Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

হেমন্তের দুর্গা 
সুখেন বিশ্বাস

মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের স্বপ্নে পাওয়া জগদ্ধাত্রী। এই পুজো এখন আর কৃষ্ণনগর বা চন্দননগরে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে গিয়েছে বাংলার সর্বত্র। হেমন্তকালের শুক্লা কার্তিকের নবমীতিথিতে তাই বাংলায় নতুন করে দেখা যায় শরতের রোদ্দুর। আকাশবাণীর প্রভাতী অনুষ্ঠান বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জীর’ নেই... তবু প্রবাসীরা ঘরে ফেরে। দুর্গাপুজোর মতোই নতুন পোশাকে মানুষ বেরিয়ে পড়ে ঠাকুর দেখতে। রাস্তায় বাড়ে ট্রাফিকের ব্যস্ততা। পাড়ায় পাড়ায় পুজো, প্যান্ডেল, প্রতিমা, আলোর রোশনাইয়ের পাশাপাশি মনটা ভরে যায় নস্টালজিয়ায়। কৃষ্ণনগরে একদিন হলেও চন্দননগরসহ অন্যান্য জায়গায় দুর্গাপুজোর মতোই জগদ্ধাত্রীর আরাধনা হয় চার দিন ধরে।
ভারতীয় পুরাণে আছে, মহিষাসুর বধের পর দেবতাদের উল্লাসের কথা। দেবতাদের ধারণা হয়েছিল, ব্রহ্মার বর ও তাঁদের সম্মিলিত শক্তিতে ভর করেই দেবীর পক্ষে মহিষাসুর বধ সম্ভব হয়েছিল। তাই দেবতাদের শক্তি পরীক্ষার জন্য দেবী স্বয়ং অলক্ষে থেকে একটি তৃণখণ্ড নিক্ষেপ করেছিলেন তাঁদের সামনে। দেবতারা সেই তৃণখণ্ডের কিছুই করতে না পারলে সালঙ্কারা চতুর্ভুজা মূর্তির বেশে আবির্ভূত হয়েছিলেন এক পরমাসুন্দরী দেবী। তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং জগদ্ধাত্রী। জানা গিয়েছে, দেবী দুর্গার রূপভেদে কার্তিক মাসের শুক্লা নবমীতিথিতে জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করে বৃত্তাসুরকে বধ করেছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র। এটিই ছিল দেবতাদের পক্ষ থেকে দেবী জগদ্ধাত্রীর প্রথম আরাধনা।
জগদ্ধাত্রীকে বলা হয় জগতের ধারণকর্ত্রী। ব্যাপক অর্থে দুর্গা, কালীসহ সকল শাক্ত দেবীই জগদ্ধাত্রী রূপে পরিচিত। উপনিষদে জগদ্ধাত্রীকে বলা হয়েছে উমা হৈমবতী। দেবী দুর্গার বিকল্প রূপ এই জগদ্ধাত্রী। মার্কণ্ডেয় পুরাণে বলা হয়েছে, দুর্গা ও জগদ্ধাত্রী অভিন্ন। তাই তিনি পূজিত হন জগদ্ধাত্রী দুর্গায় নমঃ মন্ত্রে। শ্রীশ্রীচণ্ডীতে বলা হয়েছে, যুদ্ধকালে মহিষাসুর বিভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। একবার তিনি হস্তিরূপ ধারণ করে দেবীকে বিভ্রান্ত করেছিলেন। সেই হস্তি দেবীকে বধের চেষ্টা করলে দেবী দুর্গা স্বয়ং চতুর্ভুজার রূপ ধারণ করেন। এবং চক্র দিয়ে তিনি হস্তির মুণ্ডচ্ছেদ করেন। তাই দেবীমূর্তিতে দেখা যায়, দেবীর বাহন সিংহ এক মৃত হস্তির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সংস্কৃতে হস্তির অপর নাম করী। সেই অনুসারে অসুরটির নাম করীন্দ্রাসুর। করীন্দ্রাসুরকে দেবী বধ করেছিলেন বলে তিনি ‘করীন্দ্রাসুরনিসূদিনী’ নামেও পরিচিত। জগদ্ধাত্রী করীন্দ্রাসুরকে বধ করেছিলেন বলেই হয়তো ঠাকুর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘মন করীকে যে বশ করতে পারে তারই হৃদয়ে জগদ্ধাত্রী উদয় হন।’
পুরাণের জগদ্ধাত্রী সিংহের স্কন্ধে বসে রয়েছেন। সালঙ্করা দেবীর গলায় ঝুলছে নাগযজ্ঞোপবীত। তাঁর চারটি হাতে রয়েছে শঙ্খ, চক্র, ধনু ও বাণ। দেবী সত্ত্বগুণের প্রতীক, তাই প্রভাতের সূর্যের মতো তাঁর গাত্রবর্ণ কমলা রঙের হলেও দুর্গার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র তাঁকে রাঙিয়ে দিয়েছিলেন তপ্তকাঞ্চনে। অর্থাৎ কাঁচা সোনার রঙে। জগদ্ধাত্রী স্তোত্রে আছে, “জয়দে জগদানন্দে জগদেক প্রপূজিতে/ সর্ব্বগতে দুর্গে জগদ্ধাত্রি নমোহস্তুতে।”
ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল, কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুল, বারোদোল, অগ্রদ্বীপের মেলা, শিবনিবাস, সাধক রামপ্রসাদ, গোপাল ভাঁড়, নবদ্বীপ-শান্তিপুরের শাক্ত-রাস উৎসব—কত কিছুর সঙ্গেই না জড়িয়ে আছেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র। চৈতন্য সমসাময়িক স্মার্তপণ্ডিত রঘুনন্দন তাঁর ‘দুর্গোৎসতত্তম’ গ্রন্থে বলেছিলেন যে, শুক্লা নবমীতিথিতে সকালে সাত্ত্বিকী, দুপুরে রাজসিকী ও বিকেলে তামসিকী—এই ত্রিকালীন পুজোই শ্রীশ্রীজগদ্ধাত্রী পুজো। নিরবচ্ছিন্নভাবে একই আসনে বসে দফায় দফায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত এই পুজো করে যেতে হয়। