বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
রানাঘাট-১ ব্লকের সিডিপিও মদন কুমার দাস বলেন, সুলতাদেবী অন্যান্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাছে বর্তমানে উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর ভালো কাজের স্বীকৃতিতে আমরাও খুশি।
রানাঘাট থানার অন্তর্গত হবিবপুরের রাঘবপুরে ছেলেবেলা কেটেছে সুলতাদেবীর। ১৯৯৪ সালে ফুলিয়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পরে পায়রাডাঙা প্রীতিনগর ভূদেব স্মৃতি বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর হবিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের ভোকেশনাল কোর্স করেন। ১৯৯৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দোহারপাড়া শিশু আলয় কেন্দ্রে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। কর্মজীবনে প্রবেশের আট বছরের মাথায় ঘোড়ালিয়ার বাসিন্দা পঙ্কজ রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বর্তমানে সুলতাদেবী একদিকে যেমন সামলাচ্ছেন দোহারপাড়া শিশু আলয় কেন্দ্র। একই সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে একান্নবর্তী পরিবারও সামাল দিচ্ছেন। মাত্র ৪০০ টাকা বেতনে একপ্রকার আর্থিক সঙ্কটের কারণেই এই কাজে যোগ দিতে হয়েছিল সুলতাদেবীকে। তবে, নিজের একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের প্রতি দায়িত্ব পালনে কোনও ত্রুটি রাখেননি তিনি। পাশাপাশি নিজের শিশু আলয় কেন্দ্রের ৪৩টি শিশু, পাঁচ জন গর্ভবতী মা ও দু’জন প্রসূতি মায়ের দায়িত্ব সবই রয়েছে তাঁর উপরেই। যদিও এই কাজে সব সময় তিনি পাশে পেয়েছেন স্বামী পঙ্কজবাবুকে। তাই আজকের এই সম্মান তাঁর জীবনের সেরা কাজের স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। যদিও সুলতাদেবী তার এই সম্মানের অংশীদার হিসেবে সহকর্মী মায়া বিশ্বাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
সুলতাদেবী বলেন, ১২ বছর ধরে হাতে কলমে কাজ শিখিয়েছিলেন সুপারভাইজার মালা মিত্র ঘোষ। তাই আমাকে দেওয়া সম্মান শুধু আমার নয়, আমাদের সকলের। মূলত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসেবে আমাকে আমার কেন্দ্রের শিশু বিকাশ, প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, প্রতিষেধক ও জনসংযোগের বিষয়গুলি দেখতে হয়। আমি আমার কাজটাই ভালোবেসে করছি। তাই এই পুরস্কার পেয়ে খুবই খুশি।
যদিও মাকে সবসময় কাছে না পাওয়ায় প্রথমদিকে অভিমান হতো সুলতাদেবীর ১৪ বছরের মেয়ে মৌপ্রিয়ার। কিন্তু মায়ের উপর সমস্ত অভিমান ভুলে সে বলে, মায়ের জন্যই প্রথমবার বিমানে চড়ে দিল্লি সফর করতে পেরেছি। মায়ের পুরস্কারের জন্য নিজেরও আনন্দ হচ্ছে। সেরা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর সম্মান পাওয়ার পর সুলতাদেবীর স্বামী পঙ্কজবাবু বলেন, স্ত্রীর এই সম্মানে আমি গর্বিত। সমাজের একেবারে শূন্য পর্যায়ে যেভাবে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা কাজ করেন, তা খুব কাছ থেকে না দেখলে বোঝার উপায় নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পঙ্কজবাবুও শিশু আলয় কেন্দ্রের জন্য সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। কখন গ্যাস লাগবে, কোথায় কোন বেঞ্চ ভাঙা রয়েছে। সেগুলি ব্যক্তিগত উদ্যোগেই সারাই করান। এমন দিদিমণিকে পেয়ে খুশি ওই কেন্দ্রের শিশুরাও।