ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
এখন থেকে ত্বকচর্চায় মন না দিলে পুজোর সময় জেল্লা দেবে কী করে? তাই সময় থাকতে কীভাবে পরিচর্যা করবেন, পরিকল্পনা করে ফেলুন। পুজোর দিনের কেনাকাটা সেরে নিজের দিকে তাকিয়ে যেন না মনে হয়, ত্বকের সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ রইল আপনাদের জন্য।
কসমেটোলজিস্ট রেশমা বানু বললেন, পুজোর সময় আসতে আসতে নানা ব্যস্ততা বাড়ে সকলেরই। তাই তখন স্কিন কেয়ার নিয়ম মেনে ফলো করা হয় না। কিন্তু কিছুটা সময় হাতে রাখতেই হবে ত্বকের যত্নে। নইলে পুজোর সময় নিষ্প্রভ ত্বকে কোনও সাজই খোলতাই হবে না। শেষ মুহূর্তের টিপস হিসেবে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে বলছেন তিনি।
ক্লেনজার
যেমন, এখন থেকেই স্কিন টাইপ বুঝে নিয়ে ক্লেনজার বেছে রাখুন। মেডিকেটেড ক্লেনজার হলে সবচেয়ে ভালো। সাধারণ সব প্রসাধনীতেই অনেক বেশি কেমিক্যালস থাকে। তাই ঝুঁকি না বাড়িয়ে ভরসা রাখুন ত্বক-বিশেষজ্ঞর উপরে, যিনি আপনাকে গাইড করে দেবেন। ক্লেনজার ত্বকের সমস্ত ময়লা পরিষ্কার করে। যাদের ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেলাভাব দূর করা দরকার, তাদের সেটাও করতে হবে ক্লেনজারের সাহায্য নিয়ে। এতে ত্বকে একটা পরিষ্কার ক্যানভাস তৈরি হয়।
আর্দ্রতা
এরপরে খেয়াল রাখতে হবে হাইড্রেশন বা আর্দ্রতার দিকে। ত্বকে আর্দ্রতা যত বেশি ধরে রাখা যায়, ততই মঙ্গল। এর জন্য এখন হাইড্রা ফেসিয়াল খুবই উপযোগী। রেশমা জানালেন, মাসে একটা করে এই ফেসিয়াল করালে সেটা বিউটি টনিকের মতো কাজ করবে। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন চোখের চারপাশে ফোলাভাব, পিগমেন্টেশন, অ্যাকনে ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এর পাশাপাশি ডিপ ক্লিনজিং, এক্সফোলিয়েশন, হাইড্রেশনও হয়। এই ফেসিয়াল থেকে পুরোপুরি হেলদি স্কিন পেতে পারেন। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে বললেন তিনি— এই ধরনের ফেসিয়াল সালঁ-র তুলনায় স্কিন ক্লিনিকে করানোই বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখতে হবে, সৌন্দর্যচর্চার মধ্যে পড়লেও হাইড্রা ফেসিয়াল একটা ট্রিটমেন্ট। তাই এটি কিছুটা খরচসাপেক্ষ (দু-আড়াই হাজার)। ২১ দিনের ব্যবধানে এটা করানো যায়। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের টুলস। একটি থাকে আলট্রা সাউন্ড প্রোব। এটা সবথেকে কার্যকরী। এর মাধ্যমে হাইড্রা ফেসিয়ালে যে সেরাম বা ক্রিম ব্যবহার করা হয়, সেটা একদম ত্বকের গভীরে ঢুকে যেতে পারে। ফলে ডিপ হাইড্রেশন হয়। ১৮ বছর বয়সের পর থেকে ৬০-৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই ফেসিয়াল করাতে পারেন যে কেউ। এটায় আলাদা কোনও কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। পুরো নজরটাই থাকে হাইড্রেশনের উপরে। এর মাধ্যমে তাই ত্বকের বলিরেখাও অনেকটা কমানো সম্ভব।
এই ফেসিয়ালে স্ক্রাব করা হয় সাকশনের সাহায্যে। ধরে নিন ওটা মেশিন স্ক্রাবার। এর সঙ্গে ত্বকে ঠান্ডাভাব তৈরি করে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ানো হয়। ফেস টাইটেনিং অর্থাৎ মুখের ত্বক টানটান করানোর জন্যও এখানে অপশন পাওয়া যায়। ৩০-এর উপরে যাঁদের বয়স, তাঁরা এটা ব্যবহার করতে পারেন।
মেকআপ
পুজোর সকালে হালকা মেকআপ রাখাই ভালো। এর জন্য ভরসা রাখতে পারেন বিভিন্ন মেডিকেটেড বিবি গ্লো ক্রিমের উপর। এই ধরনের ক্রিমে স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার যোগ করা থাকে। সঙ্গে থাকে এসপিএফ। মেডিকেটেড টিন্টেড সানস্ক্রিনও পাওয়া যায় আজকাল। এই ধরনের সানস্ক্রিন রোদ থেকে বাঁচার উপায় তো বটেই, সঙ্গে ত্বকে তৈরি করতে পারে একটা নিখুঁত লুক।
আর রাতে মেকআপ রিমুভ করার পরে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে হাইড্রেশন ভালোভাবে মেনটেন করা সম্ভব। আজকাল শিট মাস্ক এসেছে বাজারে। আধুনিকাদের ব্যস্ত সময়ে এই মাস্ক খুব কাজে দেয়, বললেন রেশমা। এই ধরনের মাস্কের সাহায্যে উজ্জ্বল ও আর্দ্র ত্বকের হদিশ পাওয়া সম্ভব সহজে। ত্বকে খুব গুরুতর কোনও সমস্যা না থাকলে এই শিট সবাই ব্যবহার করতে পারেন। ভিটামিন সি এবং হায়ালুরনিক অ্যাসিড যুক্ত শিট মাস্ক বেশি ফলদায়ক।
আইস কিউব
বিউটিথেরাপির নানা উপকরণের মধ্যে মাথায় রাখুন আইস কিউবের কথাও। এখন থেকে রোজ সকালে ঠান্ডা জলে মুখ ধোয়া কিংবা আইস কিউব মুখের ত্বকে লাগালে উপকার পাবেন। এতে পোরস (ত্বকের ছিদ্র) কমে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। মেকআপের আগেও ব্যবহার করতে পারেন। তাতে ত্বকে একটা আলাদা জেল্লা আসে। মেকআপ ভালো করে বসে। রেশমার মতে, সাইনাস বা মাথা ধরার সমস্যা থাকলে আইস কিউব বা ঠান্ডা জল ব্যবহার করা যাবে না।