কর্মোন্নতি ও কর্মের প্রসার। সামাজিক সুনাম বৃদ্ধি। শারীরিক সমস্যার আশঙ্কা। ধনাগম মন্দ নয়। দাম্পত্যে চাপ, ... বিশদ
আনা এলিজাবেথ জর্জ হলেন কেরলের এক হোম বেকার। ওনাম উৎসবে এক অভিনব কাজ করে বসলেন তিনি। গোটা একটা শাড়ির ডিজাইনে বানিয়ে ফেললেন ধোসা! অবশ্য এই খাবারকে ধোসা না বলে বরং এডিবল শাড়ি নামেই বিক্রি করেছেন। কেরলের কাসাভু শাড়ি প্রতিটি উৎসবের অঙ্গ। সেই শাড়িই তিনি ওনাম উপলক্ষে খাবারের মধ্যেও বানিয়ে ফেলেছেন। একেবারে সাড়ে পাঁচ মিটার লম্বা এই শাড়িতে আবার সোনালি পাড়ও বসিয়েছেন। ঘরোয়াভাবে বেকিং করলেও আনার আবার ফ্যাশনের প্রতিও প্রচণ্ড আকর্ষণ। আর সেই আকর্ষণ থেকেই তিনি এই এডিবল শাড়িটি বানিয়েছেন। তবে এই বেকিং বা ফ্যাশন ডিজাইনিং সবই আনার নিছক শখ। তিনি ক্যান্সার ও নিউরোবায়োলজির উপর গবেষণা করছেন। আর এই গবেষণার ফাঁকেই স্ট্রেস রিলিভার হিসেবে কখনও বেকিংয়ে মন দেন কখনও বা ড্রেস ডিজাইন করেন। যাই হোক, এর মধ্যে একদিন নিজের বাড়ির ছাদে মায়ের একটি শাড়ি শুকোতে দেখে তাঁর এই এডিবল শাড়ি বানানোর ভাবনা আসে মনে। খাবার হিসেবে একটা গোটা শাড়ি তাঁর আগে কেউ বানাননি। এই ধরনের চিন্তাও কারও মনে আসেনি কখনও। আনাও নিছকই পরীক্ষামূলকভাবে এই কাজে হাত দিয়েছিলেন। তিনি জানালেন, চালের গুঁড়ো, ময়দা, নুন, সুজি ইত্যাদি সাধারণ কিছু ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে তিনি শাড়ির মতো দেখতে ধোসাটি বানিয়েছেন। পোশাকি উপকরণ বলতে শুধুই ১০০টা ওয়েফার শিট বা রাইস পেপার। তার সঙ্গে গোল্ড ডাস্ট, বেকিং পাউডার, কেকে ফ্রস্টিং করার জন্য বিভিন্ন মাপ ও আকারের নজেলও ব্যবহার করেন আনা। বেকিংয়ের প্রতি যে আগ্রহ তা তিনি তাঁর দাদামশাইয়ের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘দাদু চেয়েছিলেন একটা বেকারি খুলতে। সে ইচ্ছা তাঁর পূর্ণ হয়নি। দাদুর ইচ্ছাপূরণে বাড়িতে ঘরোয়াভাবে একটা বেকারি চালু করেছি। তবে একে কোনওদিন পেশা হিসেবে নিতে পারব কি না, জানি না। সময়ই বলতে পারবে সে কথা।’
উন্নততর জীবনের সন্ধানে শ্বেতা কাট্টি
জন্মটা তাঁর বড়ই গোলমেলে। মুম্বইয়ের কামাথিপুরা পতিতালয়ে জন্মেছিলেন শ্বেতা কাট্টি। কিন্তু কর্মের মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছেন উল্লেখযোগ্য। পতিতালয় থেকে চলে গেলেন মার্কিন মুলুকে! তাও ভালো রেজাল্ট করে স্কলারশিপ নিয়ে। ভর্তি হলেন নিউ ইয়র্কের বার্ড কলেজে। এখানেও শেষ নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও শ্বেতা বেশ জনপ্রিয়। সেখানে মোটিভেশনাল ইনফ্লুয়েন্সারের কাজ করেন তিনি। সমাজের নিচু স্তরের মেয়েদের উদ্বুদ্ধ করেন নিজের জীবনের গল্প বলে। জন্ম আমাদের হাতে নয়, কিন্তু কর্ম আমাদের হাতে। ফলে জীবন নিয়ে কী করব সেটা নিজেকেই স্থির করতে হবে। তাছাড়া সমাজের নজরটাও বদলে দিতে চান তিনি। তাঁর কথায়, ‘ভালোমন্দের বিচার কারও জন্ম ঠিক করে না। সেই বিচার তার কাজের মাধ্যমে করতে হয়। আমাদের সমাজে এখনও সেই বোধটাই তৈরি হয়নি। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। বদল তো আনতেই হবে। সেই বদল আনার কাজেই আমি ব্রতী।’ ছোট থেকেই প্রচুর অত্যাচার, লোকের বাঁকা নজর ইত্যাদির মধ্যেই বড় হয়ে উঠছিলেন শ্বেতা। হঠাৎই তাঁর যোগাযোগ ঘটে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্রান্তি-র সঙ্গে। তাতেই ভাগ্যটা বদলায়। সমাজের নিম্ন স্তরের মেয়েদের ক্ষমতায়নের দিশা দেখায় এই সংস্থা। এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্বেতাও জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পান। নিউ ইয়র্কে পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখার সাহসও এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের কারণেই করতে পেরেছিলেন। তিনি বলেন, নিজেকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে এই সংস্থা। জন্ম, গায়ের রং ইত্যাদি ছাপিয়ে নারীসত্তাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে তারা। দুর্ভাগ্যের দোহাই দিয়ে পিছিয়ে না পড়ে বরং যেটুকু সুযোগ পাওয়া যায় তার মাধ্যমেই নিজেকে উন্নত করার শিক্ষাও তিনি সংস্থার থেকে পেয়েছেন। এইগুলো করতে পেরেছিলেন বলে তিনি উন্নততর জীবনের সন্ধান পেয়েছিলেন। সেই জীবনের সূত্র ধরে নিউ ইয়র্কের পর এবার ইতালির এক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য আবেদন করেছেন শ্বেতা।