পুজোপাঠে ও সাধুসঙ্গে মানসিক শান্তিলাভ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কর্মোন্নতি ও উপার্জন বৃদ্ধি। ... বিশদ
ইন্দ্রিয়জাত জ্ঞান সাধারণ জ্ঞান, ইহা ইতর প্রাণী, পশু, পক্ষী সকলের মধ্যেই আছে। ইহা মোক্ষপ্রদ জ্ঞান নয়। ইন্দ্রিয় দ্বারা বিষয় গ্রহণ সম্বন্ধে সাধারণ জ্ঞান সকলেরই আছে, এ কারণে তারা নিজেদের জ্ঞানী বলে মনে করে। বস্তুতঃ ইন্দ্রিয়জাত জ্ঞান পরমাত্ম জ্ঞান নয়। পরমাত্ম সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ জ্ঞানের অভাব হেতু কারও বিবেক বুদ্ধি নেই এবং পরমাত্ম জ্ঞানও নেই। সাধারণ ইন্দ্রিয়জাত জ্ঞান থাকার দরুন জ্ঞানচক্ষুর অভাব। পরমাত্ম জ্ঞান কর্ম সাপেক্ষ। জ্ঞান তিন প্রকার—সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক। এদের মধ্যে সাত্ত্বিক জ্ঞান শ্রেষ্ঠ। দিবা এবং রাত্র অর্থাৎ পিঙ্গলা ও ইড়ায় শ্বাস থাকে বলে সাধারণ জীবের জ্ঞানের তারতম্য হয়ে থাকে। ইড়া-পিঙ্গলার অতীত অর্থাৎ সুষুম্নায় শ্বাস থাকলে তাঁকেই প্রকৃত জ্ঞানী বলা যায়। দুগ্ধকে যেমন মন্থন করে দুগ্ধ হতে প্রথমে ননী বের করে পরে ঘৃত বের করতে হয়, তদ্রূপ প্রাণকর্মরূপ মন্থন ক্রিয়া দ্বারা শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্য হতে ননীরূপ ব্রহ্মবীজকে বের করতে হয়। আবার ব্রহ্মবীজ প্রকাশ হলেও সতর্কতা অভাবে উহা গোপাল অর্থাৎ সত্ত্বগুণ কর্তৃক চুরি না যায় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ সত্ত্বগুণ জীবকে সুখভোগের ইচ্ছা, বাহ্যিক জ্ঞানে আসক্ত করে ও নানাপ্রকার প্রলোভনের দ্বারায় জীবকে নিজের অধিকারে রাখবার চেষ্টা করে থাকে, জীবকে ননী প্রাপ্ত হতে দেয় না। অথচ সত্ত্বগুণের আশ্রয় ব্যতীত এবং প্রাণকর্ম ব্যতীত ননী বের হবে না। তবে ননী যাতে চুরি না যায় সেজন্য উক্ত সময়ে গুণাতীত অবস্থার প্রতি স্থিতিলাভের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, তা হলে আর ননী চুরি যাবে না। সাধারণঃ আহার, নিদ্রা, ভয়, মৈথুন ইত্যাদি সম্বন্ধে যে জ্ঞান মানুষের আছে, পশু পক্ষীদেরও তা আছে। তবে মানুষ পড়ুয়া পাখী হওয়ায় মূল্য কিছুটা বেশী, নচেৎ আত্মজ্ঞানীর নিকট উভয়েই সমতুল্য।