ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি। শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ নীলাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি ১০০ ডায়ালে ফোন করে জানান, তাঁর বন্ধু ফেসবুক লাইভ করে আত্মহত্যা করতে চলেছেন। সেই ঘটনা তিনি মোবাইলে দেখতে পাচ্ছেন। পুলিস তাঁর বন্ধুকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুক। তিনি শুধু এটুকুই জানাতে পেরেছিলেন যে, বন্ধুর বাড়ি গড়ফার সাঁপুইপাড়ায়। কিন্তু সঠিক ঠিকানা দিতে পারেননি। ফোন পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিতে বিন্দুমাত্র দেরি করেননি লালবাজারের কন্ট্রোল রুমের অফিসাররা। তৎক্ষণাৎ ফোন যায় গড়ফা থানায়। থানা ও লালবাজারের অফিসাররা যৌথভাবে ওই যুবকের লোকেশন ট্র্যাক করার চেষ্টা শুরু করেন। তাঁর প্রোফাইল দেখে খুঁজে বের করা হয় মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদের। সেই সঙ্গে যে কম্পিউটার থেকে এই ঘটনা ঘটছিল, তার আইপি অ্যাড্রেসও ট্র্যাক করা হয়। মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদের মধ্যে একজন বাড়ির ঠিকানা জানান পুলিসকে। গুগল ম্যাপের সূত্র ধরে রাত ১ টা ৫৫ নাগাদ ওই যুবকের বাড়িতে পৌঁছন গড়ফা থানার অফিসার শৌভিক দাস। দরজায় বেল দিতেই গেট খুলে দেন ওই যুবকের বাবা। অফিসার তাঁদের কাছ থেকে জেনে নেন, কোন ঘরে থাকেন অভিষেক। গলায় ফাঁস লাগানোর ঠিক আগের মুহূর্তে ওই যুবককে উদ্ধার করে তাঁকে বাঁচাতে সমর্থ হয় পুলিস।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, ওই যুকবের ইচ্ছা সঙ্গীতশিল্পী হওয়ার। সেই সঙ্গে তিনি মিউজিক কম্পোজও করেন। অনেকদিন ধরেই টলিউডে পা রাখার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কিছুতেই সুযোগ পাচ্ছিলেন না। এমনকী গানের জগতেও নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারছিলেন না। যে কারণে একটা হতাশা তাঁকে গ্রাস করতে শুরু করে। ক্রমেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বন্ধুদের বলেছিলেন, তাঁর চেয়ে অনেক কম প্রতিভাসম্পন্ন শিল্পীরা গানের জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল, কিন্তু তিনি সেভাবে নাম করতে পারলেন না। সেই হতাশা থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, ফেসবুকে লাইভ করে আত্মহত্যা করবেন। যাতে সকলে বিষয়টি দেখতে পান। সেই পরিকল্পনামতো শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে নিজের ঘরে চলে যান। বাবা-মা আলাদা ঘরে থাকতেন। এরপর ফেসবুকে নিজের আত্মহত্যা করতে যাওয়ার ঘটনা লাইভ করতে থাকেন।
পুলিসের তৎপরতায় বেঁচে যাওয়ায় তিনি যাতে এরপর এইসব স্মৃতি এবং হতাশা মুছে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন তার চেষ্টা চলছে।