে ক্যাম্প অফিসে ভালো ভিড় হয়েছিল। কিন্তু বেলা বাড়তেই ফাঁকা। সোনা বলেন, ‘আমি জিনিসপত্র নিয়ে বসে রইলাম। বিক্রি হল না।’ এইসব জিনিসপত্র নিয়ে এখন কী করবেন, তা ভেবেই মাথায় হাত তাঁর। ‘কপাল মন্দ,’ বলে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন।
দুপুরেই ফাঁকা বিজেপির ক্যাম্প অফিস। উলুবেড়িয়ায় পাপ্পা গুহর তোলা ছবি।