কর্মে ও ব্যবসায়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। কৃষিপন্ন বিক্রেতা ও ডাক্তারদের অর্থকড়ি প্রাপ্তি হবে সর্বাধিক। বন্ধুকে টাকা ... বিশদ
আগামিকাল পঞ্চমী। এখন শুধু লিস্ট মিলিয়ে দেখে নেওয়ার পালা এবছর যা যা কেনার ছিল, সব হল কি না! এই কেনাকাটার তালিকায় অনেক সময়ই আমরা বাদ দিয়ে ফেলি একটি অতি প্রয়োজনীয় বস্তুকে। পোশাকের সঙ্গে যেটি অপরিহার্য। এর অভাবে বাহারি পোশাকের রূপ নিমেষে পানসে হতে পারে, আবার ছিমছাম কোনও সাজকে নজরকাড়া করে তুলতেও পারে এর উপস্থিতি। একটি সুদৃশ্য ব্যাগের সত্যি এতটাই ক্ষমতা। তাই একে রাখতেই হয় শপিং লিস্টে। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় তাই দেখে নিন কোন কোন ব্যাগ কেমন পোশাকের সঙ্গে মানাবে। এবার পুজোয় কী কী রঙের ব্যাগ ফ্যাশনে ইন— এসবের খুঁটিনাটি।
বটুয়া: এবার পুজোয় বাহারি বটুয়ায় ছেয়ে গিয়েছে নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট, হাতিবাগান মার্কেট। মোটামুটি পুজোর মুখে এইসব মার্কেট চষে ফেললে পুজোর কাটতি বেশ বোঝা যায়। এই বটুয়াগুলি সাধারণত খুব উজ্জ্বল নকশাদার কাপড়ের হয়। তবে ছিমছাম সাবেকি কাপড়ের বটুয়াও মিলছে এবার। এর ভিতর সহজেই আপনার অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যেমন চাবি, টাকা-পয়সা, স্যানিটাইজার নিতে পারবেন। হাতে একটি বটুয়া থাকলে পুজোর ভিড়ে হাতে ভারী ব্যাগ বহনের চিন্তা থেকেও ছুটি! পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বটুয়া কিনতে পারেন। তবে বটুয়ার কাপড় মাল্টিকালার বা উজ্জ্বল কালোর উপর নকশাদার হলে যে কোনও পোশাকের সঙ্গে নিতে পারবেন। শাড়ির সঙ্গে বেশ মানানসই এই ব্যাগ। ভালো মানের বটুয়ার দাম পড়বে ৫০০-৭০০ টাকার মধ্যে। কম দামেও পাবেন। তবে কম দামের বটুয়া কিনলে বাগের মাপ ও কাপড়ের মান দেখে কিনবেন।
শান্তিনিকেতনি ব্যাগ: শান্তিনিকেতনের চামড়ার ব্যাগগুলির নির্দিষ্ট কতগুলি নকশা আছে। তসর, হ্যান্ডলুম বা সিল্ক শাড়ির সঙ্গে ভালো মানাবে এমন ব্যাগ। এই ধরনের ব্যাগে অনেক জিনিস ধরে। পুজোয় বৃষ্টির ভ্রূকুটি থাকায় ছাতা বইতেও অসুবিধা হবে না এমন ব্যাগ থাকলে। এই ধরনের ব্যাগ চামড়ার হওয়ায় দাম একটু চড়ার দিকে থাকে। তবে আকারের উপর নির্ভর করে ব্যাগের দাম কমবেশি হয়। মাঝারি মাপের শান্তিনিকেতনী ব্যাগ কিনতে চাইলে বাজেট রাখুন ৭০০-১০০০ টাকা। একটু বড় মাপের ব্যাগ চাইলে বাজেট ধরুন ১৫০০-১৮০০ টাকা।
গামছা ছাপা ব্যাগ: গামছা প্রিন্টের পোশাক যেমন খুব ইন, তেমন এই কাপড়ের ব্যাগও খুব জনপ্রিয় হয়েছে। বেশ কিছু ডিজাইনার এমন ব্যাগ তৈরি করেছেন। পছন্দের বুটিক থেকে কিনতে পারেন এমন ব্যাগ। এই ব্যাগ দেখতে যেমন স্টাইলিশ, তেমন ধোয়াকাচা করা যায়। নকশা, আকার ও কাপড়ের মানের উপর নির্ভর করবে দাম। বিবি রাসেলের ডিজাইনার আর্টের ভক্ত ডিজাইনার জয়তী চট্টরাজের কথায়, ‘সাধারণত মাঝারি মাপের গামছা ছাপা স্লিং ব্যাগে লেদারের হ্যান্ডেল দেওয়ার চল শুরু হয়েছে। এতে ব্যাগ টেকসই বেশি হয়। এমন ব্যাগের দাম পড়বে কমবেশি ৮০০-১০০০ টাকা।’
