কর্মোন্নতি ও কর্মের প্রসার। সামাজিক সুনাম বৃদ্ধি। শারীরিক সমস্যার আশঙ্কা। ধনাগম মন্দ নয়। দাম্পত্যে চাপ, ... বিশদ
নারী উন্নয়নের জন্য সম্প্রতি একটা নতুন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে কুচিনা। নাম কৃত্তিকা সেন্টার ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট। ডিমাপুর থেকে জয়পুর পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মটির প্রসার। সমাজের প্রান্তিক স্তরের মহিলাদের নিয়ে কাজ করবে কুচিনা। এই প্রসঙ্গে কুচিনার কর্ণধার নমিত বাজোরিয়া জানিয়েছেন, মেয়েদের উন্নতির লক্ষ্যে বহুদিন ধরেই কাজ করছিল তাঁর সংস্থা। কিন্তু সেই কাজের জন্য কোনও নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়নি এতদিন। এবার সেই স্বপ্ন তিনি পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছেন। মেয়েদের যে কোনও ভাবেই সমাজে এগিয়ে দেওয়ার কাজটি করবে এই প্ল্যাটফর্ম।
এই কাজের জন্য বিভিন্ন মহিলাকেন্দ্রিক এনজিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে কুচিনার তরফ থেকে। তাদের দিয়ে এমন কিছু মেয়ের নাম জোগাড় করা হচ্ছে যাদের একটু আর্থিক সাহায্য করলে তারা হয়তো সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। যেমন, কেউ যদি খেলাধুলোর দিকে পারদর্শী হয় কিন্তু অর্থের অভাবে তা করতে অক্ষম হয় তাহলে তাকে সেই সাহায্য করে প্রতিষ্ঠার পথে নিয়ে যাচ্ছে কৃত্তিকা উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট সেন্টার। নমিত বাজোরিয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, মহিলাদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমেই সমাজের আসল অগ্রগতি সম্ভব। মা যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, শিক্ষিত হয় তাহলে আগামী প্রজন্ম একটি উন্নত জীবন যাপন করতে সক্ষম হবে। তাই মহিলাদের উন্নত করার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি কাজ করতে চেয়েছেন বরাবর। তাঁর কথায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেয়েরা জানে না তারা কোন বিষয়ে পারদর্শী। অন্যের ইচ্ছের চাপে তাদের নিজেদের ইচ্ছে, স্বপ্ন ইত্যাদি চাপা পড়ে যায়। ফলে তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই শুধু নয়, তাদের পারদর্শিতা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল করাও এই প্ল্যাটফর্মের কাজ। কৃত্তিকা শুরু হয়েছিল একজন মহিলাকে নিয়ে। এখন কুড়ি জন সদস্য রয়েছে এখানে। বিভিন্ন এনজিও ও মহিলা উন্নয়ন কেন্দ্র এই প্ল্যাটফর্মটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। আগামী দিনে নারী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠবে কৃত্তিকা এমন আশাই রাখেন নমিত বাজোরিয়া।
নাসার বধির বিজ্ঞানী জোহানা লুৎজ
জন্ম থেকেই কানে শুনতে পান না জোহানা লুৎজ। জার্মানির এই কন্যাটি তাই স্বপ্নেও কখনও ভাবেননি তিনি নাসা-র বিজ্ঞানী হয়ে উঠবেন। অথচ লুৎজ হয়ে উঠলেন নাসার প্রথম এবং একমাত্র বধির বিজ্ঞানী। কিন্তু কেমন করে ঘটল এই অভাবনীয় ঘটনা? লুৎজ বলেন, ছোট থেকেই তিনি অঙ্কে দারুণ দড়। ভাষা শেখার আগেই নাকি অঙ্ক কষে ফেলতে পারতেন! অঙ্কে এই দারুণ পারদর্শিতার পাশাপাশি ছিল চ্যালেঞ্জের প্রতি অমোঘ আকর্ষণ। অসম্ভবকে সম্ভব করার অদম্য ইচ্ছে। আর এই ইচ্ছার কারণেই লুৎজ হয়ে উঠলেন নাসার বিজ্ঞানী। অঙ্কে দড় হলেও পিওর ম্যাথস নিয়ে পড়াশোনা করেননি লুৎজ। বরং তিনি বেছে নেন কম্পিউটার সায়েন্স। সেই সূত্রেই নাসায় তাঁর প্রবেশ। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনার শেষে নাসায় ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পান লুৎজ। সেখানে তাঁর কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ হন তাঁর বিভাগীয় প্রধান এবং তিনিই প্রথম লু্ৎজকে নাসায় গবেষণা পরবর্তী কাজ করার কথা বলেন। এমন অভাবনীয় একটা সুযোগ পেয়ে তা লুফে নেন জোহানা লুৎজ। এবং সেই অনুযায়ী নিজের গবেষণার বিষয় ঠিক করতে শুরু করেন। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি প্রাপ্ত হওয়ার পর তিনি আবারও নাসায় যোগাযোগ করলে তাঁকে গবেষণা করার সুযোগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে প্রথম বধির ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নাসায় যোগদান করেন জোহানা লুৎজ। তিনি নাসার ক্রু রিসার্চ ফ্লাইট বিভাগে গবেষণারত ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর কাজ নাসার এয়ারক্রাফ্টগুলোর ডেটার সঠিক মূল্যায়ন, সেগুলোর জিপিএস নির্ধারণ ইত্যাদি। এই মূল্যায়নের তথ্য তিনি উপরমহলে পাঠালে তাঁরা তা পড়ে বুঝতে পারেন নির্দিষ্ট প্লেনটির ক্ষমতা কত। লুৎজের ডেটা অ্যানালিসিসের কাজে মাঝেমধ্যে একজন ইন্টারপ্রেটার লাগে যে শোনার কাজটা করে তা লিখিতভাবে লুৎজকে পাঠায়। লুৎজকে তাঁর কাজ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ছোট থেকেই তাঁর মা তাঁকে শেখাতেন পৃথিবীতে অসম্ভব কিছু নেই। কিছু কাজ হয়তো অন্যগুলোর চেয়ে কঠিন, কিন্তু সেগুলোও সম্ভব। সেই মন্ত্রেই আজও কাজ করে চলেছেন জোহানা।
মেয়েদের নিয়ে স্বয়ংসিদ্ধা
মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে সুডা। নানারকম প্রশিক্ষণ দিয়ে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলাই এই সংস্থার লক্ষ্য। তার জন্য নানারকম হাতের কাজ যেমন ব্যাগ, পুতুল, মাটির কাজ, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র বানানো,জ্যাম, জেলি বানানো শেখানো হতো তাদের। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এইসবের পাশাপাশি এখন তো সুইগি জোমাটোর সঙ্গেও যুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে এইসব মেয়েদের। সুইগি ও জোম্যাটোর মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের ঘরোয়া রান্না বিক্রিও করতে পারছেন অনায়াসে। ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই কর্মকাণ্ডটির দেখভাল করে। এই সংস্থার অধীনে ৭ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। কখনও পুজোর আগে তাদের হাতের কাজ বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়, কখনও বা মেলার মরশুমে তাদের তৈরি জ্যাম জেলি আচার ও অন্যান্য জিনিস বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। সারা বছর এই সংস্থাটি মেয়েদের পাশে থাকে। তবে এই প্রথম এদের একটি পাকাপাকি বিপণন কেন্দ্র গড়ে উঠল নিউ বারাকপুর পুরসভার চত্বরে। সূচনা করলেন নগরোন্নয়ন ও পুর বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন সুডার অধিকর্তা সুপ্রিয় ঘোষাল ও অতিরিক্ত অধিকর্তা শাওন সেন।