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রও একদিনেই (শুক্লা নবমীতিথিতে) সাত্ত্বিকী, রাজসিকী ও তামসিকী নিষ্পাদ্য দুর্গা পুজো করে এই বাংলার হেমন্তে শারদ উৎসবের সূচনা করেছিলেন। জানা যায়, মা কালীর নিরাকার মূর্তিকে সাকার করেছিলেন কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ। তারপর তিনি অবিভক্ত বাংলায় কালীপুজোর প্রবর্তন করেন। তবে জগদ্ধাত্রী পুজোর পাশাপাশি কালীপুজো অর্থাৎ বাংলাদেশে শক্তি পুজোর দরজা সকলের জন্যে প্রথম খুলে দিয়েছিলেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র।
জনশ্রুতি আছে, আনুমানিক ১৭৫৪ সালে বাংলার নবাব ছিলেন আলীবর্দী খাঁ। সেই সময়ে ১২ লক্ষ টাকা রাজকর দিতে না পারার অভিযোগে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে মির্জা মহম্মদের (সিরাজউদ্দৌলা) তৎপরতায় বন্দি করেছিলেন নবাব আলীবর্দী। তাঁর সেনারা নাকি রাতারাতি এক পোশাকে মহারাজকে পেটাতে পেটাতে ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, সেইসময় অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গের হিন্দুধর্মের মাথা ছিলেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র। ফলে হিন্দুধর্মের দিকপালরা ১২ লক্ষ টাকা রাজকরের হিসেব চাইলে তা দিতে অস্বীকার করেছিলেন নবাব আলীবর্দী। অবশেষে নবাবের কারাগার থেকে অনেক টালবাহানার পর মুক্তি পেয়েছিলেন মহারাজ। নদীপথে কৃষ্ণনগরে ফেরার সময় রুকুনপুরের ঘাটে রাজা শুনেছিলেন বিসর্জনের বাদ্যি। জানতে পেরেছিলেন, সেদিন ছিল দুর্গাপুজোর বিজয়া। মায়ের দর্শন এবার হল না, মায়ের পুজো এবার আর দেওয়া হল না—এইরকম ভাবতে ভাবতে আক্ষেপে, অবসাদে, ক্লান্তিতে নৌকোর মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেইসময় এক রক্তবর্ণা চতুর্ভুজা কুমারী দেবী (‘রক্তবস্ত্রাপরিধানাং বালার্কসদৃশীতনুম্‌’) তাঁকে আদেশ দিয়েছিলেন, আগামী কার্তিকের শুক্লা নবমীতিথিতে তাঁর পুজো করতে। কথিত আছে, অমাবস্যার রাতে এই দেবী মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে পূর্ণিমার চাঁদ দেখিয়েছিলেন।
কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন সম্পর্কে অন্য একটি মতও প্রচলিত আছে। জনশ্রুতি, ইংরেজদের বন্ধু সন্দেহে ১৭৬২ সালে মিরকাসিম মুঙ্গেরের কারাগারে বন্দি করেছিলেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র ও তাঁর পুত্র শিবচন্দ্রকে। সেই সময় কৃষ্ণচন্দ্রকে প্রাণদণ্ডের আদেশ দিতেও দ্বিধা করেননি মিরকাসিম। কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর দূত মারফত এই সংবাদ প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কালীশঙ্কর মৈত্রের কাছে পৌঁছে দেন। সঙ্গে নিজের প্রাণরক্ষার আবেদনও করেছিলেন তান্ত্রিকের কাছে। কারাগারেই কৃষ্ণচন্দ্র এক কুমারী দেবীর স্বপ্নাদেশ পান। অতঃপর সেখান থেকে মুক্তিলাভের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন মহারাজ। তবে এই জনশ্রুতিটি জনমানসে আগের মতটির মতো গ্রহণযোগ্য হয়নি।
কথিত আছে, রাজা-মহারাজাদের কাছে পৌরাণিক দেবদেবীরাই ছিলেন আরাধ্য। তাঁদের স্বপ্নাদেশে রাজারা নতুন পুজোআচ্চা শুরু করার অনুমতি পেতেন। কিন্তু সবসময়ই রাজগুরুর অনুমতি নিতে হত। কৃষ্ণচন্দ্র তখনকার নিয়ম অনুযায়ী তাঁর রাজগুরু বৈষ্ণবাচার্য, কারও কারও মতে বিখ্যাত তান্ত্রিক কালীশঙ্কর মৈত্রের কাছে পুজো শুরু করার অনুমতি নিয়েছিলেন। তারপর স্বপ্নাদেশ মতো দেবীর চারপোয়া (আনুমানিক সাড়ে পাঁচ ফুট) কুমারী (আনুমানিক ১৩-১৪ বছর) মূর্তি বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, পুজোর আগে পুত্র শিবচন্দ্র এবং গোপাল ভাঁড়কে সমস্ত দায়িত্ব দিয়ে তিনি সরাসরি চলে গিয়েছিলেন চন্দননগরে। সেখান থেকে পুজোর আগের দিন মধ্যরাত্রে ফিরে পরের দিন উপবাস থেকে শ্রীশ্রীজগদ্ধাত্রীর অঞ্জলি দিয়েছিলেন মহারাজ।
কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা যে ১৭৫২ সালের পরে হয়েছিল, সে ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই। আগে হলে অবশ্যই রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের লেখা ‘অন্নদামঙ্গল’ (১৭৫২) কাব্যে এই পুজোর বিবরণ পাওয়া যেত। অনুমান করা হয়, ১৭৫২ সালের পর থেকে ১৭৫৬-এর মধ্যেই কৃষ্ণনগরে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন মহারাজ।
মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের ইচ্ছেয় জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হলেও চন্দননগরে একদিনের পরিবর্তে সর্বজনীন পুজোমণ্ডপে চারদিন পুজো হয়। সপ্তমীতে সাত্ত্বিকী, অষ্টমীতে রাজসিকী ও নবমীতে তামসিকী পুজো। দশমীতে বির্সজন হয় দেবী দুর্গার মতোই। চন্দননগরের অধ্যাপক শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘শাক্ততন্ত্রাচার মতে আমাদের বাড়ির পুজো এবারে ১৫৯ বছরে পড়ল। চারদিন নয়, আমাদের পুজো ত্রৈকালীন মতে একদিনেই সম্পন্ন হয়।’ তবে প্রতিবার বিসর্জনের পরই নাকি গঙ্গার জলে শুশুক বা সাপ উঠতে দেখা যায়। কৃষ্ণনগরে প্রতিমা বিসর্জনের আগে ঘট বিসর্জনের রীতি বহুকাল ধরে চলে আসছে। আগে রাজবাড়ির পুজোর ঘট বিসর্জন হয়, তারপর অন্যান্য পুজোর। তবে বিসর্জনের দিন সব পুজোর ঠাকুরকেই কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি প্রদক্ষিণ করিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে জলঙ্গির ঘাটে বিসর্জন দিতে হয়। কৃষ্ণনগরের ক্ষেত্রে রাজবাড়ির পুজো নয়, চাষাপাড়ার পুজো ‘বুড়িমা’-কে জাগ্রত বলে মানেন এখানকার মানুষ। এখানে মানত বা পুজো করলে ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবেই হবে—এইরকমই বিশ্বাস মানুষের। চন্দননগরের মানুষ ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলার জগদ্ধাত্রী মাকে খুব জাগ্রত বলে মনে করেন। তাঁদের বিশ্বাস, এখানে পুজো দিলে বা মানত করলে ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ হয়।
চন্দননগরে আলোকসজ্জা, দেবীমূর্তি ও শোভাযাত্রা বিশ্ববিখ্যাত। এখানকার পুজোর জাঁকজমক কৃষ্ণনগরের থেকে অনেক বেশি। অনেকের মতে বাংলাদেশের কৃষ্ণনগরে নয়, চন্দননগরেই জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস বলছে অন্য কথা। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী... চন্দননগরের দেওয়ান। চালের ব্যবসা এবং ফরাসিদের সঙ্গে যোগসাজসে তিনি বিত্তশালী হয়েছিলেন। তিনি প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো দেখেছিলেন মহারাজের নাটমন্দিরে। অতঃপর মুগ্ধ হয়ে লক্ষ্মীগঞ্জের চাউলপট্টির নিচুপাটিতে তিনি জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেছিলেন। সেই থেকে এই পুজো আদি পুজো নামে বিখ্যাত। এখনও ইন্দ্রনারায়ণের উত্তরসূরিদের নামে আদি মায়ের সংকল্প করা হয়। ‘ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী নন, চন্দননগরের ফেরিঘাটে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেছিলেন দাতারাম সুর। সেই পুজোটাই পরবর্তীকালে সরে যায় ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলায়।’ এমনই দাবি করে বসলেন চন্দননগরের ইতিহাসবিদ অধ্যাপক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, চন্দননগরের ‘আদি মা’-র পুজোর সূচনা করেছিলেন কৃষ্ণনগর থেকে আসা চাউলপট্টির ব্যবসায়ীরা। সালটা ছিল সম্ভবত ১৭৬৩ বা ১৭৬৪।
একসময় কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় পশু বলি দেওয়ার প্রথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এই প্রথা বন্ধ। কিন্তু চন্দননগরের বিভিন্ন পুজোয় পশু বলি দেওয়ার রীতি আজও বিদ্যমান। প্রতিবার এখানকার পুজোয় আনুমানিক তিন হাজারেরও বেশি পাঁঠা বলি হয়ে থাকে। কৃষ্ণনগরের মালোপাড়ায় জলেশ্বরী মায়ের পুজোতে নবমী পুজোর রাতে আগুন খেলার রীতি আজও চলে আসছে। কিন্তু রানি মা কর্তৃক নির্বাচিত সেরা জগদ্ধাত্রী প্রতিমাকে পুরস্কার দেওয়ার রীতি রাজবাড়ি থেকে উঠে গেছে।
