কর্মক্ষেত্রে অশান্তি সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কারও শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার— ... বিশদ
নিম্নবিত্ত এক দম্পতি, যাদের ছোট্ট ছেলেটির হার্টে ফুটো। ডাক্তার বীরেন জানায় ছেলেটির অবিলম্বে অপারেশনের প্রয়োজন। এর জন্য খরচ পড়বে পাঁচ লাখ টাকা। এছাড়া ডাক্তার নেবেন আড়াই লাখ টাকা। দরিদ্র বাপ ধার-দেনা করে পাঁচ লাখ জোগাড় করে। কিন্তু ডাক্তারের ‘ফিজ’ জোগাড় করতে পারে না। অসহায় বাবা জানায়, সে আস্তে আস্তে ডাক্তারের ফিজ দিয়ে দেবে। তিনি যেন ছেলের অপরেশন করে দেন। কিন্তু ডাক্তার রাজি হয় না। বাচ্চাটি মারা যায়। বলা ভালো ডাক্তারের অবহেলাই ছেলেটিকে খুন করে। এই খুনের জন্য ডাক্তারের কিছু কি হয়? হয় না। এরকম ঘটনা তো আকছারই ঘটছে, ঘটে চলেছে গ্রামে, শহরে, জেলায়, রাজ্যে, দেশে। একটু সহমর্মিতা, সমবেদনা, উদারতা থাকলে এই মৃত্যু আটকানো যেত। কিছুই কী করার নেই? অন্তত একটা প্রতিবাদ। একটা প্রতিশোধ এবং সেটাই করে দেখাল খিদিরপুর রংবেরং, তাদের সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘ডেডলাইন-দ্য গেম ইস অন’ নাটকের মধ্যে দিয়ে।
যে ডাক্তারের অবহেলায় একটা ফুটফুটে তাজা প্রাণ অকালে চলে যায়, কেন সেই ডাক্তারের একমাত্র মেয়েকে কিডন্যাপ করা হবে না? কেন সেই মেয়ের মুক্তিপণ হিসাবে ডাক্তারের সর্বস্ব নিয়ে নেওয়া হবে না? অন্তত এটা তো সে বুঝবে যে, অর্থ, যশ, খ্যাতির চেয়ে সন্তানের জীবন অনেক মূল্যবান! সন্তান হারানোর ব্যথাটা তো সে অনুভব করবে!
কোনও ভান ভণিতা নেই। সাধারণ মানুষের বেদনাকে খুব সহজ সরলভাবে মঞ্চস্থ করেছেন নির্দেশক তন্ময় চন্দ্র। বক্তব্যের দিক থেকে ভীষণই প্রাসঙ্গিক এবং তার প্রকাশের সাবলীলতার সঙ্গে দর্শক সহজেই একাত্ম হয়ে পড়ে।
একদিকে কিডন্যাপারের উগ্রতা, ভয়াবহতা, কুটিলতা, অন্যদিকে সন্তানহারা পিতার হাহাকার, বেদনা – অসাধারণ দক্ষতায় একই চরিত্রের দুটো সত্ত্বাকে তুলে এনেছেন তন্ময় চন্দ্র। এতটুকুও কম নেই বা বেশি নেই তাঁর অভিনয়ে। তুলনায় ডাক্তার বীরেনের চরিত্রে অভিজিৎ লাহিড়ির অভিনয় মাঝে মাঝেই বড় লাউড মনে হয়েছে। বাকিদের অভিনয়, নাট্যমুহূর্ত তৈরি করতে পরিচালককে পরিপূর্ণ সাহায্য করেছে। নাট্যকারের (তন্ময়) উদ্দেশ্য যথাযথভাবে মঞ্চে প্রতিফলিত হতে পেরেছে চন্দন দাসের আলো, টি ময়ের মঞ্চ এবং স্বয়ং তন্ময়ের আবহের ঠিকঠাক ব্যবহারে।
অজয় মুখোপাধ্যায়