ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
শোভাবাজার রাজবাড়ির নাটমন্দিরে অভিনীত নাটকটি দেখতে দেখতে বোঝা যায় নাট্যকার কোথাও পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করেননি। এক নতুনতর ভাবনার দিশা খুঁজে পাওয়া যায় ‘টেক হক সলিউশান’-এর এই প্রযোজনাটিতে। নাট্য বুননের মধ্যে রয়েছে এক নতুন গবেষণা। প্রস্তাবনা দৃশ্যে বঙ্কিম স্বয়ং এসে জানান কীভাবে তিনি এই প্লটটি পেলেন। বঙ্কিমি বৃত্তান্ত, সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ, মন্বন্তর ইত্যাদি প্রেক্ষাপটকে ছুঁয়ে এ নাটক যখন অন্তিম দৃশ্যে পৌঁছয়, তখন অপেক্ষা করে এক বিরাট চমক। উপন্যাসে বা পূর্ববর্তী নাট্যকারের থেকে তা ভিন্ন। সেটি অবশ্য দেখতে দেখতে খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হয়।
এ নাটক পরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়েছে ঐতিহ্যমণ্ডিত যাত্রা এবং আধুনিক থিয়েটারের মেলবন্ধনে। অভিনয়ের আঙ্গিকে এক নতুন পথের সন্ধান মেলে। দেবীর চরিত্রে কাকলি চৌধুরী প্রমাণ করলেন যাত্রা-মঞ্চের মতোই থিয়েটারের মঞ্চকেও তিনি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন। অনল চক্রবর্তীর ভবানী পাঠক চরিত্রটি গানে, অভিনয়ে ঐশ্বর্যময়। এঁদের পাশে রঙ্গরাজ চরিত্রে উজ্জ্বল রাজু বড়ুয়া। হরবল্লভ এবং ব্রজেশ্বরের যুগলবন্দিতে সমান স্বচ্ছন্দ সৌমিত্র মিত্র ও সম্রাট বিশ্বাস। সাগর চরিত্রে ন্যান্সি এই নাটকের সম্পদ। তবে চমকে দিয়েছেন জমিদার পরাণ চৌধুরী এবং ব্রিটিশ অফিসার ব্রেনান, এই দুটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী চরিত্রে বৈচিত্র্যময় অভিনয় করেছেন বিশ্বজিৎ সরকার। সাগরের বাবার চরিত্রে দেবাশিস কুমার সপ্রতিভ।
প্রান্তিক চৌধুরীর পরিচালনার মধ্যে একটা টানটান বাঁধন আছে, যেটা নাটকের টেনশনটাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে। সম্রাট মুখোপাধ্যায়ের লেখা ও সুর করা দশটি গান যেন আঠারো শতকের বাঙালির গানের ধারাকে নতুন করে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।