কৃষ্ণচন্দ্র যেমন দুর্গাপুজোর বিকল্প হিসেবে কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেছিলেন, ঠিক সেইমতো চন্দননগরেও ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর হাত ধরে দুর্গাপুজোর বিকল্প হয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজো। পাশাপাশি জানা যায়, মহারাজ নরেন্দ্রনারায়ণ কোচবিহার রাজবাড়িতে আনুমানিক ১৮৫৩ সালে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেছিলেন। সেইসময় কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পৃষ্ঠপোষকতায় ওখানে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়েছিল। সেই ধারা আজও অব্যাহত। ‘শ্রীবাম লীলা’ (১৪১৬) গ্রন্থে শাস্ত্রী হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “তিনি তারাশিলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেন। তাহা অদ্যবধি হইয়া আসিতেছে। তাহাঁর শেষ জীবনের সহিত বামের মধ্য জীবন সংশ্লিষ্ট।” অর্থাৎ মোক্ষদানন্দ (মাণিকরাম মুখোপাধ্যায়) ১২৬০ বঙ্গাব্দ নাগাদ তারাপীঠে যে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেছিলেন, তা আজও চলছে। এইভাবে নদীয়া থেকে হুগলি, কোচবিহার, বর্ধমান, বীরভূম, ২৪ পরগনা, কলকাতাসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে জগদ্ধাত্রীর মহিমা। কোথাও কোথাও তা দুর্গোৎসবের রূপ পেয়েছে।
তবে মা সারদার বংশে জগদ্ধাত্রী পুজো বিখ্যাত হলেও তা দুর্গাপুজোর বিকল্প হয়ে ওঠেনি। জনশ্রুতি আছে, মা সারদার মা শ্যামাসুন্দরী দেবী প্রতিবার নব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজোয় চাল পাঠাতেন। ঝগড়ার জন্য একবার সেই চাল নিতে অসমর্থ হয়েছিলেন মুখোপাধ্যায় পরিবারের মানুষেরা। দেবী জগদ্ধাত্রী সেই রাতেই শ্যামাসুন্দরীকে স্বপ্ন দেখা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন তাঁকে পুজো দিতে। সেই থেকে আজও জয়রামবাটিতে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছে। স্বামী বিবেকানন্দ তো বটেই, বেলুড় মঠের অন্যান্য সন্ন্যাসীও মা সারদাকে সাক্ষাৎ জগদ্ধাত্রী মেনে পুজো করেন।
কৃষ্ণনগরের বেশিরভাগ প্রতিমা বিশাল আকারের। সব দেবীরই অবস্থান সেখানে আড়াআড়িতে। কিন্তু রাজবাড়ির প্রতিমা আকারে ছোট, কুমারী মেয়ের মতো। দেবী সাদা ঘোড়ারূপী সিংহের (পৌরাণিক সিংহ) পিঠে বসা। তবে আড়াআড়িভাবে নয়, দেবী সোজাসুজি আসীন সিংহের উপরে। দেবীর দক্ষিণ পা ঝোলানো, বাম পা সিংহের পিঠে ভাঁজ করা। সবচেয়ে আশ্চর্যের, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি ও কলকাতার শোভাবাজারে বীরকৃষ্ণ দাঁয়ের বাড়ির পুজো ছাড়া বাংলার কোথাও এইরকম জগদ্ধাত্রী প্রতিমা নেই। কিন্তু চন্দননগরের জগদ্ধাত্রীর বৈশিষ্ট্য সনাতন রীতির প্রতিমায় সাদা সিংহ ও তাঁর বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে হাতি। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পঙ্খ অলংকৃত নাটমন্দিরে মহারাজের আমল থেকে এখনও জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছে। চন্দননগরেও দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণের কাল থেকে হয়ে আসছে জগদ্ধাত্রীর আরাধনা। প্রতি বছর শুক্লা কার্তিকী নবমীতিথিতে তাই তো কৃষ্ণনগর-চন্দননগরে যেন ফিরে আসে শরৎ। পাড়ার চেনা মাঠটা হঠাৎ কাপড়ের মোড়কে ঢেকে রাজস্থানের সোনার কেল্লা, কখনও কলকাতার নন্দন, রাজভবন বা পঞ্জাবের স্বর্ণমন্দির হয়ে যায়। চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় প্রাধান্য পেয়েছে পাড়াভিত্তিক নাম। কিন্তু কৃষ্ণনগরের পাড়ায়-পাড়ায় জগদ্ধাত্রীর বিভিন্ন নাম দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। প্রাচীন মা, বড় মা, আদি মা, নতুন মা... আরও কত কি! সম্প্রীতি মা নামেও জগদ্ধাত্রীর পরিচিতি হয়েছে। কৃষ্ণনগরের মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের উত্তরসূরি মণীশচন্দ্র রায় বলছিলেন, ‘পুরাণপ্রথা অনুযায়ী আমাদের পুজো এখনও একদিনেই সম্পন্ন হয়। ভাসানের আগে রাজাকে প্রতিমা দেখানোর রীতি আজও চলে আসছে। মহারাজের চকে বসিয়ে রানিদের ঠাকুর দেখানো হয়। শুরুতে কৃষ্ণনগরের মহারানি মালোপাড়ার জলেশ্বরী পুজোকে পনেরো টাকা দান করেছিলেন। সেই প্রথা আজও চলে আসছে।’
ক্লাব বা সর্বজনীন পুজোগুলিতে জাঁকজমক থাকলেও আলোর রোশনাই নেই রাজবাড়ির পুজোয়। জৌলুসও হারিয়েছে। তবে আছে নস্টালজিয়া, পুরাতনী গন্ধ। তাই তো রাজবাড়ির পুজোয় বেদমন্ত্রের সঙ্গে কাঁসর-ঘণ্টার ধ্বনি মনকে নিয়ে যায় সেই কবেকার বেদ পুরাণের দেশে...।
 লেখক: অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়
(ছবি: নিজস্ব চিত্র ও কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির সৌজন্যে পাওয়া)
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : স্বাগত মুখোপাধ্যায় 
22nd  November, 2020
নেতাজির গুপ্তবাহিনী
শহিদের অজানা আখ্যান
অমিত মিত্র

