বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠবে শহরের গাবতলা মাঠে। এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়া নিয়ে প্রথম দিকে সিপিএম বিরোধিতায় নেমেছিল। পরবর্তীকালে বিরোধিতা থেকে সরে আসেন কমরেডরা। এদিন ভিড়ে ঠাসা প্রশাসনিক সভা থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলন্যাস করতে গিয়ে প্রথমেই কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাসের পরেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, মেয়েরা কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে। এবার ছেলেরা ভাবতেই পারে, আমরা কী পাব? মমতাবালা ঠাকুরকে চেনেন তো? ইনি মতুয়া মায়ের ছেলের বউ। আমাদের এমপি, সংসদ সদস্য। শুক্রবার বারাসত থেকে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করব। গাইঘাটায় হবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়। অনেক দিনের দাবি। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ক্যাম্পাস কৃষ্ণনগরকে দেব। তাহলে ছেলেরাও পেয়ে গেল, মেয়েরাও পেয়ে গেল। কোনও বৈষম্য থাকল না।
কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার দাবি দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। গভর্নমেন্ট কলেজেই হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হবে কিনা, তা এখনও জানা যায়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। গভর্নমেন্ট কলেজের প্রাক্তনীরা চাইছেন, এই কলেজেই ক্যাম্পাস গড়ে উঠুক। কারণ এই কলেজের পর্যাপ্ত জমি রয়েছে। সেই জমিতে গড়ে উঠতে পারে ক্যাম্পাস। তাছাড়া গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠেই কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। ফলে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় ও হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস একই জায়গায় থাকবে। জেলার পড়ুয়াদের সুবিধা হবে উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে।
কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে মেয়েদের কোনও খরচ বহন করতে হবে না। এদিন মুখ্যমন্ত্রী একগুচ্ছ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, কন্যাশ্রী আজ বিশ্বশ্রী। কন্যাশ্রী নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হল। এখানে কন্যাশ্রী মেয়েরা পড়বে। যেখানে পড়তে গেলে কারও টাকা লাগবে না। তার কারণ কন্যাশ্রী এখন সবাই। যারা সরকারি স্কুল কলেজে পড়াশোনা করে। কন্যাশ্রী পেতে হলে আগে ছিল, বছরে দেড় লক্ষ টাকার কম আয় হতে হবে। এখন সেটা নেই। এখন সেটা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সব কন্যা সন্তান, যারা সরকারি স্কুল কলেজে পড়ছে, সবাই কন্যাশ্রী। কলেজে পড়লে কন্যাশ্রী টু। ১৮বছর হলে ২৫হাজার টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাচ্ছে। আর কন্যাশ্রী থ্রি’তে বিশ্ববিদ্যালয়। কলা বিভাগে পড়লে দু’হাজার টাকা আর বিজ্ঞান বিভাগে পড়লে আড়াই হাজার টাকা। এই স্কলারশিপ আপনারা পাবেন। স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ফ্রি। আপনারাই আগামী দিনে কেউ ডাক্তার হবেন, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে, এদিন তাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
হরিণঘাটায় ফ্লিপকার্ট কোম্পানি আসছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভায় ফের ঘোষণা করলেন। তিনি বলেন, হরিণঘাটায় ফ্লিপকার্ট আসছে। ১০হাজার ছেলেমেয়ে ওই ফ্লিপকার্টে চাকরি পাবে প্রত্যক্ষভাবে। পরোক্ষভাবে আরও অনেকে কাজ পাবে। বহু বেকার ছেলে -মেয়ের কর্মসংস্থান হবে।
মায়াপুরে নতুন সিটি তৈরি হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নবদ্বীপ হেরিটেজ আগেই ঘোষিত হয়েছে। তার কাজও চলছে। এবার মায়াপুর। মায়াপুরে ৭২০একর জমিতে নতুন সিটি হবে। মায়াপুর থেকে আমায় অনুরোধ করা হয়েছিল। আমরা সেটা কনসিডার করছি।
এদিন একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারমধ্যে আছে কৃষ্ণনগরের আইটি হাব। ৩০কোটি টাকা ব্যয়ে এই আইটি হাব গড়ে উঠেছে। প্রায় এক হাজার ছেলেমেয়ের এই আইটি হাবে চাকরি হবে। তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। রক্তের প্রয়োজনে এবার থেকে তেহট্ট মহকুমাবাসীকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ছুটে আসতে হবে না। বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে ২০টি বেড বাড়ানো হল। আগে এই হাসপাতালে ৬০টি বেড ছিল। এবার বেডের সংখ্যা দাঁড়াল ৮০টি। তেহট্টের নাজিরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আগে শুধুমাত্র আউটডোর পরিষেবা মিলত। এবার থেকে সেখানে ইনডোর পরিষেবাও মিলবে। এদিকে কালীগঞ্জের পলাশীতে পর্যটকদের থাকার জন্য আর অসুবিধা থাকল না। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে ৫টি কটেজ ও ১টি ডরমেটরির উদ্বোধন হল। মায়াপুরে যুব আবাসেরও এদিন উদ্বোধন হয়। তীর্থযাত্রীরা মায়াপুরে এসে এবার সুলভে থাকতে পারবেন।