সংবাদদাতা, তুফানগঞ্জ: তুফানগঞ্জের এমএলএ মালতী রাভা রায় এবং আলিপুরদুয়ারের এমপি মনোজ টিগ্গা নিখোঁজ। গ্রামে এমন পোস্টার সাঁটা হয়েছে। আর এই পোস্টার ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের ভানুকুমারী-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ছিট বড় লাউকুঠিতে। সোমবার গ্রামবাসীরা পোস্টার সাঁটার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড হাতে গ্রামে বিক্ষোভেও দেখান।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, নদীবেষ্টিত ছিট বড় লাউকুঠিতে হাজার দু’য়েক পরিবারের বাস। গঙ্গাধর নদীর ভাঙনের জেরে কয়েক বছর ধরেই জেরবার তাঁরা। এবারের বর্ষায় বেশকিছু বসতবাড়ি, চাষের জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। গত কয়েক বছরে গ্রামের স্কুল, কিছু বাড়িঘর, ধান খেত নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এবছর বর্ষায় নদী প্রায় এক কিমি অংশজুড়ে ভেঙেছে। পাথরের বাঁধ না দিলে আরও দশটি বাড়ি এরমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোটে জয়ী হওয়ার পর স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ আর আসেননি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁরা কোনও কাজই করছেন না। তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এমন পোস্টার সাঁটা হয়েছে। যদিও তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতী রাভা রায় বলেন, পুরোপুরি ভিত্তিহীন অভিযোগ। এলাকার বাঁধের দাবি নিয়ে আমি নিজে একাধিকবার কোচবিহার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। বেশকিছু অংশের কাজও হয়েছে। বাকি অংশের কাজ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা কাটমানি নিয়ে ভাগাভাগি করায় হয়নি। আমরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি। এমপি’কে টেলিফোন করা হলে রিসিভ করেননি। মেসেজেরও উত্তর আসেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা সাহেব আলি শেখ বলেন, ভোট আসে ভোট যায়। রাজনৈতিক নেতারা শুধু প্রতিশ্রুতি দেন। কাজের কাজ কিছুই হয় না। ভোটে জেতার পর আমরা এখনও বিধায়ক, সাংসদকে এলাকায় দেখিনি। এর আগে যিনি সাংসদ ছিলেন তিনিও আমাদের সমস্যা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি। তাই ওঁদের সন্ধান পেতে আমরা নিখোঁজ পোস্টার দিয়েছি।
আরএক বাসিন্দা ফণীন্দ্র সূত্রধর বলেন, এবছর বর্ষায় ৪০ বিঘা চাষের জমি, কয়েকটি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। নদী যেভাবে বসতির দিকে এগিয়ে আসছে তাতে পুরো গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সাংসদ, বিধায়ককে ভোটের সময় দেখেছি। ভোটের পর তাঁদের গ্রামে দেখা পাওয়া যায়নি। আমাদের বাঁধের দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।
আর এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে শাসকদল তৃণমূল। দলের তুফানগঞ্জ-২ ব্লক সভাপতি চৈতি বর্মন বলেন, ভোটে জেতার আগে বিজেপি সাধারণ মানুষকে নানান প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজের কাজ কিছুই করছে না। সাংসদ, বিধায়ককে কোনওরকমের উন্নয়নমূলক কাজে পাওয়া যায় না। তাই মানুষই ওঁদের নিখোঁজের পোস্টার দিয়েছে।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি উৎপল দাস বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই তৃণমূল গ্রামের সাধারণ মানুষকে উস্কে দিয়ে এসব করাচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূল শাসিত তুফানগঞ্জ-২ ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শীতলচন্দ্র দাস বলেন, ইতিমধ্যেই ৮০০ মিটার বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি অংশের কাজের ব্যাপারে আমাদের আলোচনা চলছে। • নিজস্ব চিত্র।