উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
বাঙালি উৎসবমুখর। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর পরেই সে ভাইফোঁটার আনন্দে মেতে ওঠে। পরিবারে ভাই-বোনের নির্ভেজাল ভালোবাসা, খুনসুটি ও একে অন্যের জীবনে শরিক হয়ে বেড়ে ওঠার স্বীকৃতি যেন লুকিয়ে এই দিনটির উদযাপনে। ভাই-বোনের উৎসব, তাই দেখাসাক্ষাৎ হওয়া মানেই উপহার আর ভূরিভোজের লম্বা ফিরিস্তি।
এদিন সকাল থেকেই ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় বোন বা দিদিরা উপবাস করেন। তারপর তাঁদের কপালে ফোঁটা দিয়ে মিষ্টিমুখ করানোর পর দিদি বা বোনদের উপোস ভাঙে। এবার আসে উপহার বিনিময়ের পালা। কিছু পরিবারে এখনও বোনরা সারাদিন উপোস করলেও অনেক বাড়িতেই সেই চল ধীরে ধীরে উঠেছে। বরং ভাই-বোন সকলে মিলে সপরিবার এক আড্ডার আবহ তৈরি হয় এই দিনটি ঘিরে। তাই এই উৎসবকে কেন্দ্র করে উপহার আদান-প্রদানেও ভাটা পড়েনি। ভাইয়ের মনের মতো উপহার যেমন বোন খুঁজে আনে, ঠিক তেমনই ভাইও বোন বা দিদির হাতে এদিন তুলে দেয় ভালোবাসার প্রতীকী উপহার। তাই সাধ্যের মধ্যে সাধ পূরণের কথা মাথায় রেখেই মূলত চলে উপহার বাছাইয়ের পর্ব। সাধারণত, পোশাক, বইপত্র বা পছন্দের সুগন্ধি অনেকেরই উপহারের তালিকায় থাকে।
প্রতি বছরের গতানুগতিক উপহার না দিয়ে ভাবতে পারেন অন্যরকম কিছু। পকেটে খুব বেশি চাপ না দিয়েও কীভাবে সেই সাধপূরণ হবে? রইল তারই হদিশ।
ছুটির টিকিট: উৎসবের পর সবে অফিস খুলেছে। তবে সামনে রয়েছে ক্রিসমাস ও বর্ষবরণের লম্বা ছুটি। কেউ আবার পছন্দ করেন নতুন বছরের শেষের দিকে বা ফেব্রুয়ারিতে বেড়িয়ে আসতে। ভাই বা বোনের অফিসের ছুটিছাটা কেমন সময়ে নিলে সুবিধে, কথার ছলে জেনে নিন শুধু সেটুকু। এবার ভ্রমণপ্রেমী ভাই বা বোনকে উপহার দিন ঘুরে আসার ফ্লাইট টিকিট বা ট্রেনের টু এসি বা ফার্স্ট ক্লাস কোচের টিকিট। হোটেল বুকিংয়ের পাসও উপহার দিতে পারেন ভাই বা দাদাকে। বাজেট একটু বেশির দিকে থাকলে শুধু টিকিট না কেটে কোনও ছোট ট্যুরের খরচও বহন করতে পারেন। ভাই বা বোন এই বেড়ানোটি আজীবন মনে রাখবেন।
সিনেমার টিকিট: ভাই বা বোন যদি সিনেপ্রেমী হন, তাহলে যে কোনও বড় মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার টিকিট বুক করে দিন তাঁদের জন্য। বাজেট একটু বেশি হলে গোটা পরিবারের সকলে মিলেই যেতে পারেন সিনেমায়। তবে সেদিনের টিকিট থেকে খাওয়াদাওয়া— সবকিছু স্পনসর করুন আপনি।
সাইকেল: ভাই বা বোন যদি স্কুলপড়ুয়া হয়, তাহলে তার একটি সাইকেলের শখ থাকতেই পারে। এই প্রজন্ম উন্নত প্রযুক্তির রেসিং সাইকেল পছন্দ করে। তাই ভাই বোনকে দিতে পারেন তার সাধের সাইকেল!
