অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগটি বিশেষ শুভ। কর্ম সাফল্য ও চিন্তার অবসান। দেবারাধনায় মন। ... বিশদ
একরাশ আশঙ্কা নিয়েই ভোটের লড়াই শুরু হয়েছিল। একাধিক কেন্দ্রে বিজেপি তৃণমূলকে বিপদে ফেলতে পারে বলে দুশ্চিন্তাও ছিল। কিন্তু মঙ্গলবারের গণনায় দেখা গেল, সব হিসেব-নিকেশ ওলট-পালট করে দিয়েছে তৃণমূল। বালি এবং উত্তর হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্র রক্তচাপ বাড়িয়েছিল ঘাসফুল শিবিরের। সেখানেও মানুষ দু’হাত উপুড় করে আশীর্বাদ করেছে তাদের। দিনের শেষে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪৪২ ভোটে জয়ী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবারের তুলনায় তাঁর লিড বেড়েছে ৬৫ হাজার ৫৩৮ ভোটের। প্রথম রাউন্ড থেকেই দফায় দফায় বেড়েছে তৃণমূল প্রার্থীর লিড। প্রথম রাউন্ডেই নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী রথীন চক্রবর্তীকে ২৩ হাজার ২৫ ভোটে পিছনে ফেলেছিলেন প্রসূন। গণনার তৃতীয় রাউন্ডে তা বেড়ে হয় ৫৩ হাজার ২১২ এবং ষষ্ঠ রাউন্ডে গিয়ে দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৯২৬। নবম রাউন্ডে লাখের গণ্ডি ছাড়িয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার ৩৩৫ ভোটে এগিয়ে যান বিদায়ী সাংসদ।
দিনের শেষে ফলাফলেই স্পষ্ট, রাজ্যের মতো সবুজবন্দি হাওড়াও। এই লোকসভা কেন্দ্রেও ঘাসফুলের অরণ্যে পথ হারিয়েছে বিরোধীরা। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন বিজেপির রথীন চক্রবর্তী। তাঁর সংগ্রহে ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৯৬ ভোট। তৃতীয় স্থানে সিপিএমের সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। প্রচারপর্বে গোটা লোকসভা কেন্দ্র চষে ফেললেও তাঁর ঝুলিতে গিয়েছে ১ লক্ষ ৫১ হাজার ৪৮৩ ভোট। এই ফলাফলে হাওড়ার এমন এলাকাও রয়েছে, যেখানে কোনওদিন তৃণমূল লিড পেত না। ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।
এদিকে, জয় নিশ্চিত হতেই আবির খেলায় নেমে পড়েন প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে রীতিমতো নাচতেও দেখা যায় তাঁকে। লিড বাড়িয়ে জয় প্রসঙ্গে প্রসূন বলেন, মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ এবং দায়বদ্ধ। এই জয় আমাদের দলের সমস্ত কর্মীদের একান্ত প্রচেষ্টায়। আমি তাঁদের জন্যই সেই জয় উৎসর্গ করছি। ইন্ডিয়া জোট শক্তিশালী হয়েছে। এবার হাওড়ার জন্য কী করে কাজ আদায় করে আনতে হয়, তা দেখাব।
অন্যদিকে, বিজেপি শিবিরে বিষাদের সুর। সাঁতরাগাছির গণনা কেন্দ্রের ২০০ মিটার দূরের এলাকাও সকালে গেরুয়া পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। ছিল উপচে পড়া কর্মীদের ভিড়। কিন্তু দুপুর গড়াতেই রণে ভঙ্গ দেন তাঁরা। রীতিমতো পাততাড়ি গুটিয়ে শিবির ছাড়েন সকলে। রাস্তার দু’ধারে গেরুয়া পতাকাগুলি অবশ্য ছিল। কিন্তু দিন শেষে সেগুলিও যেন ফ্যাকাসে, মুষড়ে পড়া। আর কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সবুজ আবিরের রঙে যেন জ্বলজ্বল করছে।