বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
কেননা তুমি সর্বদা একই জায়গাতে স্বপ্ন দেখ না। আর তোমার সত্তার একই অংশ সর্বদা স্বপ্ন দেখ না ও স্বপ্নে একই স্থানে থাক না। যদি তুমি তোমার সত্তার সকল অংশের সঙ্গে সংযোগ রাখতে পারতে—সচেতনভাবে, সোজাসুজি, অবিরাম তাহলে তোমার স্বপ্নের সব বৃত্তান্ত তোমার মনে থাকত। কিন্তু স্বপ্নে তোমার সত্তার কয়েকটি অংশের সঙ্গে কেবল সংযোগ থাকে। উদাহরণস্বরূপ, তুমি সূক্ষ্ম শরীর স্তরের একটা স্বপ্ন দেখলে—বলতে গেলে তা দৈহিক স্তরের একেবারে কাছাকাছি। সচরাচর এই ধরনের স্বপ্ন দেখি খুব ভোরের দিকে... চারটে থেকে পাঁচটার মধ্যে—যখন ঘুমের শেষ পর্যায়ে পৌঁছাই। তুমি যদি ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই হঠাৎ ধড়মড় করে বিছানা থেকে উঠে না পড়, খুব শান্ত ধীর স্থির হয়ে থাক—একটু সতর্কতার সঙ্গে অভিনিবিষ্ট হও—তাহলেই তোমার স্বপ্নের কথা মনে থাকবে। কেননা তখন সূক্ষ্ম শারীর স্তরের সঙ্গে দৈহিক সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। খুব কম ক্ষেত্রেই কোনওরকম যোগাযোগ সম্ভব হয় না।
এখন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বপ্নের কথা ভুলে যাও কেননা যখন তুমি স্বপ্ন দেখ তখন এক অবস্থায় থাক... তারপর আবার অন্য এক অবস্থার মধ্যে চলে যাও। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, যখন তুমি ঘুমাও—তোমার দেহ ঘুমায়, প্রাণ ঘুমায় কিন্তু মন তখনও সক্রিয় থাকে... কাজেই তোমার মন স্বপ্ন দেখতে সুরু করে। মনের সব কার্যকলাপ কম বেশি যেন একই মিলনসূত্রে গাঁথা। আর সে সময় কল্পনার খুব জোর থাকে তাই তুমি নানা রকমের জিনিস সব দেখতে শুরু করে দাও—এমনকি অসাধারণ সব ঘটনায় অংশগ্রহণ কর... কিছু সময় পরে সমস্ত কিছু থিতিয়ে শাম্ত হয়ে আসে তখন মনও তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়তে শুরু করে। কিন্তু প্রাণসত্তা বিশ্রাম পেয়ে জেগে ওঠে। সে চলে আসে দেহের বাইরে—তারপর যেখানে খুসি সেখানে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে। নানা ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে। কখন কখন তার মধ্যে নানারকম প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। শুন্যে ছুটে বেড়ায় আর তারপর যেতে শুরু করে। প্রাণ যে কোন্ কাজটি না করে তা বলা যায় না। প্রাণ ভালবাসে এ্যাডভেঞ্চার। সে পাহারা দেয়। যেখানেই বীরত্ব প্রকাশের সুযোগ মেলে সেখানেই সে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যখন সে দেখে কেউ কারারুদ্ধ হয়েছে তাকে উদ্ধার করতে ছুটে যায়। শত্রুকে সে ধ্বংস করে। নানাপ্রকার আশ্চর্য আশ্চর্য আবিষ্কার সে করে বসে। কিন্তু সবরকমের মানসিক স্বপ্নকে সে পিছনে ঠেলে সরিয়ে দেয়। মনের স্বপ্ন মুছে যায়... বিস্তৃত হয়ে পড়ে... কাজেই স্বাভাবিকভাবে তাদের কথা তোমার আর মনে থাকে না। কারণ মনের স্বপ্নে প্রাণের স্বপ্ন এসে তার স্থান অধিকার করে বসেছে। কিন্তু তুমি যদি কোন এক বিশেষ সময়ে হঠাৎ জেগে যেতে পারে তাহলে স্বপ্নের কথা তোমার মনে থাকবে। এমন অনেক লোক আছে যারা তাদের জীবনে এই পরীক্ষাটি করে দেখেছে—তারা রাতে যথাযথ নির্দিষ্ট সময়ে হঠাৎ জেগে ওঠে আর এরাই সবকিছু স্মরণে রাখে। নিজের ভিতরটাকে নাড়াচাড়া করবে না—স্বাভাবিকভাবেই ঘুমভেঙে উঠবে। তাহলেই স্বপ্নের সব কথা তোমার স্মরণে থাকবে।
অনেক ঘোরাঘুরিতে প্রাণের যখন বিশ্রামের দরকার হয় তখন সে বিরাম আর বিশ্রান্তির মধ্যে চলে যায়—কেননা প্রাণ নানারকম দুঃসাহসিক অভিযানের শেষে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ ধরে নেওয়া যাক—সূক্ষ্মদেহ ভ্রমণে বার হচ্ছে...... সে নানা স্থানে ঘুরে বেড়াতে লাগল।