জিম মেম্বারশিপ: পুজোয় অল্পবিস্তর অনিয়ম সকলেরই হয়। ফলে কিছুটা ওজনও বাড়ে। ভাই বা বোন যদি ফিটনেস ফ্রিক হন কিংবা শরীরসচেতন হয়ে উঠতে চান, তাহলে এই সময় ভালো একটি জিম বা শারীরিক কসরত করা যাবে এমন এক প্রতিষ্ঠানের খোঁজে তিনি থাকবেনই। ফলে তাঁকে উপহার দিতেই পারেন একটি ভালো জিমের মেম্বারশিপ কার্ড। অন্তত তিন মাসের খরচ মিলিয়ে বেশিরভাগ জিম মেম্বারশিপ কার্ড দেয়। ফলে আগামী তিন মাস ভাই বা বোনের শরীরের খেয়াল রাখার সঙ্গে নাহয় আপনার স্মৃতি জুড়ে গেল!
কাস্টোমাইজড উপহার: যে গিফটে নিজেদের স্মৃতি ধরে রাখা যায়, তার চেয়ে আনন্দের কিছু হয় না। কফি মাগ, দামী কলম বা লেদার ওয়ালেটে ভাই বা বোনের নাম খোদাই করে দিন। কফি মাগের গায়ে নিজেদের মুহূর্তগুলোর ছবিও ছাপিয়ে নিতে পারেন। শহর ও শহরতলির নানা উপহারের বিপণিতেই এই কাস্টোমাইজড গিফট পাবেন। খরচও আহামরি কিছু নয়।
ট্রিমার: এটি একেবারের ভাই বা দাদার জন্য কেনা উপহার। তাঁরা যদি বেশ শৌখিন মানুষ হন, তাহলে চুল বা দাড়ির যত্ন, ট্রিমিং ও নানারকম স্টাইলিংয়ের জন্য তাঁদের দিতে পারেন এই ট্রিমার। বাজেট একটু বেশি হলে দেশি বা বিদেশি ব্র্যান্ডের বিয়ার্ড অয়েল বা গ্রুমিং কিটও রাখতে পারেন আপনার পছন্দের উপহারের তালিকায়।
অ্যাকোয়ারিয়াম: খুব অন্যরকম কিছু দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলে ভাবতে পারেন অ্যাকোয়ারিয়ামের কথা। ভাই বা বোন যদি পোষ্য ও প্রকৃতিপ্রেমী হন, তাহলে পশু-পাখি বা মাছ তাঁদের জন্য ভালো উপহার। সেক্ষেত্রে কাচের বড় ফিশ বোল বা ছোট আকারের অ্যাকোয়ারিয়াম রাখতে পারেন উপহার ভাবনার তালিকায়। এই স্নিগ্ধ উপহার আজীবন মনে রাখবেন তাঁরা।
নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন: গ্যাজেটপ্রিয় ভাই-বোনের জন্য এটি সেরা উপহার। অনলাইন মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় যাঁদের, তাঁদের হেডফোন বা ইয়ারপডের চাহিদা থাকেই। তাই এবার ভাইফোঁটায় ভাই বা বোনকে উপহার দিন ভালো ব্র্যান্ডের নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন বা ইয়ারপড।
কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স: দিদি বা বোনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য এই উপহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারা বছর বাড়ির নানা কাজের ঝক্কি সামলাতে হয় যাঁদের, তাঁদের দিন কাজ সহজ করে তোলার নানা অ্যাপ্লায়েন্স। সে স্যান্ডউইচ মেকার হোক বা একটু বেশি বাজেটের মাইক্রো আভেন! বোন বা দিদির প্রয়োজন ও নিজের বাজেট বুঝে এমন নানা কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স দিতেই পারেন।
লেদার ব্যাগ: ভাইফোঁটার উপহারের তালিকায় একদম প্রথমদিকে রয়েছে এর জায়গা। ওয়ালেট, পার্স বা ল্যাপটপ নেওয়ার অফিস ব্যাগ— চামড়ার তৈরি যে কোনও একটি উপকরণ হতে পারে আপনার এবারের উপহার।
ইন্ডোর প্লান্ট: ঘরের কোণে একটি গাছ। মন ভালো করার জন্য এই-ই যথেষ্ট। সুদৃশ্য টবে যত্ন করে রাখা লেডি পাম, মানি প্ল্যান্ট, পিস লিলি বা নানা পাতাবাহারি গাছ উপহার দিতে পারেন ভাই বা বোনকে। ঘরের হাওয়াবাতাস তো শুদ্ধ হবেই, আপনাদের সতেজ সম্পর্কেও যোগ হবে বাড়তি অক্সিজেন।
আজ বাদে কাল ভাইফোঁটা। তাই এখনও পরিকল্পনা সারা না হলে, এবার লিস্ট মিলিয়ে কিনে ফেলুন পছন্দের উপহারটি! আর দেরি করবেন না যেন!