উত্তাল বঙ্গোপসাগর। ঢেউয়ের মাথা চিরে এগিয়ে চলেছে টর্পেডোবাহী একটি জাপানি ডুবোজাহাজ।  আচমকা তা ঝাঁপ দিল সমুদ্রের অতলে। জলের নীচে অদৃশ্য হতে না হতেই বন্ধ করা হল ইঞ্জিনও। প্রমাদ গুনলেন ভিতরের কেবিনে বসা আজাদ-হিন্দ-ফৌজের গুপ্তবাহিনীর চার অফিসার— তবে কি কোনও ব্রিটিশ ডেস্ট্রয়ারের নজরে এসেছে সাবমেরিনটি? বিশদ

07th  February, 2021
শতবর্ষে বিশ্বভারতী
সবুজকলি সেন

‘বিশ্বভারতী’ কোনও পূর্বপরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় নয়। ‘বিশ্বভারতী’ ব্রহ্মবিদ্যালয় নামের একটি ক্ষুদ্র বীজের বটবৃক্ষে পরিণত রূপ। ১৯০১ সালে (৮ পৌষ) পাঁচজন ছাত্রকে নিয়ে যে আশ্রম বিদ্যালয় যাত্রা করেছিল ভারতবর্ষের প্রাচীন তপোবনের আদর্শে—১৯২১-এ তারই পরিণত রূপ ‘বিশ্বভারতী’। বিশদ

