প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
আমরা জানি যে, উটপাখির নামের সঙ্গে পাখি শব্দটা জুড়ে থাকলেও উটপাখি উড়তে পারে না। উটপাখি সাধারণত সাত থেকে নয় ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। অবিশ্বাস্যভাবে একটি শক্তিশালী উটপাখি ঘণ্টায় ৭০ কিমি বেগে দৌড়তে পারে। এমনকী, একটি উটপাখি ঘণ্টায় ৫০ কিমি বা তার বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। এদের লম্বা পা একবারে ১০ থেকে ১৬ ফুট অতিক্রম করতে পারে। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে যে, কত জোরে এরা দৌড়তে পারে! দক্ষিণ আফ্রিকা ও আমেরিকায় উটপাখির দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। উটপাখিগুলোর পিঠে গদি এবং মুখে লাগাম লাগানো হয়। মুখের লাগাম টেনে ধরলেই উটপাখিগুলো গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। ১৮৯২ সাল থেকে এই উটপাখির দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
ইউরোপে ও ব্রিটেনে একটা অদ্ভুত প্রতিযোগিতা শুরু হয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে। পাগলা কুকুরের দৌড়। শুরু করেছিলেন রানি এলিজাবেথ-১। এই কারণেই এই প্রতিযোগিতার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কুইন্স
অব স্পোর্টস’।
১৯১২ সালে প্যাট্রিক স্মিথ এই প্রতিযোগিতাটিকে আরও বড় পরিসরে শুরু করেন। প্রতিযোগিতা চলাকালীন কুকুরগুলি একে অপরকে হিংস্রভাবে আক্রমণ করে। তাই ইন্টারন্যাশনাল অ্যানিমাল প্রোটেকশন সংস্থা এই প্রতিযোগিতাটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। নিছক মজার জন্য শুরু হলেও এখন ইউরোপ-আমেরিকার জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা এই কুকুরদের দৌড় প্রতিযোগিতা। একটি বিশেষ জাতের কুকুরই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারে। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়োগেতে ন্যাশনাল ডাচস্যান্ড রেসিংয়ের আয়োজন করা হয়।
ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরা শামুক দৌড় প্রতিযোগিতার কথা কখনও শুনেছ কি? তাও হয়। প্রতি বছর জুলাই মাসে ইংল্যান্ডের নরফোকের কনহাম স্টেডিয়ামে বিশ্ব শামুক রেস অনুষ্ঠিত হয়। এটি এখানে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে হয়ে আসছে। স্থানীয় ইউরোপিয়ানরা হেলিক্স অ্যাস্পার্সার বাগানটি এই প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের কিছু শর্ত ও নিয়ম আছে। শামুকের প্রশিক্ষক ‘রেডি, স্টেডি, গো’ বললে তবেই শামুকটিকে দৌড় শুরু করতে হবে। যে শামুকটি কম সময়ের মধ্যে পৌঁছবে সেই বিজয়ী হবে। ১৯৯৫ সালে একটি আর্চি শামুক ২ মিনিটে ১৩ ইঞ্চি দূরত্ব অতিক্রম করে রেকর্ড স্থাপন করেছিল।
শুধু শামুক নয়, কচ্ছপদেরও দৌড় প্রতিযোগিতা হয়। তোমরা পড়ার বইয়ে সবাই তো কচ্ছপ ও খরগোশের দৌড়ের কথা পড়েছ। তবে এখানে শুধু কচ্ছপদেরই দৌড় প্রতিযোগিতা হয়। নিশ্চয়ই নামটা জানতে ইচ্ছে করছে? জায়গাটার নাম হল আমেরিকার শিকাগো শহর। ১৯০২ সালে প্রথমে এই প্রতিযোগিতাটি শুরু হয়েছিল। প্রথমবার একটি বাগানে সাতটি কচ্ছপ নিয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতায় জিতলে সেই কচ্ছপটিকে ‘দ্য টারটেল রেসিং ক্যাপিটাল অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ পুরস্কারও দেওয়া হয়। আজকাল তো শুধু আমেরিকাতেই নয়, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ অন্যান্য দেশে এই প্রতিযোগিতাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন একটি অদ্ভুত প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতাটি হল ছাগল দৌড় প্রতিযোগিতা। টোবাগো দ্বীপে প্রতি ‘স্টার মনডে’-তে স্থানীয় ধনী ব্যক্তিরা ঘোড়দৌড়ের আয়োজন করে। একই সময়ে স্থানীয় মধ্যবিত্তরা ছাগল দৌড়ের আয়োজন করে। বাক্কো গ্রামে সামুয়েল কালান্দার এই প্রতিযোগিতাটির উদ্ভাবক। এখানকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই খেলার দিনটিকে ‘স্টার টুয়েসডে’ বলে সম্বোধন করে থাকেন। এই দিনটি দ্বীপবাসীদের জন্য একটি অলিখিত ছুটির দিন। এই অনুষ্ঠানে হাজারেরও বেশি দর্শকের সমাগম হয়। এই প্রতিযোগিতাটি গ্রামের রাস্তায় খেলা হয়। এই প্রতিযোগিতার জন্য দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে ছাগলের মালিকেরা ছাগলগুলোকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
উটদের রেসের কথা নিশ্চয়ই সকলের জানা। এটি শুধু আরব দেশেই নয়, মিশর, অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও পশ্চিম এশিয়ার বেশ কিছু দেশের খুবই জনপ্রিয় খেলা এটি। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া উটগুলো ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার বেগে দৌড়তে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে মহাধুমধামের সঙ্গে ভেড়ার দৌড়ের আয়োজন করা হয়। এক সপ্তাহ ধরে এই প্রতিযোগিতা চলে। দীর্ঘ ২২ বছরের ওপর ধরে চলে আসছে এই প্রতিযোগিতা। ব্রিটেনের টেলফোর্ডেও এই প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। সেখানে ভেড়ার পিঠে মানুষ থাকে না, পুতুল বেঁধে দেওয়া হয়। ভেড়াগুলো উঁচু-নিচু পথে, বেড়া ডিঙিয়ে শেষ মাথায় রাখা খাবারের দিকে ছুটে যায়। আর সেখানেই থাকে ফিনিশিং লাইন। যে ভেড়াটি আগে পৌঁছতে পারে, সেই পেয়ে যায় প্রথম পুরস্কার।