কর্মে ও ব্যবসায়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। কৃষিপন্ন বিক্রেতা ও ডাক্তারদের অর্থকড়ি প্রাপ্তি হবে সর্বাধিক। বন্ধুকে টাকা ... বিশদ
প্রথমেই বলুন তো আপনি এখন কলকাতায় নাকি মুম্বইয়ে?
(হাসতে হাসতে) ছবির প্রচারের জন্য কলকাতা-মুম্বই ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছি। এখন কলকাতায়। হয়তো কাল-পরশু আবার মুম্বই যাব।
‘সনক’ ছবিটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। আপনার অভিনয় নিয়ে কীরকম প্রতিক্রিয়া পেলেন?
অধিকাংশ মানুষের থেকেই ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। থ্রিয়েট্রিক্যাল রিলিজ আর ওটিটির মধ্যে বিস্তর ফারাক। ওটিটির ক্ষেত্রে সাত-আট দিন পর ধীরে ধীরে বোঝা যায় যে, মানুষ ছবিটা নিয়ে কী ভাবছেন। আপনি মিশ্র প্রতিক্রিয়া বললেন। কারণ বুঝতে হবে, ছবিটা নির্দিষ্ট একটা শ্রেণির দর্শককে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। আর ওটিটির জন্য আমাদের দর্শকের পরিধিও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
বলিউড থেকে নিশ্চয়ই প্রচুর অফার পাচ্ছেন?
সত্যি বলতে, আমি যখন ছবিটার শ্যুটিং করতে গত জানুয়ারিতে মুম্বই গিয়েছিলাম, তখন থেকেই অনেকে যোগাযোগ করতে শুরু করেছিলেন। তাঁরা সবাই আমার বাংলা ছবি দেখেই যোগাযোগ করেছিলেন। অনেকগুলো কনসেপ্ট নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু এখনও সেইভাবে কোনও চিত্রনাট্য পছন্দ হয়নি।
আর কলকাতা?
‘কিশমিশ’-এর শ্যুটিং শেষ। বললে বিশ্বাস করবেন কি না জানি না, বাংলায় গোটা ১২ চিত্রনাট্য পড়ে ফেললাম। কিন্তু মনের মতো এখনও কিছু পাইনি। শুরু থেকেই আমি কাজের গুণগত মানে বিশ্বাসী। দশটা ছবি করলাম, অথচ সেইভাবে দর্শকের মনে দাগ কাটল না, তার থেকে সেই ছবিগুলো না করাই ভালো।
তার মানে কি আপনি ধীরে ধীরে বলিউডেই বেশি মনোনিবেশ করবেন?
কাজ আমাকে যেখানে নিয়ে যাবে, আমি সেখানেই হাজির হব। শুধু বাংলা বা হিন্দি কেন, দক্ষিণ বা রাশিয়ান ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতেও আমার আপত্তি নেই। তার থেকেও বড় কথা, মুম্বই-কলকাতা একটা দু’ঘণ্টার ফ্লাইট মাত্র। ইন্টারনেট রয়েছে। আর কী চাই। ‘সনক’-এর প্রি-প্রোডাকশন পুরোটাই তো আমি বাড়িতে বসে ভিডিও কলে সেরেছিলাম। তারপর সোজা মুম্বই গিয়ে ফ্লোরে যাই। ভালো হিন্দি ছবি তো করবই। তা বলে বাংলায় আমি নিজের জমি ছাড়ব না। অনেক পরিশ্রম করে এই জায়গাটা তৈরি করেছি।
ওটিটি রিলিজে প্রিমিয়ারের মজা নেই। প্রথম দিন কার সঙ্গে ‘সনক’ দেখেছিলেন?
মায়ের সঙ্গে দেখলাম। আমার দাদা দিল্লিতে থাকে। ও বন্ধুদের নিয়ে হইহই করে রাত বারোটায় দেখেছে। আমার দিদি আমেরিকায় দেখেছে। দাদু, দিদা, মাসিরা দেখেছে। আর সিনেমাটা শেষ হতেই সবাই ফোন আর ভিডিও কল করে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
আর দেব! দেব কী বললেন?