ক্লাচ পার্স: জমকালো পোশাক এবার বেশি হয়েছে? তাহলে ঝলমলে পোশাকের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে কিনে নিন জমকালো দেখতে একটি ক্লাচ পার্স। নির্ঝঞ্ঝাট এই ক্লাচ দেখতে তো ভালো হয়ই, একে সামলানোও সহজ। ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে ক্লাচ নিতে চাইলে খুব জমকালো নকশার দিকে ঝুঁকবেন না। বরং সেক্ষেত্রে ছিমছাম দেখতে ক্লাচ বাছুন। এমন ছিমছাম দেখতে ক্লাচ পার্সে এবছরও বিভিন্ন প্রিন্ট খুবই উঠেছে। দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের উপস্থিতি যেমন যেখানে রয়েছে, তেমনই দুর্গা ও মহিষের মুখের ছবিতেও সেজেছে ব্যাগ। লেহেঙ্গা, আনারকলি চুড়িদার বা ফ্যান্সি শাড়ির সঙ্গে নিতে চাইলে একটু উজ্জ্বল রঙের ঝলমলে নকশার ক্লাচ কিনুন। ক্লাচের দাম নকশা, আয়তন ও ব্যাগের মেটিরিয়াল ভেদে নানারকম হয়। সাধারণত ভালো মানের মাঝারি মাপের ক্লাচ ৩৫০-৫০০ টাকার মধ্যে পাবেন। একটু দামি চাইলে ৮০০-১০০০ টাকার মধ্যেই মিলবে তা। অনলাইনেও পাবেন নানা বিকল্প।
স্লিং ব্যাগ: কোন পোশাকের সঙ্গে কী কী ব্যাগ মানাবে তা বুঝে উঠতে না পারলে সেফ খেলুন। অর্থাৎ কিনা এমন কিছু কিনুন যা সহজেই সবরকম পোশাকের সঙ্গে ক্যারি করত পারবেন। স্লিং ব্যাগ এমনই একটি বিকল্প। ফোম ও লেদার দু’রকম মেটিরিয়ালেই এই ব্যাগ বেশ জনপ্রিয়। লেদারের কিনলে দাম স্বাভাবিকভাবেই বেশি পড়বে তবে এই ব্যাগ টিকবে অনেক বেশি। এই পুজোয় গোলাকার স্লিং ব্যাগের চাহিদা খুব বেশি। একটু পরখ করে কিনতে পারলে কিন্তু সাজে আলাদা মাত্রা যোগ করবে এই ব্যাগ। গড়িয়াহাট মার্কেটে কালো লেদারের গোলাকার স্লিং ব্যাগের দাম ১৪০০ টাকা। এই ব্যাগই ফোম ও সিন্থেটিক মেটেরিয়ালে কিনলে দাম কমে দাঁড়াবে ৫০০-৬০০ টাকা। সাধারণত ছোট আকারের ফোম ও সিন্থেটিক আকারের স্লিং ব্যাগের দাম পড়বে ৪৫০-৬০০ টাকার আশপাশে। একটু বড় আকারের নিলে দাম পড়বে ৭০০-৯০০ টাকা। লেদারের হলে ছোট আকারের স্লিং ব্যাগের দাম পড়বে ৮০০-১২০০ টাকা। বড় আকার হলে দাম শুরু ১৫০০ টাকা থেকে।
ব্যাগের ধরন না হয় বোঝা গেল, কিন্তু কেমন রঙের ব্যাগের চাহিদা এবার বেশি? এবছর ফ্যাশনিস্তারা ইতিমধ্যেই পুজোর ব্যাগের রঙের একটা ট্রেন্ড তৈরি করে দিয়েছেন। সাদা-কালো বা মেরুন-বাদামি ছেড়ে দু’-তিনটি রং বিকোচ্ছে হু হু করে।
নীলের হালকা শেড: ব্যাগ মানেই খুব উজ্জ্বল রং হতে হবে, এমন ধরাবাঁধা নিয়ম কোনওকালে ছিল না। বরং হালকা রঙের ব্যাগের দিকে বরাবরই নজর ছিল অনেক ফ্যাশন সচেতকদের। আশমানি রঙের স্লিং ব্যাগ যেমন এবার ভালো বিক্রি হয়েছে বলে মত গড়িয়াহাট অঞ্চলের নামী ব্র্যান্ডের ব্যাগ ব্যবসায়ী অসিত সাহার। নিউ মার্কেট চত্বরেও নীলের নানারকম শেডে স্লিং ব্যাগ এসেছে। পছন্দ করতে পারেন সেগুলোও।
বেজ: এই রং নিয়ে বিস্তর পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন ডিজাইনাররা। পোশাক বা ব্যাগের দুনিয়য়া বেজ রঙের চাহিদা আগের বছরও ছিল। এবছরও এমন রঙের ব্যাগ খুব চলছে। চেনা রং ছেড়ে একটু অন্যরকম কোনও রং কিনতে চাইলে গাঢ় বেজ রং বাছতে পারেন। একটু গ্লিটারিং আভা থাকলে যে কোনও পার্টি বা ফেস্টিভ ওয়্যারের সঙ্গে দিব্য মানিয়ে যাবে।
কমলা: স্লিং ব্যাগের ক্ষেত্রে এই রঙের কাটতি এবার বেশি। গড়িয়াহাট থেকে এসপ্ল্যানেড সর্বত্র দেদার বিক্রি হচ্ছে গাঢ় কমলা স্লিং। সাদা, কালো বা হলুদ জামার সঙ্গে কনস্ট্রাস্ট করে এই ব্যাগ নিতে পারেন।