31st  January, 2021
নেতাজি সুভাষের সেবাশ্রম
জয়ন্ত চৌধুরী

নির্জন দুপুর। বঙ্গভূমি থেকে নির্বাসিত কারারুদ্ধ সুভাষ। বার্মার মান্দালয় জেল তাঁর কাছে তখন জীবন উপলব্ধির একান্ত সাধনপীঠ। বহু ত্যাগ ব্রতী দেশপ্রেমিক কারাজীবন অতিবাহিত করেছেন বার্মার কারাগারে। আর এই জেলে বসেই একদিন পেলেন তাঁর রাজনৈতিক সমর্পণের কাণ্ডারী দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রয়াণবার্তা। বিশদ

24th  January, 2021
অবিলম্বে ওই তথাকথিত চিতাভস্ম
ফেলে দেওয়া হবে না কেন?
 বরুণ সেনগুপ্ত

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী ঘটা করে উদযা঩পিত হল। কিন্তু এই মহান দেশনায়কের অন্তর্ধান রহস্য আজও উদ্ঘাটিত হল না। ২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০০৬ সালের ১১ জানুয়ারি ২৮টি কিস্তিতে প্রকাশিত ‘বর্তমান’ সম্পাদক বরুণ সেনগুপ্তর লেখাটি এ প্রসঙ্গে আজও প্রাসঙ্গিক। তুলে ধরা হল সেই লেখার নির্বাচিত অংশ—
বিশদ

24th  January, 2021
নোবেল, পেনরোজ, 
বং কানেকশন
মৃন্ময় চন্দ

অবিশ্বাস্য, পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারে বং কানেকশন! আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিকতাবাদের সূত্রেই হকিং-পেনরোজ ব্ল্যাকহোলের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহাবিশ্বে অজস্র গ্রহাণুর বর্ণিল ঝিকিমিকির মধ্যে মূর্তিমান বেমানান ‘ব্ল্যাকহোল’, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এমনটাই মনে করতেন আইনস্টাইন। বিশদ

17th  January, 2021
কোট-প্যান্ট 
পরা সন্ন্যাসী

অনেকেই জানতে চান, কার নির্দেশে গৈরিক সন্ন্যাসীরা কোট-প্যান্ট-টাই পরা সন্ন্যাসী হলেন? সহজ উত্তর, এর পিছনে রয়েছে স্বয়ং স্বামীজির সবুজ সঙ্কেত। সন্ন্যাসীদের কেন এই বেশবাস? লিখছেন শংকর। বিশদ

10th  January, 2021
আমার সন্তান যেন থাকে
ভ্যাকসিন  ভাতে
সুন্দর মুখোপাধ্যায়

দু’হাজার কুড়ি বিদায় নিয়েছে, দুর্যোগও যেন শেষ হতে চলল। তবে এ ব্যাপারটা হোল-ওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে আগে বুঝেছে বরানগরের বিল্টু। তার প্রেমিকা মিতা পুরো বছরটা ঝুলিয়ে রেখে একেবারে বছর শেষে বাড়ির অমতে বিয়েতে মত দিয়েছে। এই সুবর্ণসুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়, বিল্টুও করেনি। বিশদ

03rd  January, 2021
 কলকাতার গর্বের চার্চ
 ​​​​​​শান্তনু বসু

১৬৯০ সালের ২৪ আগস্ট। সুতানুটির ঘাটে জাহাজ ভেড়ালেন জোব চার্নক। কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠল ইংরেজদের বাণিজ্যঘাঁটি। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী হিসেবে অবশ্য ইংরেজরাই কলকাতায় প্রথম নয়, তাদের আগে বসতি স্থাপন করেছিল আর্মেনিয়ান ও পর্তুগিজরা। বিশদ

27th  December, 2020
দেশবন্ধু ১৫০
রজত চক্রবর্তী

১৮৯৭। কলকাতা সরগরম। বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজে কিছুদিন ধরেই আলোচনা তুঙ্গে। চারিদিকে ছি ছি পড়ে গিয়েছে! ব্রাহ্ম সমাজের মাথারা আলোচনায় বসেছেন। কারণ, বরদানাথ হালদার ও ভুবনমোহন দাশ সমাজের অগ্রগণ্য দুই মানুষ জড়িয়ে গিয়েছেন এই ঘটনায়। বরদানাথ হালদার বিক্রমপুরের নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা আর ভুবনমোহন দাশ কলকাতার। বরদানাথ হালদারের আর্থিক অবস্থা ভালো হলেও ঋণগ্রস্ত ভুবনমোহন দাশের অর্থনৈতিক অবস্থা জর্জরিত। বিশদ

20th  December, 2020
লৌহপুরুষ
সমৃদ্ধ দত্ত

মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রয়াণদিবস। ৭০ বছর হয়ে গেল তিনি আর নেই। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের অখণ্ডতা রক্ষায় তাঁর অবদান আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি সত্যিই এদেশের এক ও একমাত্র আয়রনম্যান।
বিশদ

