বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
গত ৮জানুয়ারি বিশ্বজিৎবাবুর স্ত্রী টুম্পা সূত্রধরের প্রসব যন্ত্রণা ওঠার পর তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর সিজার হয়। একই সময়ে লেবার রুমে অন্য এক প্রসূতির সিজার হয়েছিল। দুই প্রসূতিকে বেডে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর টুম্পাদেবীর বেডে একটি পুত্র সন্তান নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সন্তান তাঁর বলে কর্তব্যরত নার্স জানান। কিছুক্ষণ পর নার্স একটি কন্যা সন্তান নিয়ে আসেন। সদ্যোজাত সেই কন্যাসন্তান টুম্পাদেবীর বলে নার্স দাবি করেন এবং তিনি পুত্রসন্তানকে নিয়ে চলে যান। নম্বর না মিলিয়ে সদ্যোজাত মায়ের বেডে দেওয়ার কারণে অদল বদল হয়ে গিয়েছিল বলে নার্স দাবি করেন।
টুম্পাদেবীর বেডে কন্যাসন্তান রেখে পুত্রসন্তান নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। তখন টুম্পাদেবীর কাছে তাঁর মা ছিলেন। বিষয়টি তিনি জামাইকে জানান। হাসপাতালের ভিতর তাঁরা কান্নাকাটি জুড়ে দেন। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, আমার স্ত্রী পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছে। সেইমতো পুত্র সন্তানকেই স্ত্রীর বেডে রাখা হয়েছিল। কিন্তু, আধ ঘণ্টা পর সদ্যোজাত এক কন্যা শিশুকে এনে নার্স জানান, ওই শিশুটি আমাদের। এটা কিছুতেই আমরা মেনে নিতে পারছি না। কোথাও একটা গোলমাল হয়েছে। আমি বর্ধমান থানায় এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছি। এনিয়ে তদন্ত হোক। প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্ট হোক। তার রিপোর্টের ভিত্তিতে ছেলে কিংবা মেয়ে যাই হোক, আমি মেনে নেব।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, মঙ্গলবার রাতে একসঙ্গে দু’জন প্রসূতির ডেলিভারি হয়। ডিস্ক নম্বর না মিলিয়ে সদ্যোজাতকে মায়ের কাছে দিয়েছিলেন কর্তব্যরত নার্স। এর ফলে একজনের শিশুকে অন্যের কাছে দেওয়া হয়েছিল। কতর্ব্যরত নার্স এই ভুল করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা ২৯নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার সুশান্ত প্রামাণিক বলেন, একজনের শিশু অন্যজনকে দেওয়ার ঘটনা চরম গাফিলিতি। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
বিশ্বজিৎবাবু বলেন, এটাই আমার প্রথম সন্তান। নার্সের ভুলে সদ্যোজাতকে নিয়ে আমি দ্বিধাগ্রস্ত। আমি পেশায় সামান্য কৃষক। আমি এর একটা ফয়সালা চাই। আশা করি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিস প্রশাসন সুবিচারের ব্যবস্থা কররে। আপাতত স্ত্রী হাসপাতালে আছে। সদ্যোজাত শিশু এবং স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল ছাড়ার আগে এনিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা চাইছি।