বিদ্যায় অস্থির মানসিকতা থাকবে। কর্মপ্রার্থীদের কোনও শুভ যোগাযোগ হতে পারে। রাগ বা জেদের বশে কারও ... বিশদ
আষাঢ়ের দুপুর। কিন্তু এক ফোঁটা বৃষ্টির দেখা নেই রোদের তাপে রক্তিমাভা ছড়িয়েছে অপরাজিতার দু’গালে। মিষ্টি হেসে স্টুডিওতে পা রাখলেন প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী। অদ্ভুত একটা সারল্য আছে অপরাজিতার মুখে। আর সবসময় হাসিমুখ। ‘পুজোর ফটোশ্যুট মানেই তো সুন্দর সুন্দর শাড়ি দেবে দিদি’ বলতে বলতে হাত বাড়াল আমাদের শাড়ির কালেকশনে।
ষষ্ঠীতে ঢাকাই নয়েল
পুজো মানেই লাল-সাদা কম্বিনেশনের শাড়ি। আর সেটা যদি ডিজাইনার ঢাকাই হয় তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সাদা নয়েল সেলফ স্ট্রাইপ শাড়ির সঙ্গে লাল ঢাকাই কেটে জুড়ে অসাধারণ একটি শাড়ি তৈরি করেছেন ‘ঘরোয়া’ বুটিকের ডিজাইনার জয়িতা মুখোপাধ্যায়। লাল সিল্ক ফ্যাব্রিক দিয়ে পাড়ে টেম্পল অ্যাপ্লিক করে জরির কারুকাজ করা হয়েছে। এমন জমকালো ডিজাইনার ঢাকাই দেখে অপরাজিতা বললেন, ‘ষষ্ঠীর দিন একটা অনুষ্ঠানে যেতে হবে। লাল-সাদা ট্র্যাডিশনাল ঢাকাই পরব ভাবছিলাম। তার থেকে এই ডিজাইনার ঢাকাইটা পরলে অনেক ভালো লাগবে।’ সঙ্গে গাঢ় পলা রঙের স্টোনের লহরী হার আর ইয়ার রিংয়ের সেটটা পরলেন অপরাজিতা। সব মিলিয়ে খুব এলিগেন্ট লাগছিল তাঁকে।
সপ্তমীতে ফ্লোরাল সিল্ক
সপ্তমী থেকে পুজোর ছুটি শুরু। কোনও শ্যুটিং নেই, কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়াও রাখেন না অপরাজিতা। বললেন, ‘বাড়ির কুঁচোকাঁচাগুলোকে নিয়ে সপ্তমীর দিন ঠাকুর দেখতে বেরই। আমাদের একান্নবর্তী সংসার তো। তাই সবাই মিলে হইহই করে বেরিয়ে পড়ি সপ্তমীতে। এই দিন একটু নরম সিল্ক পরতে চাই।’ বলা মাত্র গোল্ডেন ইয়োলো ফ্লোরাল সিল্কটা হাতে দিলাম। পেয়ে পেয়ে বেজায় খুশি অপরাজিতা। ‘ওমা কি তুলতুলে নরম সিল্কটা আর খুব ব্রাইটও। এটাই হবে আমার সপ্তমীর সাজ।’ শাড়িটি ‘নেচার ক্রিয়েশন’ থেকে নেওয়া। ডিজাইনার অঞ্জলি দাস জানালেন, পুজোর সময় ফ্লোরাল হ্যান্ডপেন্টিং করা শাড়ির খুব চাহিদা থাকে। তাই সফট সিল্কে হাফ অ্যান্ড হাফ করে মাল্টি কালার্ড ফ্লোরাল পেন্টিং করিয়েছেন অ্যাসিডে। এই ধরনের পেন্টিং করা জরি বর্ডার তসর-বাফতা শাড়িও তাঁর এবারের পুজো স্পেশাল। একটু অফবিট নকশার জুয়েলারি আর মাথায় ফুল অপরাজিতার সাজে অন্য মাত্রা যোগ করেছে।
অষ্টমীতে তসর
অষ্টমীর দিন সন্ধেবেলা সবাই সবথেকে ভালো, সবথেকে পছন্দের শাড়িটা পরে। আপনি কোনটা পরবেন? বলতেই দুষ্টু হেসে অপরাজিতা লাল-হলুদ তসরটি তুলে নিয়ে সোজা ঢুকলেন সাজঘরে। ম্যাট জরি বর্ডার লাল টুকটুকে তসরটির আঁচলটি উজ্জ্বল হলুদ রঙে ডিজাইন করা। শাড়িটি ‘সুপ্রিয়া’জ বুটিক’ থেকে নেওয়া। ডিজাইনার সুপ্রিয়া গাঙ্গুলি জানালেন, এবার পুজোয়, লাল, কমলা, রানি, ম্যাজেন্টা ইত্যাদি রঙের খুব চাহিদা। তাই নানান প্রদেশ থেকে এই ধরনের রঙের তসর, বাফতা, সিল্ক আনিয়েছেন তিনি। প্লেন জমির শাড়ির চাহিদা বেশি। চলছে কনট্রাস্ট বর্ডারও।
শাড়িটির সঙ্গে মাছ নেকপিসটি খুব সুন্দর মানিয়েছে। ইয়ার রিংটিও খুব অন্যরকম।
নবমীতে বাংলাদেশি তাঁতে অ্যাপ্লিক
‘নবমীর দিনটা সবাই মিলে কোথাও ডিনারে যাবো।’ বললেন অপরাজিতা। মেরুন রঙের বাংলাদেশি তাঁতে তসরের পাতা লতা অ্যাপ্লিক করা শাড়িটি খুব পছন্দ হল তাঁর। শাড়িটির অদ্ভুত একটা লাবণ্য আছে। আর অ্যাপ্লিক করা থাকলেও তেমন ভারী নয়। শাড়িটি ‘নান্দনিক’ থেকে নেওয়া। ডিজাইনার সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরী বললেন, পুজোর জন্য তাঁর ক্যানভাস বাংলাদেশি তাঁত ও বাংলার তাঁত। অ্যাপ্লিক, এমব্রয়ডারি আর হ্যান্ডপেন্টিংয়ে সাজিয়েছেন পুজোর শাড়ি। শাড়িটির সঙ্গে অপরাজিতা পরলেন গোল্ডেন মেটালের হ্যান্ডমেড জুয়েলারি।
দশমীতে চেক তাঁত পেন্টিং
‘আগেই বলেছি আমি জয়েন্ট ফ্যামিলিতে থাকি। তাই বুঝতেই পারছেন দশমীর দিন বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনরা আসেনই। এদিন বাড়িতেই থাকব। বিকেলে সাজব তাঁতের শাড়িতে।’ বললেন অপরাজিতা। হলুদ-সবুজ চেক তাঁতের সঙ্গে অফ হোয়াইট তাঁত কেটে জুড়ে তৈরি শাড়িটির জমিতে ফুল গাছ আঁকিয়েছেন ডিজাইনার। শাড়িটি হাতে পেয়েই এক গাল হেসে অপরাজিতা বললেন, এটা প্রিন্টেড ব্লাউজ দিয়েই পরব। নাকে আর কানে অন্যরকম গয়না আর চুলের সাইডে ফুল এই হবে আমার দশমীর সাজ। শাড়িটি ‘সুকন্যা’ বুটিক থেকে নেওয়া। সুকন্যার পুজোর কালেকশনে এমন মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ তাঁত ছাড়াও রয়েছে অনেক ধরনের তসর ও সিল্ক।