13th  December, 2020
সিটিজেন বনাম 
সিনিয়র সিটিজেন
শংকর

আগামীকাল, ৭ ডিসেম্বর আমার জন্মদিন, কিন্তু আজ তো ৬ ডিসেম্বর, জোর করে বলা যায় না আমি এইট্টি সেভেন নট আউট হতে চলেছি আগামী কাল। নানা অনিশ্চয়তা নিয়ে এখনকার দিনকাল। তার সঙ্গে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার, যাদের ধরবার জন্য নবাগত একটি ভাইরাস নাকি বিশেষ আগ্রহী। দেখা যাচ্ছে, মানুষ থেকে জীবাণু পর্যন্ত কেউই নিজের জোরে রাজত্ব চালাতে আগ্রহী নয়, তাই বাংলা ভাষাতেও ‘কো-মরবিডিটি’ বলে একটা ইংরেজি শব্দের বেআইনি অনুপ্রবেশ ঘটল।  বিশদ

06th  December, 2020
অবিশ্বাস্য
রাতুল ঘোষ

পার্থিব জীবন থেকে মুক্তি মিললেও ডিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা অমর হয়ে থাকবেন। অন্তত এই গ্রহে যতদিন ফুটবল খেলা বেঁচে থাকবে। খ্যাতি-অখ্যাতির নেপথ্যে তাঁর এই চিরপ্রস্থানে ব্যথিত, শোকস্তব্ধ ফুটবল দুনিয়া। ফিফা আয়োজিত ফুটবলপ্রেমীদের গরিষ্ঠাংশের ভোটে মারাদোনা বিংশ শতাব্দীর সেরা ফুটবলারের সম্মান যৌথভাবে পেয়েছিলেন ফুটবল সম্রাট পেলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে। বিশদ

29th  November, 2020
শ্যামাসংগীত...
আলাদা একটা অধ্যায়
শ্রীকান্ত আচার্য্য

 ছোটবেলা থেকেই শ্যামাসংগীতে আমার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। সেটা পান্নালাল ভট্টাচার্যের গান শুনেই। বাড়িতে রেকর্ড ছিল। ‘দোষ কারও নয় গো মা...’ পাগল করা একটা গান, দাশরথি রায়ের অপূর্ব লিরিক। পুজোআচ্চা বা মন্দিরে যাওয়া, এসবে আমি নেই ঠিকই... কিন্তু ভক্তিগীতি বরাবর ভালো লাগে। শ্যামাসংগীত আমাদের বাংলা গানের ইতিহাসে পৃথক একটা অধ্যায় বলা যেতে পারে। এই গান ঘিরে যে সাহিত্য-সম্পদ তৈরি হয়েছে, তা অমূল্য। বিশদ

15th  November, 2020
একবার দেখা দিলি না মা... 

 আর দশ বছর পরই তাঁর জন্মশতবর্ষ। বাঙালি তাঁকে মনের মণিকোঠায় কতটা রেখেছে, বলবে সময়ের দলিল। কিন্তু একটা বিষয়ে সকলেই একমত... ফুল ছাড়া যেমন পুজো হয় না, পান্নালাল ভট্টাচার্যের শান্ত-মিঠে কণ্ঠ ছাড়া মা কালীর আরাধনাও যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বহু সাধক-কণ্ঠে মায়ের গান শুনেও পান্নালালের সেই আর্তি খুঁজে পেয়েছেন, এমনটা হলফ কেউ বলতে পারেন না। মায়ের পায়ের জবা হয়ে ফুটে ওঠা পান্নালাল ভট্টাচার্যকে সেদিন ভুলে থাকে, সাধ্য কার! পান্নালালের চেয়ে আট বছরের বড়, তাঁর মেজদা ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য। তাঁরই ছেলে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য... পান্নালালের ভাইপো। যিনি গর্ব করে বলতেই পারেন, তাঁর বাবা-কাকার মতো শিল্পী আগামী দু’শো বছরে আর আসবে না এ বাংলায়। বলতেই পারেন, কালীপুজোর নির্ঘণ্ট মানে জবাফুল, বেলপাতা আর পান্নালালের গান। এই অমূল্য রত্নকে কাছ থেকে দেখা ভাইপো দীপঙ্কর ভট্টাচার্যর স্মৃতিচারণায় উঠে এলেন এক অন্য সাধক। শুনলেন অন্বেষা দত্ত। বিশদ

15th  November, 2020
একনজরে
পিম্প্রি-চিঞ্চওয়াড় পুর এলাকায় সংক্রমণের গ্রাফ এখন নিম্নমুখী। কমছে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যাও। আর এর জেরেই কাজ হারাতে চলেছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে সেখানকার প্রায় ৫০০ জন কোভিড যোদ্ধা। ...