ছবিটা মুক্তি পাওয়ার পরেই তো দেখলাম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছে, ‘আমি তোমার অ্যাচিভমেন্ট নিয়ে গর্বিত...’
ব্যক্তিগতভাবে কিছু বললেন না?
ও এটাই বলল যে, ‘আমি তোমার মধ্যে যে সম্ভাবনা দেখেছিলাম সেটা সারা দেশের মানুষ আজ দেখতে পাচ্ছে।’ একটা বাঙালি মেয়ে সর্বভারতীয় মঞ্চে পৌঁছল সেই বিষয়টাতেও ও খুব খুশি। আর দেবের সংস্থা তো আমাকে ইন্ডাস্ট্রিতে লঞ্চ করেছিল। অস্বীকার করে তো লাভ নেই, ছ’মাস ধরে দেব আমাকে জোর না করলে হয়তো কোনওদিন অভিনয়ই করতাম না। কারণ আমি বিশ্বাসই করতাম না যে, কোনওদিন নায়িকা হব। দেব চায়, আমি আরও বেশি বলিউডের ছবি করি। খুব উৎসাহ জোগায়।
আপনি ‘গোলন্দাজ’ দেখলেন?
অবশ্যই। প্রথম তিনবার মুম্বই থেকে কলকাতায় এসেও সময় করে উঠতে পারিনি। কিন্তু চতুর্থবার একদম মায়ের সঙ্গে ছবিটা দেখলাম।
কেমন লাগল দেবের অভিনয়?
সত্যি বলতে দেব ছাড়া আর কেউ বড়পর্দায় নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী হয়ে উঠতে পারত না। যেন এক নতুন দেবকে দেখলাম। একজন সুপারস্টারের স্ক্রিন প্রেজেন্স কাকে বলে, সেটা যেন নতুন করে ওকে দেখে বুঝতে পারলাম।
দেড় বছরে ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খুব ভালো নয়। সেখানে দেবই হলে দর্শক ফেরালেন।
আগেও বলেছি বাংলা বাজারে এই বড় ক্যানভাসটার দরকার ছিল। কথায় বলে সম্মান করলে সম্মান ফেরত পাওয়া যায়। আজকে বাংলার মানুষ কিন্তু বাংলা ছবিকে সেই সম্মান ফিরিয়ে দিলেন। আমি খুশি।
টলিউড থেকে বাকিরা কী বললেন?
যাঁরা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁরা প্রত্যেকেই প্রশংসা করেছেন। সেদিন বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ) ‘সনক’-এর একটা গান দেখে আমাকে মেসেজ করে ভরসা দিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, যাঁরা আমার ভালো চান, তাঁদের জন্যই জীবনে ভালো মুহূর্তগুলো তৈরি হচ্ছে।
কিন্তু এটাও তো শোনা যাচ্ছে যে, বলিউডে ব্রেকের পর টলিউডে আপনি নাকি অনেকের হিংসার কারণ হয়ে উঠেছেন?
আমি নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না। জানি এটা নিয়ে ভাবলেই চিন্তাধারাটা অন্যরকম হয়ে যাবে। মডেলিংয়ের বন্ধুরা বা ইন্ডাস্ট্রির কলিগ—প্রত্যেকের সঙ্গে দেখা হলেই নিজেকে পজিটিভ রাখার চেষ্টা করি। কে হিংসে করছে বা কে শত্রু ভাবছে সেগুলো চিন্তা করলে একটা মেন্টাল ব্লক তৈরি হবে। বরং আমি বলব, আমার কাজ দেখে তাঁদের মধ্যে প্রচেষ্টা বাড়লে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিই আরও সমৃদ্ধ হবে।
দেওয়ালির কী প্ল্যান?
হয়তো দিল্লিতে থাকব। বুধবার দাদার মেয়ের জন্মদিন ছিল। ও আমার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। একদম ভাইফোঁটা কাটিয়ে কলকাতায় ফিরব।