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। বারাসত শহরে তৈরি হল অত্যাধুনিক মানের ইন্ডোর স্টেডিয়াম। ৬৫ লক্ষ টাকায় শহরের কে এন সি রোডে এই স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। এখানে ...

মঙ্গলকোটে অনুব্রত মণ্ডলের মহিলা সমাবেশে জনস্রোত বয়ে গেল। শুক্রবার বিকেলে ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে কাতারে কাতারে মহিলা মাথরুনের স্কুলমাঠে ভিড় করেন। ...

চা ও কৃষি বলয়ের উন্নয়নই এবার জলপাইগুড়ি জেলার বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দলের মূল ইস্যু। জেলায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ চালু, মেডিক্যাল কলেজ ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যার বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব রেডিও দিবস
১৬০১ - ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সমুদ্র পথে ভারত আগমন
১৮৩২ - লন্ডনে প্রথম কলেরার প্রাদুর্ভাব
১৮৭৯: স্বাধীনতা সংগ্রামী ও কবি সরোজিনী নাইডুর জন্ম
১৮৮২ - কলকাতায় প্রথম পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত।
১৯৩১ - ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে নয়াদিল্লিতে স্থানান্তর হয়
১৯৪৫: অভিনেতা বিনোদ মেহরার জন্ম
১৯৬০: ফ্রান্সের সফল পরমাণু পরীক্ষা
১৯৮৫: টেনিস খেলোয়াড় সোমদেব দেববর্মনের জন্ম 
২০১৫ - কেশব রেড্ডি, ভারতীয় চিকিৎসক ও লেখক



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭১.১৫ টাকা ৭৪.৩৭ টাকা
পাউন্ড ৯৮.০৩ টাকা ১০২.৭৭ টাকা
ইউরো ৮৬.১৬ টাকা ৯০.৩৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,০৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৩০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৮,৭০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৮,৮০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১ ফাল্গুন ১৪২৭, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১। দ্বিতীয়া ৪৩/৪৮ রাত্রি ১২/৫৩। শতভিষা নক্ষত্র ২২/২৪ দিবা ৩/১১। সূর্যোদয় ৬/১৩/৪৫, সূর্যাস্ত ৫/২৮/১১। অমৃতযোগ দিবা ৯/৫৮ গতে ১২/৫৮ মধ্যে রাত্রি ৮/০ গতে ১০/৩৪ মধ্যে পুনঃ ১২/১৬ গতে ১/৫৮ মধ্যে পুনঃ ২/৫০ গতে ৪/৩২ মধ্যে। বারবেলা ৭/৩৮ মধ্যে  পুনঃ ১/১৫ গতে ২/৩৯ মধ্যে পুনঃ ৪/৪ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/৩ মধ্যে পুনঃ ৪/৩৮ গতে উদয়াবধি।  
৩০ মাঘ ১৪২৭, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১। দ্বিতীয়া রাত্রি ১২/৪১। শতভিষা নক্ষত্র দিবা ৩/১৭। সূর্যোদয় ৬/১৬, সূর্যাস্ত ৫/২৭। অমৃতযোগ দিবা ৯/৫২ গতে ১২/৫৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৪ গতে ১০/৩৩ মধ্যে ও ১২/১২ গতে ১/৫২ মধ্যে ও ২/৪১ গতে ৪/২১ মধ্যে। কালবেলা ৭/৪০ মধ্যে ও ১/১৬ গতে ২/৪০ মধ্যে ও ৪/৩ গতে ৫/২৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৩ মধ্যে ও ৪/৪০ গতে ৬/১৬ মধ্যে । 
৩০ জমাদিয়স সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
রাজ্যে আগামী ২১ শে মোদি ও ১৮ ফেব্রুয়ারি অমিত শাহ
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ফের রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন ...বিশদ

09:26:38 PM

মাস্ক ছাড়াই গ্যালারিতে বহু দর্শক, করোনাবিধি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
ভারত-ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টে দর্শকদের মাঠে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কোভিডবিধি ...বিশদ

04:36:39 PM

মালদহে কালভার্টের কাছে যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার
মালদহের বলদা হুড়া এলাকার একটি নির্মীয়মাণ কালভার্টের কাছে মিলল এক ...বিশদ

04:22:23 PM

মুম্বইয়ের খার এলাকায় ৩৩ লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ মাদক সহ গ্রেপ্তার ২ পাচারকারী 

04:18:00 PM

দ্বিতীয়বার বিয়ে  করছেন দিয়া মির্জা!
সামনেই ভ্যালেন্টাইনস ডে। ভালোবাসার মরশুম চলছে। এর মধ্যেই এল সুখবর। ...বিশদ

04:09:41 PM

দীঘায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত ১
দীঘা থেকে বাড়ি ফেরার পথে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক ...বিশদ

04:00:30 PM